লালবাজারে রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
বাঁশদ্রোণী থানায় রাতভর ধর্নায় বসার পর বৃহস্পতিবার সকালে রূপা গঙ্গোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করল পুলিশ। বিজেপি নেত্রীকে বাঁশদ্রোণী থানা থেকে নিয়ে যাওয়া হল লালবাজারে। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা নাগাদ পুলিশের কয়েক জন আধিকারিক রূপাকে জানান, তাঁকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। তার পর বাঁশদ্রোণী থানা চত্বর থেকেই পুলিশের লাল রঙের একটি গাড়িতে তোলা হয় রূপাকে। সঙ্গে ছিলেন মহিলা পুলিশকর্মীরা। পুলিশের গাড়ি থেকে বিজেপি নেত্রী জানান, বাঁশদ্রোণী থানায় তাঁর ব্যাগ রয়ে গিয়েছে। রূপা এই অভিযোগও করেন যে, তিনি শৌচাগারে যেতে চাইলেও পুলিশ সেই অনুমতি দেয়নি।
রূপার গ্রেফতারি প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র তথা রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “উনি বাঁশদ্রোণীর ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে থানায় অবস্থানে বসেছিলেন। কিন্তু রাজ্যের তৃণমূল সরকার সমালোচনা সহ্য করতে পারে না। আর সেই কারণেই রূপা গঙ্গোপাধ্য়ায়কে গ্রেফতার করা হল।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রূপাকে লালবাজারের সেন্ট্রাল লক আপে রাখা হয়েছে।
বাঁশদ্রোণীতে পথ দুর্ঘটনায় পড়ুয়ামৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার করার দাবিতে বুধবার রাত থেকেই থানায় ধর্নায় বসেছিলেন রূপা। তিনি জানিয়েছিলেন, যত দিন না অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হচ্ছে, তত দিন তিনি থানায় বসে থাকবেন। বৃহস্পতিবার সকালেও থানা চত্বরে বসে বাঁশদ্রোণীর ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন তিনি।
বুধবার সকালে কলকাতা পুরসভার ১১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা এক নবম শ্রেণির ছাত্র কোচিং সেন্টারে যাচ্ছিল। সেই সেন্টারের কাছে চলছিল রাস্তা সারাইয়ের কাজ। সেখানে থাকা এক জেসিবি ওই ছাত্রকে ধাক্কা মারে। পিষে দেয় গাছের সঙ্গে। মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে ওই ছাত্রের। রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও বাঁচানো যায়নি। এই ঘটনার পরেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বাঁশদ্রোণী।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ ছিল, ছাত্রের মৃত্যুর পর থেকে এলাকায় দেখা মেলেনি স্থানীয় কাউন্সিলর অনিতা কর মজুমদারের। ক্ষোভ জমেছে রাস্তার বেহাল দশা নিয়ে। রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখান এলাকাবাসীরা। পাটুলি থানার ওসিকে আটকে রেখে বিক্ষোভ চলে। পরে কলকাতা পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার প্রদীপ ঘোষালও বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন। বিকালে কলকাতা পুলিশের ডিসি (দক্ষিণ শহরতলি) বিদিশা কলিতা দাশগুপ্ত ঘটনাস্থলে গেলে শুরু হয় ধরপাকড়।
এই ঘটনায় লাগে রাজনীতির রংও। পুলিশকে হেনস্থার ঘটনায় বিজেপি নেত্রী রুবি মণ্ডল-সহ মোট পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এরই মধ্যে বুধবার রাতে বাঁশদ্রোণী থানায় পৌঁছে যান বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা। নেতৃত্বে রূপা। থানার ভিতরে প্রবেশ করেন তিনি। বাইরে বিক্ষোভ প্রদর্শন শুরু করেন বিজেপি কর্মীরা। তাঁদের বক্তব্য, কোনও অভিযোগ ছাড়াই বিজেপি নেত্রী রুবিকে আটক করে বাঁশদ্রোণী থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। কিন্তু ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্তদের কাউকে এখনও গ্রেফতার করা হয়নি। এই ঘটনার প্রতিবাদে বাঁশদ্রোণী থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে বিজেপি। বুধবার রূপা বলেছিলেন, “আমি রাতটা থানাতেই থাকব। সকাল থেকে ওঁরা ধরতে পারেননি অভিযুক্তদের। তবে আমি আশা করছি ওঁরা ধরে ফেলবেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy