দুর্গাপুর থেকে বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াডের কর্মীদের আসার অপেক্ষায়।—নিজস্ব চিত্র।
সিপিআই (মাওবাদী)-র শহিদ সপ্তাহ পালনের জন্য জঙ্গলমহলের বিভিন্ন এলাকায় কড়া সতর্কতা নিয়েছে পুলিশ। অথচ, মঙ্গলবার বাঁকুড়ার ব্যস্ত গোবিন্দনগর বাসস্ট্যান্ডে দুপুর থেকে পরিত্যক্ত দুই বাক্সকে ঘিরে বোমাতঙ্ক ছড়ালেও দুর্গাপুর থেকে বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াডের কর্মীদের আসতে সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা পেরিয়ে গেল। ততক্ষণ উত্কণ্ঠা নিয়ে বাঁকুড়া জেলা পুলিশের কর্মীরা বাক্স দু’টিকে ঘিরে অপেক্ষা করলেন। বাসস্ট্যান্ডের যাত্রীরাও আতঙ্কের মধ্যে ওই এলাকার পাশ দিয়ে যাতায়াত করলেন।
সম্প্রতি বেলপাহাড়ি এবং পুরুলিয়ার আড়শা ও বলরামপুরে মাওবাদী নামাঙ্কিত কিছু ব্যানার ও একাধিক পোস্টার পাওয়া গিয়েছে। তাতে অপারেশন গ্রিনহান্ট ধ্বংস করা ও সশস্ত্র প্রতিরোধ আন্দোলন তীব্র করার ডাক দেওয়া হয়। এর প্রেক্ষিতে মেদিনীপুরে জঙ্গলমহলের পুলিশ কর্তাদের নিয়ে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নিতে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকও হয়।
মঙ্গলবারই বাঁকুড়ার জয়পুরের (অতীতে মাওবাদী নাশকতার কোনও নজির নেই) জঙ্গলে রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে পুলিশকে খানাতল্লাশিও করতে দেখা যায়। জঙ্গলমহলেও কড়াকড়ি শুরু হয়েছে। কিন্তু বাঁকুড়া শহরের এই ব্যস্তবহুল এলাকায় (এখানেও হামলার ঘটনা আগে ঘটেনি) দীর্ঘক্ষণ পরিত্যক্ত দু’টি ব্যাগ পড়ে থাকলেও তা নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হল না। সে কাজটি বিশেষ প্রশিক্ষিত বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াডে র করার কথা। কিন্তু সড়ক পথে এক ঘণ্টার পথ পেরিয়ে দুর্গাপুর থেকে সেই কর্মীরা কেন সন্ধ্যা পার করে বাঁকুড়ায় এলেন তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠে গেল।
বাসস্ট্যান্ডের যাত্রী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে জানা গিয়েছে, বাসস্ট্যান্ডের ঢোকার মুখে জংলাছাপের একটি স্যুটকেস ও দড়িবাঁধা একটি বড় পেটি অনেকক্ষণ পরে ছিল। সন্দেহ হতে বাসিন্দারা পুলিশে খবর দেন। দুপুর প্রায় দেড়টা নাগাদ বাঁকুড়া সদর থানার পুলিশ কর্মীরা গিয়ে লাগোয়া কয়েকটি দোকান বন্ধ করে দেন। বালির বস্তা দিয়ে ব্যাগ দু’টির চারপাশ ঘিরে দেয়। যাত্রীদের দূরে সরিয়ে দেয়। তবে বাস চলাচল স্বাভাবিক ছিল। জেলা পুলিশের এখ কর্তা জানান, বাঁকুড়ায় বম ডিসপোজাল স্কোয়াড নেই। দুর্গাপুরে রয়েছে। সেখানে দুপুরেই খবর পাঠানো হয়।
প্রায় সন্ধ্যায় ৭টা নাগাদ ওই স্কোয়াডের কর্মীরা আসেন। তাঁরা প্রথমে পেটিটি দুড়ি দিয়ে বেঁধে আইলাকান্দির ফাঁকা মাঠের দিকে গাড়ি দিয়ে টেনে নিয়ে যান। রাস্তাতেই পেটি ছিঁড়ে বেরিয়ে পড়ে আপেল। পরে স্যুটকেস খুলে দেখা যায়, সিআরপি জওয়ানের পোশাক ও প্রসাধনী সামগ্রী রয়েছে। পুলিশ ওই ব্যাগের মালিকের পরিচয়ের সন্ধান করছে।
বিপজ্জনক কিছু না পাওয়া গেলেও দেরিতে স্কোয়াডের লোকজন আসার প্রশ্ন থামেনি। এ প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার বলেন, “ওই স্কোয়াডর কর্মীদের অনেক প্রস্তুতি নিয়ে ঘটনাস্থলে যেতে হয়। সে কারণেই ওঁদের আসতে দেরি হয়েছে।” তিনি জানান, মাওবাদীদের গোলমাল পাকানোর কোনও আশঙ্কা নেই বলে পুলিশ সুপার দাবি করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, জঙ্গলমহলে নিয়মিত তল্লাশি চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy