কারও হাতে আবিরের প্যাকেট। কেউ বা সঙ্গে নিয়ে আসছেন উৎসবের শুভেচ্ছাবার্তা। সঙ্গে দলের কর্মীরা।
দোলের দিন পূর্বে লক্ষ্মণপুর থেকে পশ্চিমে চাষমোড় বা উত্তরে পাড়া থেকে দক্ষিণে বলরামপুর। সব রাজনৈতিক প্রার্থীই চষে বেড়ালেন পুরুলিয়ার এ প্রান্ত থেকে সে প্রান্ত। দোল-উৎসবকে হাতিয়ার করে সব প্রার্থীই চুটিয়ে সেরেছেন জনসংযোগের কাজ। প্রার্থীঁদের কথায়, “এমনিতে কর্মীদের সঙ্গে সারাক্ষণ দেখা হওয়া বা যোগাযোগ থাকলেও সকলের সঙ্গে মিলনের মঞ্চ তো উৎসবই! আর দোলের মতো উৎসব তাতে আলাদা মাত্রা যোগ করে।”
বিদ্যাপীঠে তৃণমূল প্রার্থী।
আনাড়ায় বিজেপি প্রার্থী।
রবিবার সাতসকালেই পুরুলিয়া শহরের অদূরে রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাপীঠে হাজির হন এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তনী, পুরুলিয়া কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মৃগাঙ্ক মাহাতো। তাঁর সঙ্গে ছিল সবুজ আবির। বিদ্যাপীঠের মূল মন্দিরে প্রণাম সেরে তিনি চলে যান সভাবেদিতে, যেখানে সকালে দোলের অনুষ্ঠান চলছিল। সেখানে পৌঁছে মহারাজ ও শিক্ষকদের আশীর্বাদ প্রার্থনা করেন মৃগাঙ্কবাবু। বসন্তের এই অনুষ্ঠান উপলক্ষে প্রাক্তনীদের জড়ো হওয়াই রীতি। সেখানে পরিচিতদের সঙ্গে কুশল বিনিময় সারেন তৃণমূল প্রার্থী। গুরুপল্লিতে আশীবার্দ চাওয়ার পাশাপাশি নিজের সমর্থনে ভোটও চান। বিদ্যাপীঠের শিক্ষক স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে মিষ্টি খাওয়ান। বিদ্যাপীঠের অধ্যক্ষ স্বামী জ্ঞানলোকানন্দ তাঁকে আশীবার্দ করেন। তাঁর কথায়, “আমরা ওঁকে আশীবার্দ করেছি। উনি এখানকার প্রাক্তন ছাত্র। আমরা চাই, আমাদের এখানকার ছাত্রেরা যে যেখানে রয়েছেন, সেখানে যেন প্রতিষ্ঠিত হন।” মৃগাঙ্কবাবু বলেন, “আমি বিদ্যাপীঠের প্রাক্তন ছাত্র। মহারাজ ও শিক্ষকদের আশীর্বাদ প্রয়োজন। তাই আজ এসেছি। অন্য সময়ে ব্যস্ততার কারণে আসা হয়ে ওঠে না। দোল উৎসবে এসে ভাল লাগছে।”
তৃণমূল প্রার্থী যখন দিনের শুরু করেছেন রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাপীঠে গিয়ে, তখন দোলের সারাটা দিনই বলরামপুরে কমিসভা করে কেটেছে ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী নরহরি মাহাতোর। বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ। ফিরতে ফিরতে রাত সাড়ে নটা। নরহরিবাবু বলেন, “বলরামপুরের বিভিন্ন জায়গায় একাধিক কর্মিসভা করেছি। কর্মীদের আবদার মেটাতে কোথাও কোথাও আবির মাখতেই হয়েছে। এটা তো উতসব। আর উৎসব নিয়েই আমরা।” পিছিয়ে ছিলেন না কংগ্রেস প্রার্থী নেপাল মাহাতো। সাতসকালে ঝালদার ইচাগের বাড়ি থেকে বেরিয়ে জয়পুর, পুরুলিয়া ২ ব্লকের ছড়রা, আদ্রা, কাশীপুর ও হুড়ার লক্ষ্মণপুর ছুঁয়ে জেলার পশ্চিম থেকে পুবে চরকি পাক মেরেছেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি। প্রায় সব জায়গাতেই করেছেন কর্মিসভা। বাড়ি ফিরতে রাত হয়েছে অনেক। নেপালবাবুর কথায়, “উৎসব কি আর নিয়মের নিগড়ে বাঁধা থাকে? কোথাও কর্মীদের আবদার মেনে রং মাখতে হয়েছে।” নেপালবাবুর সহধর্মিনী রিতাদেবী নিজে অবশ্য এ দিন দলের মহিলা সংগঠনের কর্মীদের নিয়ে রাঘবপুরে জনসংযোগে নেমেছিলেন। সঙ্গে ছিল আবির। রিতাদেবীর কথায়, “উৎসব উপলক্ষে অনেকের সঙ্গে দেখা হল। বড়দের পায়ে আবির দিয়ে আশীর্বাদ ও শুভেচ্ছা প্রার্থনা করলাম।”
দোলের দিন থেকেই প্রচার শুরু করলেন বিজেপি প্রার্থী বিকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়। পাড়া ব্লকের আনাড়ায় রবিবার দলীয় কর্মীদের সঙ্গে আবির নিয়ে বিকাশবাবু বেরিয়েছিলেন জনসংযোগে। আনাড়া, শাঁকড়া, পলমা, মহুলা ও সংলগ্ন এলাকায় বড়দের পায়ে ও অন্যদের কপালে আবির মাখিয়ে প্রচার শুরু করেন। বিকাশবাবু বলেন, “এত দিন একাধিক কর্মিসভা করেছি। এই প্রথম প্রচারে বেরোলাম। আর তার জন্য দোলের চেয়ে উপযুক্ত দিন কীই বা হতে পারে?”
ছবি: সুজিত মাহাতো ও প্রদীপ মাহাতো।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy