Advertisement
E-Paper

না-চাইতেই ‘দুয়ারে রক্ষী’! দুলাল-কাণ্ডের পর সতর্ক প্রশাসন, শাসকনেতাদের বাড়ি বাড়ি নিরাপত্তা বর্ধমানে

পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সদস্য রামকৃষ্ণ ঘোষ, আউশগ্রামের প্রাক্তন তৃণমূল সভাপতি অরূপ মির্ধা এবং যুব তৃণমূল নেতা আফজল রহমান ওরফে সঞ্জুর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করল প্রশাসন।

police protection

মালদহে দুলাল সরকারের খুনের পর পূর্ব বর্ধমানে তৃণমূল নেতাদের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করল প্রশাসন। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২৫ ১৩:১৩
Share
Save

নেতায় নেতায় গন্ডগোল। তাতে প্রাণ গিয়েছে নেতারই। মালদহের ইংরেজবাজার পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর দুলাল সরকার খুনের ঘটনায় গ্রেফতার হন সদরের তৃণমূল সভাপতি নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি। যার প্রেক্ষিতে ‘সতর্ক’ পুলিশ-প্রশাসন। গত কয়েক দিনে তৃণমূলের অনেক নেতারই নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। এ বার পূর্ব বর্ধমানের বেশ কয়েক জন নেতা এবং নেত্রীর নিরাপত্তা বৃদ্ধি করল জেলা প্রশাসন। অনেকে নিরাপত্তার জন্য আবেদন করেননি। কিন্তু তাঁদের নিরাপত্তা দিতে বাড়ি পৌঁছে গিয়েছে ‘রক্ষী’। আউশগ্রামের এমন তিন তৃণমূল নেতাকে সম্প্রতি সরকারি নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে।

আউশগ্রামে যে তিন নেতাকে নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন কোটা এলাকার বাসিন্দা পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সদস্য রামকৃষ্ণ ঘোষ, আউশগ্রামের প্রতাপপুরের বাসিন্দা ভাল্কি অঞ্চল তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি অরূপ মির্ধা এবং আউশগ্রামের গেরাই গ্রামের বাসিন্দা যুব তৃণমূল নেতা আফজল রহমান ওরফে সঞ্জু। প্রশাসন সূত্রের খবর, মঙ্গলবার রাত থেকে ওই তিন জনের জন্য সরকারি ভাবে এক জন করে সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করা হয়েছে। এঁদের মধ্যে রামকৃষ্ণের জন্য পশ্চিম বর্ধমান জেলা পুলিশ কমিশনারেট থেকে সর্ব ক্ষণের জন্য এক জন নিরাপত্তারক্ষীকে পাঠানো হয়েছে। বাকি দু’জনকে পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে নিরাপত্তারক্ষী দেওয়া হয়েছে।

বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোট, আউশগ্রাম এবং কেতুগ্রাম বিধানসভা এলাকা। এই তিন বিধানসভা এলাকারই দলীয় সাংগঠনিক দায়িত্ব সামলে এসেছেন বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। কিন্তু গরু পাচার মামলায় তিনি জেলে যাওয়ার পর মঙ্গলকোট ও আউশগ্রাম বিধানসভা এলাকার সাংগঠনিক কাজকর্ম দেখাশোনার দায়িত্ব পান পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। কিন্তু অনুব্রতের অনুপস্থিতিতে আউশগ্রাম-২ ব্লকে মাথাচাড়া দিয়েছিল শাসকদলের গোষ্ঠীকোন্দল। শাসকদলে ক্ষমতার হাতবদল হয়। ব্লক তৃণমূল সভাপতি রামকৃষ্ণকে সরিয়ে আউশগ্রাম-২ ব্লকে সভাপতি করা হয় শেখ আব্দুল লালনকে। তার কিছু দিন পর পদ যায় আউশগ্রামের ভাল্কি অঞ্চল তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি অরূপের। এর পর ‘ক্ষমতাচ্যুত’ রামকৃষ্ণ এবং অরূপের ঘনিষ্ঠতা দেখা গিয়েছে। আবার গত দেড় বছর ধরে বর্তমান ব্লক তৃণমূল সভাপতি লালনের গোষ্ঠীর সঙ্গে রামকৃষ্ণের অনুগামীদের কোন্দল দেখা যাচ্ছে। আউশগ্রামের বিধায়ক অভেদানন্দ থান্ডারও দলীয় ‘শিবির’ বদলেছেন। লালনের সঙ্গে বিশেষ দেখা যায় না বিধায়ককে। তিনি এখন রামকৃষ্ণের ‘কাছের লোক’। অথচ লালনের হাতে দায়িত্ব তুলে দেওয়ায় বড় ভূমিকা ছিল তাঁর। হঠাৎ করে নিরাপত্তা বৃদ্ধি প্রসঙ্গে বর্তমান পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সদস্য রামকৃষ্ণ বলেন, ‘‘আমি এর মধ্যে সরকারি ভাবে নিরাপত্তারক্ষীর জন্য কোনও আবেদন করিনি। আগেও আমার নিরাপত্তারক্ষী ছিল। তবে গত লোকসভা নির্বাচনের পরেই আমিই নিরাপত্তা ছেড়ে দিয়েছিলাম। দলের কাজে দিন-রাতে একাই ঘুরি। আমি মনে করি, আমার কোনও শত্রু নেই। তবে প্রশাসন কিছু বুঝেছে নিশ্চয়ই। তাই নিরাপত্তারক্ষী পাঠিয়েছে।’’

আউশগ্রামে বিরোধীদের তেমন সক্রিয়তা নেই। কিন্তু নিজেদের মধ্যে কোন্দলে চিন্তিত শাসকদল। ২০২১ সালের ৭ সেপ্টেম্বর আউশগ্রামের গেরাইয়ে একটি অনুষ্ঠানবাড়ি হয়ে বাড়ি ফেরার পথে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন যুব তৃণমূল নেতা চঞ্চল বক্সি। খুনের ঘটনায় গ্রেফতার হন শাসকদলেরই আর এক যুবনেতা আসানুল মণ্ডল। ধরা পড়ে চার ‘সুপারি কিলার’। সেই গেরাই গ্রামের বাসিন্দা লালনের আগে থেকেই নিরাপত্তারক্ষী রয়েছে। মাস দুয়েক আগে গেরাই গ্রামের অদূরে ভুয়েরা এলাকা থেকে অস্ত্র-সহ দুই দুষ্কৃতীকে ধরে পুলিশ। সপ্তাহখানেক আগে গেরাইয়ের পাশে বেলেমাঠ গ্রামে একটি কালভার্টের তলা থেকে বিস্ফোরক উদ্ধার হয়েছে। অন্য দিকে, মাস দেড়েক আগে লালনের যুব তৃণমূল নেতা সঞ্জু সরকারি নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন করেছিলেন। তাঁকেও নিরাপত্তা দিয়েছে প্রশাসন। সঞ্জু বলেন, ‘‘প্রশাসন কিছু বুঝেই আমার নিরাপত্তারক্ষী পাঠিয়েছে।’’

আউশগ্রামের প্রতাপপুর গ্রামের বাসিন্দা অরূপের জন্যও মঙ্গলবার রাত থেকে পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে এক জন সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষীকে মোতায়েন করা হয়েছে। অরূপও বলেছেন, তিনি সরকারি নিরাপত্তার জন্য আবেদন করেননি। ওই তৃণমূল নেতার কথায়, ‘‘এলাকায় কিছু অসাধু কারবারি, বালি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে আমি সরব হয়েছি। সম্ভবত সে কারণেই প্রশাসন মনে করেছে আমার প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে। তাই হয়তো নিরাপত্তা দেওয়া হল।’’

TMC TMC Leaders police protection Purba Bardhaman

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।