আদালতে দোষীর সর্বোচ্চ সাজা চাইলেন আরজি করের নির্যাতিতার বাবা-মা। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
আরজি কর হাসপাতালে ধর্ষণ এবং খুনের মামলায় দোষী সঞ্জয় রায়ের সর্বোচ্চ শাস্তি চাইল নির্যাতিতার পরিবার। সোমবার শিয়ালদহ আদালতের বিচারক অনির্বাণ দাসের কাছে নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবীর আর্জি, ‘‘বিশ্বাসভঙ্গ করেছে দোষী। তাঁকে সর্বোচ্চ শাস্তি দিন।’’ অর্থাৎ, সিবিআইয়ের মতো নির্যাতিতার পরিবারও সঞ্জয়ের মৃত্যুদণ্ডের আবেদনই করল।
আরজি কর মামলায় গত শনিবার সঞ্জয়কে দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক দাস। সে দিনই তিনি জানান, সোমবার তিনি সাজা শোনাবেন। পাশাপাশি, বিচারক এ-ও জানান, সাজা ঘোষণার আগে সঞ্জয়ের কথা শুনবেন। আর কেউ যদি কিছু বলতে চান, তা-ও শুনবেন বলে জানিয়েছিলেন। সোমবার সাজা ঘোষণার শুনানি চলাকালীন এজলাসে উপস্থিত ছিলেন নির্যাতিতার বাবা-মা। বিচারক এজলাসে এসে প্রথমেই তাঁদের খোঁজ নেন। তার পরই সঞ্জয়ের বক্তব্য শোনেন। তার মাঝেই নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবী ‘সর্বোচ্চ শাস্তি’র আবেদন করেন। তিনি বিচারকের উদ্দেশে বলেন, ‘‘এক জন সিভিক ভলান্টিয়ার (সঞ্জয়), হাসপাতালে যাঁকে বিশ্বাস করে প্রবেশ করতে দেওয়া হত, তিনি সেখানেই এমন কাজ করেছেন। সর্বোচ্চ শাস্তি দিন।’’
আরজি কর-কাণ্ডে প্রথম থেকেই নিজের কন্যার জন্য বিচারের দাবিতে সরব হন নির্যাতিতার বাবা-মা। তাঁদের দাবি ছিল, সত্য প্রকাশ্যে আসুক। দোষীদের শাস্তি হোক। সঞ্জয়কে দোষী সাব্যস্ত করায় বিচারককে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু নির্যাতিতার পরিবারের বক্তব্য ছিল, সোমবার শাস্তি ঘোষণা আদতে তাঁদের আইনি লড়াইয়ের প্রথম ধাপ। নির্যাতিতার বাবা-মা বলেন, ‘‘তার পরেও দাঁতে দাঁত চেপে আমরা আইনি লড়াই চালিয়ে যাব। আজ সঞ্জয়ের কঠোরতম শাস্তির দাবি করছি।’’ তার পরেই তাঁরা দাবি করেছেন, সঞ্জয় একা দোষী নন বলে তাঁদের মনে হয়েছে।
শনিবার আদালতে সিবিআইও দোষী সঞ্জয়ের সর্বোচ্চ শাস্তি চায়। সিবিআইয়ের বক্তব্য, বিরলের মধ্যে বিরলতম অপরাধ এটি। চিকিৎসক ডিউটিতে ছিলেন। শুধু পরিবার এক জন সদস্যকে নয়, এক জন চিকিৎসককে সমাজ হারিয়েছে। কঠিন শাস্তির পক্ষে সওয়াল করা হয়। সেই একই কথা শোনা যায় নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবীর মুখেও। তিনিও আরজি করের ঘটনাকে ‘বিরলের মধ্যে বিরলতম অপরাধ’ বলে উল্লেখ করে সর্বোচ্চ শাস্তির আবেদন করেন।
সিবিআইয়ের চার্জশিটে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৪, ৬৬, ১০৩(১) ধারায় সঞ্জয়কে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। সেই ভিত্তিতে বিচারপ্রক্রিয়া শেষে শনিবার সঞ্জয়কে দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক। রায়দানের সময় বিচারক জানিয়েছেন, ধর্ষণের ঘটনায় সর্বোচ্চ ১০ বছর বা তার বেশি কারাদণ্ড হতে পারে। খুনের ঘটনায় ২৫ বছর থেকে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। যে ভাবে সঞ্জয় গলা টিপে ওই চিকিৎসককে হত্যা করেছেন, তাতে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হতে পারে তাঁর। সোমবার দুপুর ২টো ৪৫ মিনিটে সঞ্জয়ের শাস্তি ঘোষণা করবেন বিচারক।
(ধর্ষণ বা শ্লীলতাহানির ঘটনায় যত ক্ষণ না অভিযুক্তকে ‘দোষী’ সাব্যস্ত করা হচ্ছে, তত ক্ষণ তাঁর নাম, পরিচয় প্রকাশে আইনি বাধা থাকে। আনন্দবাজার অনলাইন সেই নিয়ম মেনেই আরজি কর পর্বের প্রথম দিন থেকে অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের নাম বা ছবি প্রকাশ করেনি। শনিবার আদালত তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করায় আমরা তাঁর নাম এবং ছবি প্রকাশ করা শুরু করছি।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy