কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের উপর আক্রমণের ঘটনায় উদ্বেগপ্রকাশ রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের। ফাইল চিত্র।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের গাড়ি ঘিরে হামলার ঘটনায় কড়া বিবৃতি দিল রাজভবন। রবিবার সন্ধ্যায় হামলার ঘটনাকে ‘শোচনীয়’ আখ্যা দিয়ে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েই প্রশ্ন তুললেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। প্রশাসনিক ব্যবস্থায় কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ চেয়ে শনিবার থেকেই রাজ্যে ৩৫৫ ধারা জারির দাবি তুলেছে রাজ্য বিজেপি। সরব হয়েছেন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার থেকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেই পরিস্থিতিতেই আনন্দ জানিয়েছেন, তিনি গোপন তদন্তের পাশাপাশি নিশীথের সঙ্গে কথাও বলেছেন। রাজ্যপাল বোসের বক্তব্য, সংস্কৃতির মাটি বাংলায় এই হামলা উদ্বেগজনক ঘটনা। দিনহাটার ঘটনায় কী কী প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে নবান্নের কাছে রিপোর্টও তলব করেছেন আনন্দ।
শনিবার দিনহাটায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের কনভয়ে হামলা হয়। তা নিয়ে উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। এ বার বার্তা রাজভবনের। শনিবার বোমা, গুলি এবং পাথর ছুড়ে হামলার অভিযোগ ওঠে কোচবিহারের দিনহাটার বুড়িরহাট এলাকায়। এর পরেই রাজ্য বিজেপির পক্ষে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তোলা শুরু হয়। শনিবারই রাজভবনে যান শুভেন্দু। সেখানে গিয়ে কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপের জন্য আনন্দ যাতে সুপারিশ করেন, সেই দাবিও জানিয়ে ছিলেন বিরোধী দলনেতা। তার পরে রবিবার রাজভবন যে বিবৃতি দিয়েছে, তাতেও সেই উল্লেখ রয়েছে।
শনিবার পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী দিনহাটার বিভিন্ন জায়গা পরিদর্শন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত’ বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং জনসংযোগ করতে এলাকায় যান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। কিন্তু দিনহাটার বুড়িরহাট এলাকায় তাঁর কনভয়ে পৌঁছলে তৃণমূল কর্মীরা তাঁকে কালো পতাকা দেখান। সে সময় উপস্থিত থাকা বিজেপি কর্মী-সমর্থক এবং তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে বচসা এবং হাতাহাতি শুরু হয়। এর পরই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কনভয়ের উপর ঢিল ছোড়া হয়। তাঁর গাড়ির কাচ ভেঙে যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর পর নিরাপত্তারক্ষীরা নিশীথকে সেখান থেকে বার করে নিয়ে যান। অভিযোগ ওঠে, নিশীথের গাড়ি লক্ষ্য গুলি চলে। বোমা ছোড়ার অভিযোগও তুলেছে বিজেপি। রবিবার দুপুরে নিশীথ সাংবাদিক বৈঠক করে তৃণমূলকে আক্রমণের পাশাপাশি পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।
পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তাদের যে আরও সতর্ক থাকা উচিত, সে ব্যাপারেও বার্তা দিয়েছেন রাজ্যপাল। আনন্দ লিখেছেন, ‘‘যাঁদের হাতে দায়িত্ব রয়েছে, তাঁদের সংবিধানের গুরুত্ব তুলে ধরতে হবে। বাংলা চায়, প্রত্যেক পুলিশ বা প্রশাসনিক কর্তা, তাঁরা যে দায়িত্বেই থাকুন, তাঁরা কোনও রকম ভয় না পেয়ে এবং পক্ষপাতিত্ব না করে তাঁদের দায়িত্ব পালন করুন।’’
রাজ্যপালের বার্তায় এমনটাও বলা হয়েছে যে, রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সঠিক রাখতে কোনও ভাবেই আপস করা হবে না। সমাজকে বিপদে ফেলা যাবে না। একই সঙ্গে লিখেছেন, ‘‘রাজ্যের কোথাও কোনও রকম আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হলে রাজ্যপাল নির্বাক দর্শক হয়ে থাকবে না।’’ তিনি কী করতে পারেন, সেটা বুঝিয়ে আনন্দ লিখেছেন, ‘‘রাজ্যপাল হিসাবে আমার দায়িত্ব, এটা নিশ্চিত করা যে, বাংলা যেন একটা ‘দুর্বল রাজ্য’ হয়ে না যায়। কড়া হাতে আইনের শাসন বজায় রাখতেই হবে। গণতন্ত্রকে নৈরাজ্যের স্তরে নামতে দেওয়া যাবে না। আইনের শাসন বজায় রাখতে এবং দুষ্কৃতী দমনে রাজ্য সরকার দ্রুত এবং নজির তৈরির মতো পদক্ষেপ করবে। আগামী দিনেও সরকার এই ধরনের সমস্যা মেটাতে সঠিক সময়ে ব্যবস্থা নেবে।’’
এর পরেই বিবৃতির একেবার শেষে দিনহাটার ঘটনায় রাজ্য কী কী প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিয়েছে, তা জানতে চেয়ে নবান্নের কাছে রিপোর্ট তলব করেছেন আনন্দ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy