আদালতে থম মেরে বসে নির্যাতিতার বাবা, মা। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
মেয়ের ধর্ষক-খুনিকে ফাঁসির সাজা দেয়নি আদালত। সঞ্জয় রায়কে আমৃত্যু কারাবাসের নির্দেশ দিয়ে বিচারক নিজের আসন ছেড়ে উঠে পড়তেই তুমুল ব্যস্ততা, হুড়োহুড়ি শুরু হয়ে গিয়েছিল তাঁর এজলাসে। তার মধ্যেই চুপচাপ নিজেদের আসনে থম মেরে বসে রয়েছেন নির্যাতিতার মা। কার্যত বাক্রুদ্ধ হয়ে পড়তে দেখা গেল নির্যাতিতার বাবাকে।
আরজি কর-কাণ্ডে দোষী সঞ্জয়ের ফাঁসিই চেয়েছিলেন নির্যাতিতার বাবা, মা। শনিবার বিচারক অনির্বাণ দাস রায় ঘোষণা করার পরেই সে কথা প্রকাশ্যে জানিয়েছিলেন তাঁরা। সঞ্জয়ই একা দোষী নয় দাবি করে বাকি ‘জড়িতদের’ও শাস্তি চেয়েছিলেন দু’জনে। এরই সঙ্গে স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন, সঞ্জয়েরও ফাঁসি চান তাঁরা। কিন্তু সোমবার তা হয়নি। বিচারক সঞ্জয়কে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন। এই শাস্তি শোনার পরেই কার্যত স্তব্ধ হয়ে যান নির্যাতিতার বাবা, মা।
শাস্তি ঘোষণার পর নির্যাতিতার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা জানাচ্ছিলেন বিচারক। সেই নির্যাতিতার বাবা বিচারককে জানান, তাঁরা ক্ষতিপূরণ চান না। জবাবে বিচারক বলেন, ‘‘আমিও মনে করি না, টাকা দিয়ে ক্ষতিপূরণ হয়। আপনি মনে করবেন না যে, টাকা দিয়ে ক্ষতিপূরণের চেষ্টা করা হচ্ছে। আমাকে এমনি বলা হলে আমি দিতাম না। আপনি যে নিতে চান না, সেটাও লিখেছি। এটা নিয়ম।’’ উত্তরে নির্যাতিতার বাবা বলেন, ‘‘আমি মেয়ের জন্য বিচার চাইছি।’’
এর পরেই আদালতে নিজেদের আসনে থম মেরে বসে থাকতে দেখা গেল নির্যাতিতার মা-বাবাকে। দু’জনেরই চোখ লাল। খানিক বাদে নিজের আসন ছেড়ে উঠে ফোনে কারও সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায় নির্যাতিতার বাবাকে।
আরজি কর-কাণ্ডে সঞ্জয়কে আজীবন কারাদণ্ড দিয়েছে শিয়ালদহ আদালত। হাসপাতালে ‘অন ডিউটি’ মহিলা চিকিৎসক পড়ুয়াকে ধর্ষণ-খুনের ঘটনাকে ‘বিরলের মধ্যে বিরলতম’ আখ্যা দিয়ে সঞ্জয়ের ফাঁসি চেয়েছিল সিবিআই। কিন্তু শাস্তি ঘোষণার সময় বিচারক জানিয়েছেন, সঞ্জয়ের অপরাধকে ‘বিরলের মধ্যে বিরলতম’ বলে মনে করেন না। এর পরেই বিচারক দাস সঞ্জয়ের উদ্দেশে বলেন, ‘‘আপনাকে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত জেলে থাকতে হবে।’’
দোষীর যাবজ্জীবন (আমৃত্যু) কারাদণ্ড ছাড়াও তাঁকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সব মিলিয়ে ১৭ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে রাষ্ট্রকে। জরিমানার ৫০ হাজার টাকা না দিলে পাঁচ মাস অতিরিক্ত কারাবাসের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালতের নির্দেশ শুনে কাঁদো কাঁদো দেখা গিয়েছিল দোষী সঞ্জয়কে। বিড়বিড় করে কিছু বলছিলেনও। সঞ্জয়ের আইনজীবী তাঁকে বলেন, ‘‘আপনার মৃত্যুদণ্ড নয়, আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হল।’’ তার প্রেক্ষিতে সঞ্জয় বলেন, ‘‘আমার তো বদনাম হয়ে গেল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy