Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
Seuli Saha

নন্দীগ্রামের পঞ্চায়েতে মায়ের প্রতি দলের অনাস্থা, সত্য প্রকাশের আশায় শিউলি

মমতাকে হারিয়ে প্রতিপক্ষ শুভেন্দুকে জয়ী করতে তাঁর পরিবার ষড়যন্ত্র করেছে, এমন অভিযোগ মন থেকে মেনে নিতে পারছে না শিউলির পরিবার।

রাজ্যের পঞ্চায়েত প্রতিমন্ত্রী শিউলি সাহা।

রাজ্যের পঞ্চায়েত প্রতিমন্ত্রী শিউলি সাহা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০২১ ১৯:৩৬
Share: Save:

মায়ের প্রতি অনাস্থা এনেছে দলের একাংশ। কিন্তু এ বিষয়ে স্পষ্ট কোনও প্রতিক্রিয়া না জানিয়ে প্রকৃত সত্য প্রকাশের আশায় রয়েছেন রাজ্যের পঞ্চায়েত প্রতিমন্ত্রী শিউলি সাহা। দলবিরোধী কাজের অভিযোগে বুধবার নন্দীগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বনশ্রীর বিরুদ্ধে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যেরা নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের বিডিও-র দফতরে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেন। বনশ্রী অবশ্য বলেছিলেন, ‘‘শারীরিক অসুস্থতার কারণে বিডিও অফিসে গিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে এসেছি।’’ এমন ঘটনার পরেও কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি শিউলি। শনিবার এই ঘটনায় নিজের ছোট্ট প্রতিক্রিয়ায় কেশপুরের বিধায়ক বলেন, ‘‘নন্দীগ্রামের রাজনীতি নিয়ে আমি প্রকাশ্যে কিছুই বলব না। তবে যথাসময়ে অবশ্যই প্রকৃত সত্য প্রকাশ্যে আসবে।’’ উল্লেখ্য, নন্দীগ্রামের মেয়ে হলেও, বর্তমানে তিনি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার কেশপুরের বিধায়ক। তাই নন্দীগ্রামের রাজনীতি নিয়ে বিস্তারিত ভাবে কথা বলতে নারাজ শিউলি।

বিধানসভা ভোটে নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারাতে শিউলির মা বনশ্রী খাঁড়া সক্রিয় ছিলেন বলে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব অভিযোগ করেছে। বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারীর হয়ে কাজ করার অভিযোগে অনাস্থা আনা হয়েছে ওই ব্লকেরই মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ গোকুলনগরের বাসিন্দা স্বদেশ দাস অধিকারী এবং কেন্দেমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সানোয়ার শাহের বিরুদ্ধেও। কিন্তু রাজনৈতিক মহলে সবচেয়ে বেশি আলোচনা শিউলির মায়ের বিরুদ্ধে তৃণমূলের অনাস্থা নিয়ে।

উল্লেখ্য, নন্দীগ্রামের মেয়ে শিউলি ও তাঁর পরিবার জমি আন্দোলনে সক্রিয় ভাবে যুক্ত ছিলেন। বনশ্রী নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের সভাপতিও হয়েছিলেন। গত পঞ্চায়েত ভোটে জিতে তিনি নন্দীগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের পদ পান। এমনকি, শিউলির ভাই সুদীপও গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য। এবং শিউলির পরিবার আবার ঘোরতর শুভেন্দু বিরোধী বলেই পরিচিত। যে কারণে শুভেন্দু দল ছাড়তেই শিউলিকে মন্ত্রিসভায় জায়গা দিয়েছেন মমতা। তাই মমতাকে হারিয়ে প্রতিপক্ষ শুভেন্দুকে জয়ী করতে তাঁর পরিবার ষড়যন্ত্র করেছে, এমন অভিযোগ মন থেকে মেনে নিতে পারছেন না তাঁরা। এমতাবস্থায় শিউলি বা তাঁর পরিবার দলীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মুখ খুলে বিতর্ক বাড়াতে চাইছেন না।

তবে নন্দীগ্রামের রাজনীতিতে শিউলির পরিবারের সঙ্গে যে স্থানীয় নেতৃত্বের অন্তর্কলহ শুরু হয়েছে, তা বোঝা গিয়েছিল ভোটের সময়ই। কারণ, ১ এপ্রিল দ্বিতীয় দফায় নন্দীগ্রামের সঙ্গেই ভোট ছিল কেশপুরে। সূত্রের খবর, স্থানীয় নেতৃত্ব সেভাবে গুরুত্ব না দেওয়ায় বনশ্রী নন্দীগ্রাম ছেড়ে কেশপুরে মেয়ের প্রচারে সময় দিয়েছিলেন। কেন ভোট প্রচারে নন্দীগ্রাম ছেড়ে পাশের জেলার কেশপুরে গিয়েছিলেন শিউলির পরিবার? সেই প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে প্রকৃত সত্য উদঘাটনের অপেক্ষায় শিউলির পরিবার।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE