বিড়ি বাঁধার কাজে ব্যস্ত মহিলারা। —ফাইল চিত্র।
কর্মী অভাবে সচিত্র পরিচয়পত্র বিলি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। যার জন্য জেলা বিড়ি শ্রমিকেরা বিভিন্ন সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। কেন্দ্রীয় শ্রম দফতর থেকে যে সব সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে, তাও পাচ্ছেন না বিড়ি শ্রমিকেরা।
জেলার বিড়ি শ্রমিকদের সচিত্র পরিচয়পত্র প্রদান করার জন্য মঙ্গলবার সিউড়িতে কেন্দ্র সরকারের শ্রম এবং কর্মসংস্থান অফিসে জেলা বিড়ি শ্রমিকদের একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। বীরভূম জেলা বিড়ি ওয়ার্কাস কল্যাণ সমিতি নামে ওই সংগঠনের জেলা সভাপতি তথা বিজেপি নেতা সিদ্ধার্থ রায় বলেন, “জেলাতে প্রায় এক লক্ষাধিক বিড়ি শ্রমিক আছেন। তাঁদের মধ্যে এখনও পর্যন্ত ৭৫ হাজারের বেশি শ্রমিক সচিত্র পরিচয়পত্র পাননি। অথচ সচিত্র পরিচয়পত্র না থাকায় বিড়ি শ্রমিকদের জন্য কেন্দ্র শ্রম দফতর থেকে যে সমস্ত সামাজিক কল্যাণমূলক প্রকল্প চালু আছে তা পাচ্ছেন না।”
সূত্রের খবর, জেলার ১৯টি ব্লকের মধ্যে রামপুরহাট মহকুমার নলহাটি ২ ব্লকে বিড়ি শ্রমিকদের বসবাস বেশি। এ ছাড়া মুরারই ১ ও ২ ব্লক, ময়ূরেশ্বর ১, রামপুরহাট ২ ব্লকেও বিড়ি শ্রমিকদের বসবাস রয়েছে। সিউড়ি মহকুমার সিউড়ি ১, সাঁইথিয়া, দুবরাজপুর ব্লক-সহ বোলপুর মহকুমার ইলামবাজার, লাভপুর এলাকাতেও বিড়ি শ্রমিকদের বসবাস আছে। এ ছাড়াও জেলার প্রায় সর্বত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে কম বেশি বিড়ি শ্রমিক রয়েছে। নলহাটি ২ ব্লকের সাহেবনগর এলাকার বিড়ি শ্রমিক হাসিবা বিবি, এলিনা বিবি, ময়ূরেশ্বর থানার জবুনি গ্রামের সেলিনা বিবি বলছেন, “দীর্ঘদিন থেকে সচিত্র পরিচয়পত্র পাচ্ছি না। বার বার দফতরে ঘুরেছি। এখন লোকের অভাবে বন্ধ আছে বলে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অথচ সচিত্র পরিচয়পত্র না থাকার জন্য আমরা বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।” জানা গিয়েছে, আগে মুর্শিদাবাদ জেলার নিমতিতা থেকে বীরভূম জেলার বিড়ি শ্রমিকদের সচিত্র পরিচয়পত্র দেওয়া হত। পরে ২০১২ সাল থেকে বীরভূম ও বর্ধমান জেলার একাংশের বিড়ি শ্রমিক দের জন্য সিউড়িতে অফিস খোলা হয়।
সিদ্ধার্থবাবুর অভিযোগ, “সম্প্রতি বীরভূম জেলা-সহ রাজ্যের বেশ কিছু জেলাতে যেখানে বিড়ি শ্রমিকদের জন্য কেন্দ্র শ্রম ও কর্মসংস্থান দফতরের অধীন স্ট্যাটিক কাম মোবাইল মেডিক্যাল ইউনিট আছে, সেই সমস্ত অফিস থেকে অস্থায়ী ভাবে নিযুক্ত একজন করে চিকিত্সক, নার্স, ফার্মাসিস্ট, চতুর্থ শ্রেণির কর্মীদের তুলে নেওয়া হয়েছে। এর ফলে ওই অফিস থেকে আর কোনও বিড়ি শ্রমিকেদের জন্য ক্যাম্প করে কার্ড দেওয়ার ব্যবস্থা কার্যকর হচ্ছে না। কার্ড পুনর্নবীকরণ করা হচ্ছে না।” জেলার বিড়ি শ্রমিকদের সচিত্র পরিচয়পত্র বিলির যে কাজ বন্ধ বিগত এক মাস ধরে বন্ধ আছে, সে কথা স্বীকার করে নিয়েছেন সিউড়িতে অবস্থিত স্ট্যাটিক কাম মোবাইল মেডিক্যাল ইউনিটের ইনচার্জ জবানন্দ রায়। তিনি বলেন, “এক মাস আগে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এক আদেশে বীরভূম-সহ বিভিন্ন জেলায় অস্থায়ী ভাবে নিযুক্ত চিকিত্সক, নার্স, ফার্মাসিস্ট, চতুর্থ শ্রেণির কর্মীদের তুলে নেওয়া হয়েছে। এর ফলে বিড়ি শ্রমিকদের জন্য নতুন করে সচিত্র পরিচয়পত্র বিলি করার কাজ বন্ধ হয়ে আছে।” তিনি জানান, লোকের অভাবে নতুন করে কোনও আবেদনপত্র নেওয়াও যাচ্ছে না। কারণ এখনও পর্যন্ত যা আবেদনপত্র জমা আছে সেগুলিই দেওয়া যাচ্ছে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy