—প্রতীকী চিত্র।
জাল পাসপোর্ট চক্রের তদন্তে শিকড়ের সন্ধান শুরু করেছে সিবিআই। তদন্তকারীদের দাবি, এই চক্রের শিকড়ের সন্ধান করতে করতে ক্রমশই উঠে আসা নতুন নতুন তথ্য। তাতে দেখা যাচ্ছে, পাসপোর্ট অফিসের ভিতরে রীতিমতো ছড়িয়ে গিয়েছে এই চক্র। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় ২৫ জনের নাম এফআইআর-এ আছে। তার মধ্যে ১৪ জনই পাসপোর্ট দফতরের কর্মী। এই তথ্য সামনে আসায় জাতীয় নিরাপত্তা নিয়েও রীতিমতো উদ্বেগ দেখা গিয়েছে গোয়েন্দাদের মনে।
সিবিআই সূত্রের দাবি, জাল পাসপোর্ট তৈরির জন্য কলকাতা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের কর্মীদের একাংশ যেন একটি সমান্তরাল পরিকাঠামো তৈরি করে ফেলেছিলেন। তা দিয়েই একের পর জাল পাসপোর্ট তৈরি হয়েছে এবং তা এমন লোকদের হাতে গিয়েছে যা দেশের নিরাপত্তার জন্য ক্ষতিকারক। গোয়েন্দাদের একাংশের দাবি, জঙ্গি সংগঠন এবং বিদেশি গুপ্তচরেরা মূলত এমন জাল পাসপোর্ট ব্যবহার করে এবং সেই পাসপোর্ট ব্যবহার করে কার্যত ভারতীয় নাগরিক সেজে তারা নিজেদের কাজ করতে পারে। প্রাথমিক ভাবে সন্দেহ করা হচ্ছে, কয়েক বছর ধরে এই জাল পাসপোর্ট চক্র সক্রিয় ছিল।
সিবিআই সূত্রের দাবি, ধৃতদের বাড়ি থেকে বহু গুরুত্বপূর্ণ নথি পাওয়া গিয়েছে। তার মধ্যে প্রাথমিক ভাবে প্রচুর জাল আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, প্যান কার্ড ও জন্মের শংসাপত্র উদ্ধার হয়েছে। গোয়েন্দাদের সন্দেহ, এই চক্র শুধু পাসপোর্ট নয়, বরং বিভিন্ন ধরনের সরকারি নথি জালিয়াতির সঙ্গেই যুক্ত ছিল। এক গোয়েন্দা-কর্তা বলছেন, ‘‘কয়েক বছরে জঙ্গিদের কাছ থেকে জাল পাসপোর্ট তো মিলেছে। উপরন্তু, এক বাংলাদেশি অপরাধী এ দেশের জাল পাসপোর্ট ব্যবহার করে বিদেশে পালিয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। ফলে খাতায়-কলমে আন্তর্জাতিক স্তরে সে এখন ভারতের নাগরিক। এই পরিস্থিতি মোটেও স্বস্তিদায়ক নয়।’’ প্রশ্ন উঠেছে, পাসপোর্টের ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোর্ট প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে তা হলে কী হয়েছে? এক গোয়েন্দা-কর্তার মন্তব্য, ‘‘পাসপোর্টের জন্য পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোর্ট পেতে কী করতে হয়, তা আমজনতা জানে। কাজেই এই চক্রে উর্দিধারীদের একাংশ জড়িত কি না, সে প্রশ্ন তো উঠতেই পারে।’’
এখন প্রশ্ন, এই চক্রের শিকড়ে কি আদৌ পৌঁছতে পারবে সিবিআই? আমজনতার প্রশ্ন, গত কয়েক বছরে এ রাজ্যে সিবিআইয়ের তদন্তের যা অগ্রগতি দেখা গিয়েছে তাতে পাসপোর্ট চক্রের মতো বড় অপরাধের শিকড় খুঁজতে কত বছর লাগবে? তা ছাড়া, এই চক্র শুধু পাসপোর্ট অফিসের কয়েক জন কর্মী চালাতেন, এমন যুক্তিও খুব জোরালো নয়। তাই শেষমেশ রাঘব বোয়াল আদৌ ধরা পড়বে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন আছে। সিবিআই সূত্রের দাবি, এই ঘটনার সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তা জড়িত। তাই এর গুরুত্ব আলাদা। চক্রের ব্যাপারে আরও বিশদ জানতে ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করা হচ্ছে। খোঁজ পেলে বাকিদেরও গ্রেফতার করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy