Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

‘আদি-নব্য’ দ্বন্দ্ব অব্যাহত, ঐক্যের পরামর্শ শিবপ্রকাশের

বিধানসভায় নবাগত বিধায়কদের ভূমিকা কী হবে, সে বিষয়ে আগেই তাঁদের অবহিত করেছিল দল। তা সত্ত্বেও তাঁরা বিধানসভায় যাননি।

বৈঠকে দিলীপ ঘোষ। —নিজস্ব চিত্র।

বৈঠকে দিলীপ ঘোষ। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৯ ০১:৩৬
Share: Save:

এক দিকে যখন রাজ্যের দিকে দিকে দলীয় কর্মী ‘খুন’ হচ্ছেন, তখন দলে নবাগত নেতা-কর্মীদের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন উঠল বিজেপির অন্দরে। অন্য দল থেকে বিজেপিতে আসা ছয় বিধায়ক কেন বিধানসভার চলতি অধিবেশনে এক দিনও যোগ দেননি, তা নিয়ে ক্ষুব্ধ দলের ‘আদি’ অংশ।

বিধানসভায় নবাগত বিধায়কদের ভূমিকা কী হবে, সে বিষয়ে আগেই তাঁদের অবহিত করেছিল দল। তা সত্ত্বেও তাঁরা বিধানসভায় যাননি। দল বদল সংক্রান্ত প্রশ্ন এড়াতেই তাঁদের এই ‘কৌশল’ বলে খবর। আর সেখানেই আপত্তি বিজেপির ‘আদি’ শিবিরের। তাদের বক্তব্য, দিকে দিকে যখন বিজেপি কর্মীরা খুন হচ্ছেন, জেলে যাচ্ছেন, তখন নবাগতদের ‘আত্মরক্ষার এই কৌশল’ মোটেই ‘আশাব্যঞ্জক’ নয়।

আইসিসিআর-এ রবিবার বিজেপির এ রাজ্যের সাংসদ এবং বিধায়কদের নিয়ে বৈঠকে দলের ‘সাফল্যে’ কর্মীদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘রাজ্য সভাপতি হিসেবে এটা আমার কাছে খুব কষ্টের সময়। প্রতি দিনই কোনও না কোনও কর্মীর মৃতদেহে মালা দিচ্ছি। নিজেকে অপরাধী মনে হচ্ছে। পার্টি আজ সফল। কিন্তু ডজন ডজন কর্মীর জীবনের বিনিময়ে আমরা সাফল্য পাচ্ছি। এটা সকলের মনে রাখা দরকার।’’

লোকসভা ভোটে রাজ্যে দল ১৮টি আসন পাওয়ার পর থেকে মূলত মুকুল রায়ের নেতৃত্বে অন্য দল থেকে গেরুয়া শিবিরে যোগ দেওয়ার ‘হিড়িক’ লেগেছে। রাজ্য বিজেপির একাংশের ব্যাখ্যা, দিলীপ-শিবির গোড়া থেকেই বিষয়টিকে ভাল চোখে দেখছিল না। লাভপুরের বিধায়ক মনিরুল ইসলাম বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় তা প্রকাশ্যে চলে আসে। সম্প্রতি সঙ্ঘও এ বিষয়ে বিজেপিকে সতর্ক করেছে। সকলেরই বক্তব্য, দলের পুরনো কর্মীরা যখন প্রাণ দিয়ে লড়ছেন, তখন নতুনরা দলে আসছেন ‘স্বার্থ গোছাতে’। এ দিন অশ্রুরুদ্ধ গলায় সে কথাই মনে করিয়ে দিয়েছেন দিলীপবাবু।

গত রবিবার দিল্লিতে রাজ্য সভাপতির এই উদ্বেগ মান্যতা পেয়েছিল দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকেও। দলে যোগদানে ইচ্ছুকদের ‘বাছাই’ করতে একটি কমিটি গড়ার কথা বলেছিলেন শাহ। সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে এ দিন বিজেপির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয় ফের বলেন, ‘‘যাঁদের ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত, তাঁদের দলে নেওয়া হবে না।’’

বিজেপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক (সংগঠন) শিবপ্রকাশ অবশ্য দলের ভিতর এই ‘আদি-নব্য’ দ্বন্দ্বে এ দিন রাশ টানার চেষ্টা করেছেন। দলীয় সূত্রের খবর, বৈঠকে তিনি বলেন, বিজেপি একটি পরিবারের মতো। যাঁরা বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন, তাঁরা সেই পরিবারের সদস্য হচ্ছেন। তাঁদেরকে নতুন বলে আলাদা করে রাখা ঠিক নয়। নেতা-কর্মীদের নতুন-পুরনো ভেদাভেদ মুছে ঐক্যবদ্ধ ভাবে এগোতে হবে। দলীয় সূত্রের খবর, মুকুলবাবু এ দিনের বৈঠকে দুর্গাপুজোর কমিটিগুলিতে দলীয় প্রভাব বাড়ানোর পক্ষে সওয়াল করেছেন।

শনিবার থেকে বিজেপির সদস্য সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়েছে। এ রাজ্যে ন্যূনতম এক কোটি সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে বিজেপি। সেই বিষয়ে দলের সাংসদ এবং বিধায়কদের ওয়াকিবহাল করতেই এ দিনের বৈঠক ডাকা হয়েছিল।

অন্য বিষয়গুলি:

Shiv Prakash BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy