সৌর বিদ্যুতের প্যানেল।
স্কুলের বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে সৌরশক্তির উপর ভরসা বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার। সেই মতো পুনর্নবীকরণ যোগ্য শক্তি উন্নয়ন দফতরের তত্ত্বাবধানে স্কুলের ছাদ ব্যবহার করে সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। সেখানে সোলার প্লেট বসিয়ে তৈরি হবে সোলার এনার্জি পাওয়ার প্লান্ট।
ইতিমধ্যে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার প্রায় ৪০ টি হাইস্কুলে এই সোলার পাওয়ার প্লান্ট বসানোর কাজ হয়েছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে আরও ১১৫ টি হাইস্কুলে এই সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের ইউনিট বাসানোর কাজ হবে জানা গিয়েছে জেলা প্রশাসন সূত্রে। এই কাজের জন্য দায়িত্ব প্রাপ্ত রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার পূর্ব মেদিনীপুরের রিজিওনাল ম্যানেজার শ্রীনিবাস রাউত বলেন, ‘‘দূষণমক্ত গ্রিন এনার্জি বা ক্লিন এনার্জির ব্যবহার বাড়ানোর লক্ষ্যে সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন। বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে স্কুলগুলিতে স্বল্প ক্ষমতার সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট বসানোর বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছে সরকার। এ জন্য স্কুলের বাড়ির ছাদ ব্যবহার করে সোলার প্লেট বসিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’ শ্রীনিবাসবাবুই জানিয়েছেন, ওই সোলার পাওয়ার প্ল্যান্টের প্রতিটির পাঁচ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা হবে। প্রতিটি প্লান্ট বসানোর জন্য প্রায় ১০ লক্ষ টাকা খরচ হবে। পুরো খরচ সরকার বহন করবে। এ জন্য স্কুলগুলিকে কোন টাকা খরচ করতে হবে না।
স্কুলের আলো, পাখা চালানো বা গবেষণাগারে বিভিন্ন যন্ত্র চালাতে যে বিদ্যুৎ ব্যবহার হয় তার বেশির ভাগটাই মিটে যাবে এই সোলার পাওয়ার প্লান্ট থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ দিয়ে। শুধু তাই নয়, প্রয়োজনের তুলনায় বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন হলে তা গ্রিডের মাধ্যমে সাধারণ বিদ্যুতের লাইনে পাঠিয়ে দেওয়া যাবে। ফলে স্কুলের নিজস্ব চাহিদার পরে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদিত বিদ্যুতের চাহিদা কমিয়ে ফেলা সম্ভব হবে। যা পরিবেশের দূষণ কমাতে সাহায্য করবে।
ধাপে ধাপে পূর্ব মেদিনীপুরের সব স্কুলে এই সোলার পাওয়ার প্লান্ট বসানো হবে। জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ মামুদ হোসেন বলেন, ‘‘স্কুলে বসানো প্লান্টগুলির যথাযথভাবে ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষকে উপযুক্ত ভূমিকা নিতে হবে। এতে পরিবেশ দূষণ যেমন কমবে তেমনি স্কুলের বিদ্যুত খাতের খরচ
সাশ্রয় হবে।’’
স্কুলগুলিতে কী ভাবে কাজ করছে এই সোলার পাওয়ার প্লান্ট?
বিদ্যুৎ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সাধারণভাবে এখন প্রায় প্রতিটি হাইস্কুলের ভবনই একাধিক তল বিশিষ্ট। এই সব স্কুল বাড়ির ছাদের প্রায় পুরো এলাকায় দিনের বেলায় সরাসরি সূর্যের আলো পড়ে। সেই সুবিধা কাজে লাগিয়ে ছাদে বসানো হয় সোলার প্লেটে সৌরবিদ্যুত উৎপাদনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বৈদ্যুতিন তারের মাধ্যমে গ্রিডের সাহায্যে স্কুলের বিদ্যুতের লাইনে জুড়ে দেওয়া হচ্ছে সেই প্লান্ট। স্কুলের চাহিদা মিটলে উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ বিশেষ ধরনের নেট মিটারের মাধ্যমে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন দফতরে পাঠানোর ব্যবস্থাও থাকছে। তমলুক শহরের হ্যামিল্টন হাইস্কুলে সম্প্রতি সোলার পাওয়ার প্ল্যান্টের মাধ্যমে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করা শুরু হয়েছে। প্রধান শিক্ষক সোমনাথ মিশ্র বলেন, ‘‘রাজ্য পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি উন্নয়ন সংস্থা থেকে স্কুলের ছাদে সোলার পাওয়ার প্লান্ট বসানো হয়েছে। উৎপন্ন বিদ্যুৎ দিয়ে আলো জ্বালা হচ্ছে। এতে স্কুলে বিদ্যুতের খরচের অনেকটাই সাশ্রয় হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy