Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

পড়তে চেয়ে ফের স্কুলে ভর্তি নাবালিকা

সে পড়তে চেয়েছিল। কিন্তু, গরিব বাবা-মায়ের মুখ চেয়ে রাজি হয়ে গিয়েছিল বিয়ে করতে। দিন দশেক আগে বিডিও-র নির্দেশে পুলিশ গ্রামে গিয়ে সেই নাবালিকার বিয়ে আটকে দেয়। ওই নাবালিকার ইচ্ছাপূরণ হয়েছে। স্থানীয় একটি স্কুলে নবম শ্রেণিতে বুধবার ভর্তি হয়েছে মেয়েটি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কেন্দা শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০১৪ ০০:৪৫
Share: Save:

সে পড়তে চেয়েছিল। কিন্তু, গরিব বাবা-মায়ের মুখ চেয়ে রাজি হয়ে গিয়েছিল বিয়ে করতে। দিন দশেক আগে বিডিও-র নির্দেশে পুলিশ গ্রামে গিয়ে সেই নাবালিকার বিয়ে আটকে দেয়। ওই নাবালিকার ইচ্ছাপূরণ হয়েছে। স্থানীয় একটি স্কুলে নবম শ্রেণিতে বুধবার ভর্তি হয়েছে মেয়েটি। তার পাশে দাঁড়িয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসন। স্কুলের পক্ষ থেকে ওই ছাত্রীকে একটি সাইকেল ও পড়াশোনার বিভিন্ন উপকরণ দেওয়া হয়েছে।

প্রশাসন সূত্রের খবর, পুরুলিয়ার কেন্দা থানার ভান্ডারপুয়াড়া গ্রামের বাসিন্দা, বছর চোদ্দোর ওই মেয়েটির গত ১২ মার্চ ঝালদার এক যুবকের সঙ্গে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। সেই খবর পেয়ে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলেন পুঞ্চার বিডিও সুপ্রতীক সিংহ। ১০ মার্চ পুলিশ ওই গ্রামে গিয়ে নাবালিকার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে বিয়ে স্থগিত করে দেয়। এর পরেই মেয়েটি পড়তে চেয়ে আবেদন করে। স্থানীয় দোরডি হাইস্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিব্যেন্দু পাত্র বলেন, “ওই মেয়েটিকে নিয়ে তার মা বুধবার আমাদের স্কুলে এসেছিলেন। এর আগে মেয়েটি ভান্ডারপুয়াড়া গ্রামের মধ্যশিক্ষা কেন্দ্রে অষ্টম শ্রেণি অবধি পড়াশোনা করেছিল। তার পরেই বিয়ের কথাবার্তা শুরু হয়।”

মেয়েটির মা বলেন, “ভাল পাত্র পেয়ে ভেবেছিলাম, মেয়ের বিয়ে দিয়ে দায়মুক্ত হব। ওর বাবা জামশেদপুরে একটা পাঁউরুটি কারখানায় কাজ করেন। পরে পুলিশ আর গ্রামের অনেকে বোঝালেন, এই বয়সে মেয়ের বিয়ে দেওয়া ঠিক হচ্ছে না। আমাদের মুখ চেয়ে মেয়ে তখন প্রতিবাদ করেনি। কিন্তু, পরে আমাদের জানিয়েছে, ও পড়তে চায়। তাই ওকে স্কুলে ভর্তি করলাম।” ওই নাবালিকার কথায়, “বিয়ে ভেঙে যাওয়ায় আমি খুশি। এ বার মন দিয়ে লেখাপড়া করতে পারব।” দিব্যেন্দুবাবু জানান, মেয়েটির গ্রাম থেকে তাঁদের স্কুলের দূরত্ব সাড়ে চার কিলোমিটার। যাতায়াতের অসুবিধার কথা ভেবে ওকে একটি সাইকেল কিনে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সমস্ত ঘটনা জেনে শিক্ষক-শিক্ষিকারা নিজেদের মধ্যে চাঁদা তুলে মেয়েটির জন্য স্কুলব্যাগ, জ্যামিতি বাক্স, জুতো এবং স্কুলের পোশাকও কিনে দিয়েছেন। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বলেন, “বৃহস্পতিবার স্কুলের সব পড়ুয়ার সামনে ওই মেয়েটির হাতে আমরা এই সব সরঞ্জাম তুলে দিয়েছি। এই ঘটনা অন্য পড়ুয়াদেরও অনুপ্রাণিত করবে বলে আমার বিশ্বাস।”

অন্য বিষয়গুলি:

minor girl admission school kenda
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE