কলেজে কলেজে ন্যূনতম হাজিরা না-থাকা সত্ত্বেও পরীক্ষায় বসতে দেওয়ার দাবিকে ঘিরে ঘেরাও, রাস্তা অবরোধ থেকে শুরু করে মারামারির ঘটনাও ঘটেছে। এই অবস্থায় ছাত্রছাত্রীদের হয়রানি-সহ নানান অভিযোগ তুলে পথে নামছে এসএফআই। আজ, সোমবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় অভিযান করবে তারা। হাজিরা নিয়ে কড়া অবস্থানের বিরোধী সিপিএমের ওই ছাত্র সংগঠন। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য জানিয়ে দিয়েছেন, হাজিরার নিয়ম মানতেই হবে।
চয়েস বেসড ক্রেডিট সিস্টেম (সিবিসিএস) বা পছন্দসই মিশ্র পাঠ চালু হওয়ার পরে হাজিরা নিয়ে বিতর্ক ঘোরালো হয়েছে। কারণ এই নতুন নিয়মে ৬০% হাজিরা বাধ্যতামূলক এবং হাজিরার জন্য ধার্য করা হয়েছে ১০ নম্বর। সেই জন্য যে-সব জায়গায় কলেজ-কর্তৃপক্ষ কড়া হাতে রাশ টানতে চাইছেন, সেখানেই বাধছে গোলমাল। বেহালা, হেরম্বচন্দ্র, উমেশচন্দ্র, মুরারিপুকুর গুরুদাস মহাবিদ্যালয়, শিবনাথ শাস্ত্রী, সরশুনা-সহ বিভিন্ন কলেজে হাজিরাকে ঘিরে গোলমাল হয়েছে।
এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য রবিবার জানান, পরিকাঠামোর উন্নয়ন ছাড়া যে-ভাবে পড়ুয়াদের উপরে সিবিসিএস চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে, সেটা ঠিক হয়নি। পঠনপাঠনের সঙ্গে হাজিরাকে কঠোর ভাবে যুক্ত করারও পক্ষে নন তাঁরা। সৃজনের কথায়, ‘‘এমন অনেক পড়ুয়া আছেন, যাঁরা অর্থনৈতিক কারণেই ৬০% ক্লাসে হাজির থাকতে পারেন না। গ্রাম থেকে শহরে আসা বহু পড়ুয়ারা নানা ধরনের অর্থনৈতিক সমস্যার সম্মুখীন হন। সেই সব ক্ষেত্রে সরকারের বা কলেজ-কর্তৃপক্ষের নরম হওয়া উচিত।’’ ওই ছাত্রনেতা জানান, কিছু ক্ষেত্রে দোষী পড়ুয়াদের শায়েস্তা করতে ব্যবস্থা নেওয়ায় অর্থনৈতিক দিক থেকে অসুবিধার সম্মুখীন হওয়া পড়ুয়াদেরও ভুগতে হচ্ছে। এটা কর্তৃপক্ষকে দেখতে হবে।
‘‘যে-সব পড়ুয়ার হাজিরা কম, তাঁদের পরীক্ষায় বসার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য টাকার টোপ দিচ্ছে টিএমসিপি। এ-সবের বিরুদ্ধেই বিশ্ববিদ্যালয় অভিযান করা হবে,’’ বলেন সৃজন। ডিএসও-র তরফে গৌরাঙ্গ খাটুয়া জানান, তাঁরাও সিবিসিএসের বিরুদ্ধে চলতি মাসের শেষে আন্দোলন শুরু করছেন।
শিক্ষামন্ত্রী অবশ্য হাজিরার উপরে গুরুত্ব দিয়ে আসছেন বরাবরই। এই বিষয়ে পার্থবাবু যথেষ্ট কড়া মনোভাব নিয়েছেন বলেই শিক্ষা প্রশাসনিক সূত্রের খবর। তবে সৃজন জানান, পঠনপাঠনের সঙ্গে হাজিরাকে কঠোর ভাবে যুক্ত করার মানে হয় না। কিন্তু সরকারের দেখা উচিত, পড়ুয়ারা কি কলেজের পঠনপাঠনে আগ্রহ হারাচ্ছেন? হারালে কেন হারাচ্ছেন, সরকারকেই তার কারণ খুঁজতে হবে বলে এসএফআইয়ের দাবি।
এসএফআইয়ের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে টিএমসিপি। ‘‘ক’টা কলেজে আছে এসএফআই? সারা বছর দেখাই যায় না। এখন ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমেছে। ছাত্রসমাজ ওদের বিশ্বাস করে না,’’ বলেন টিএমসিপি-র রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy