সোমবার তোলা নিজস্ব চিত্র।
লোকশিল্পীদের চিহ্নিত করে পরিচয়পত্র প্রদানের জন্য ‘অডিশনে’র আয়োজন করেছিল জেলা প্রশাসন। সেই মতো বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জেলা শহরে উপস্থিত হয়েছিলেন শিল্পীরা। ‘অডিশন’ পর্ব শেষ হওয়ার পরেই ওই শিল্পীদেরই মদন মিত্রের গ্রেফতারির প্রতিবাদে মিছিলে হাঁটতে দেখা গেল তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে। সোমবার দুপুরে এমনই দৃশ্য দেখা গেল বাঁকুড়ায়।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, এ দিন সকাল থেকে শহরের রবীন্দ্রভবনে শুরু হয় লোকশিল্পীদের অডিশন পর্ব। জেলার জঙ্গলমহলের চারটি ব্লক রাইপুর, সারেঙ্গা, সিমলাপাল, রানিবাঁধ ছাড়াও কোতুলপুর, ছাতনার মতো বিভিন্ন ব্লক থেকে ৯৭টি দলে প্রায় সাড়ে তিন হাজার লোকশিল্পী এসেছিলেন। জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক গৌতম গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “শিল্পীদের চিহ্নিত করে পরিচয়পত্র প্রদান করা হবে। তারপর তাঁদের নানা সরকারি প্রকল্পের প্রচারের কাজে ব্যবহার করা হবে। এক একটি প্রকল্প প্রচার অনুষ্ঠানের জন্য এক হাজার টাকা করে পাবেন শিল্পীরা।”
তৃণমূল সূত্রে খবর, অডিশন পর্ব শেষ হওয়ার পরে শিল্পীরা বাঁকুড়া জেলা পরিষদের সামনে এসে জড়ো হন। সেখান থেকে জেলা সভাধিপতি অরূপ চক্রবর্তী, কর্মাধ্যক্ষ সুখেন বিদ-সহ তৃণমূল নেতাদের নেতৃত্ব মিছিল শুরু হয়। এ দিন মদন মিত্রের গ্রেফতারির প্রতিবাদে ক্রীড়াবিদদের নিয়েও একটি মিছিলের আয়োজন করে তৃণমূল। রাস্তায় দু’টি মিছিল এক সঙ্গে মিলে যায়। মিছিল শেষে মাচানতলা মোড়ে একটি পথসভাও করে শাসকদল।
তবে প্রশ্ন উঠছে, অডিশন শেষে তাঁদের মিছিলে যোগ দেওয়ার নির্দেশ ছিল কি না? না কি নিজেরা স্বেচ্ছায় মিছিলে যোগ দিয়েছেন? তৃণমূলের মিছিলে শিল্পীদের হাঁটা প্রসঙ্গে গৌতমবাবু বলেন, “নির্দিষ্ট সময়ে অডিশন পর্ব শুরু হয়। দুপুরেই শেষ হয়ে গিয়েছিল অডিশন পর্ব। তারপর শিল্পীরা কী করেছেন জানি না।” গৌতমবাবু স্পষ্ট করে কিছু না বললেও মিছিলে উপস্থিত লোকশিল্পীদের অনেকেই জানাচ্ছেন, অডিশন দেওয়ার পরে পথে হাঁটার আগাম খবর তাঁদের কাছে ছিল না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মিছিলে উপস্থিত জঙ্গলমহলের এক লোকশিল্পীর কথায়, “পরিচয়পত্রের জন্য এসেছিলাম। গাড়ির ব্যবস্থা করেছে তৃণমূল। অডিশন দেওয়ার পরে আমাদের বলা হল মিছিল করতে হবে। তাই হাঁটতেই হল।” মিছিলে উপস্থিত আর এক শিল্পীর কথায়, “পরিচয়পত্র হলে সরকারি টাকা পাব জেনে এসেছিলাম। কিন্তু মিছিলের কথা আমি জানতাম না।”
যদিও জেলা সভাধিপতি অরূপ চক্রবর্তীর দাবি, “মানুষ স্বেচ্ছায় মিছিলে যোগ দিয়েছেন। কাউকে জোর করা হয়নি। আমাদের আগে থেকেই এদিন লোক শিল্পীদের নিয়ে মিছিল হবে ঠিক করা ছিল। তাই গাড়ি পাঠিয়ে তাঁদের আনার ব্যবস্থাও করেছি। মিছিল শেষে সবাইকে মুড়ি খাইয়ে বাড়ি পাঠিয়েছি।”
অন্য দিকে, এ দিনই সারদা কেলেঙ্কারিতে মুখ্যমন্ত্রীকে অবিলম্বে জেরা করা, সকল অপরাধীকে গ্রেফতার, আমানতকারীদের অর্থ ফেরতের ব্যবস্থা করা-সহ কয়েক দফা দাবিতে দুপুরে খাতড়ার করালি মোড়ে অবস্থান-বিক্ষোভ করল বামপন্থী দলগুলি। এই প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক অমিয় পাত্র, রানিবাঁধের বিধায়ক দেবলীনা হেমব্রম, তালড্যাংরার বিধায়ক মনোরঞ্জন পাত্র-সহ আরও অনেকে। ঘণ্টা খানেক ধরে চলে এই অবস্থান-বিক্ষোভ। একই দাবিতে পুরুলিয়ার কুলগোড়া মোড়ের কাছে পুরুলিয়া-বাঁকুড়া ৬০-এ জাতীয় সড়ক প্রায় আধঘণ্টা অবরোধ করেন হুড়া ব্লকের কংগ্রেস কর্মীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy