ত্রিপুরা থেকে কোনও অভিযুক্তকে আনতে বা তাঁর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে রিপোর্ট আসতে কত সময় লাগে, সেই প্রশ্ন তুলে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি-কে ভর্ৎসনা করল আদালত।
লগ্নি সংস্থা রোজ ভ্যালির আর্থিক কেলেঙ্কারির মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত রামলাল গোস্বামীকে দু’মাস আগে আদালতে তোলার নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতার বিচার ভবনে বিশেষ আদালতের বিচারক চিন্ময় চট্টোপাধ্যায়। রামলাল ত্রিপুরার বাসিন্দা। কেন তাঁকে দু’মাসেও হাজির করানো গেল না, আদালত বুধবার তা জানতে চায়। ইডি-র আইনজীবীরা বিচারককে জানান, রামলাল অসুস্থ এবং শয্যাশায়ী। এই জবাব শুনেই রামলালের মেডিক্যাল রিপোর্ট দেখতে চান বিচারক। ইডি-র আইনজীবীরা বলেন, ‘‘ত্রিপুরা থেকে ডাক মারফত ওই রিপোর্ট কলকাতায় পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এখনও সেটি আমাদের হাতে এসে পৌঁছয়নি। তাই রিপোর্ট পেশ করা যাচ্ছে না।’’
দু’মাস আগে তাঁর নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে এখনও মেডিক্যাল রিপোর্ট এসে পৌঁছয়নি শুনে বিস্ময় প্রকাশ করেন বিচারক। তিনি বলেন, ‘‘হেঁটে এলেও তো সেই রিপোর্ট এত দিনে পৌঁছে যেত!’’ তার পরেই তদন্তে গাফিলতির জন্য ইডি-কে ভর্ৎসনা করেন বিচারক। ‘‘আমার কর্মজীবনে এমন ঘটনা কখনও ঘটেনি। মাস দুয়েক আগে অভিযুক্তদের হাজির করানোর জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কোনও ভাবেই সেই নির্দেশ রূপায়ণ করা হয়নি,’’ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন বিচারক।
বিচার ভবনে বিশেষ আদালতে রোজ ভ্যালির বিরুদ্ধে ইডি-র মামলা চলছে দীর্ঘদিন ধরে। ওই লগ্নি সংস্থার চেয়ারম্যান গৌতম কুণ্ডু-সহ বেশ কয়েক জন অভিযুক্ত গ্রেফতার হয়ে এখন জেলে রয়েছেন। কিন্তু অন্য যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তাঁদের মধ্যে শিবময় দত্ত, অশোক সাহা ও রামলাল গোস্বামীকে এখনও এই আদালতে তুলতে পারেনি ইডি। শিবময় ও অশোককে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। তাঁরা ভুবনেশ্বরের জেলে বন্দি। তাঁদেরও সেখান থেকে বিচার ভবনের এই আদালতে হাজির করানোর কথা ছিল ইডি-র। আর রামলালকে তো এখনও গ্রেফতারই করতে পারেনি এই তদন্তকারী সংস্থা।
অথচ দু’মাস আগেই বিচার ভবনের বিচারক চিন্ময় চট্টোপাধ্যায় ওই তিন অভিযুক্তকে আদালতে হাজির করানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। এ দিন সেই প্রসঙ্গ তুলে বিচারক আদালতে উপস্থিত ইডি-র আইনজীবীদের বলেন, ‘‘ওঁদের কেন এখনও আনা গেল না, সেই বিষয়ে কিছু বলবেন?’’ ইডি-র আইনজীবী অভিজিৎ ভদ্র তখন বলেন, ‘‘শিবময় দত্ত ও অশোক সাহাকে ভুবনেশ্বর সংশোধনাগার থেকে আনতে কিছু সমস্যা হচ্ছে। আর রামলাল অসুস্থ।’’ আগামী ২ মার্চ শিবময় ও অশোককে এই আদালতে হাজির করাতেই হবে বলে নির্দেশ দেন বিচারক।
গৌতম কুণ্ডুর জামিনের আবেদনও এ দিন পেশ করা হয় বিচারক চট্টোপাধ্যায়ের আদালতে। গৌতমের আইনজীবী বিপ্লব গোস্বামী বলেন, ‘‘রোজ ভ্যালির সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও আটক করে রাখা হয়েছে ওই সংস্থার কর্ণধারকে। তদন্তেও অনেক অসংলগ্নতা রয়েছে।’’ গৌতমের জামিনের আবেদনটি অবশ্য খারিজ হয়ে গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy