জটাধারীতলায় পুজো-প্রস্তুতির আলোচনা। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম
ওঁদের কেউ ট্রেনে হকারি করেন, কেউ দোকানে কাজ করেন। গরিব পরিবারের মহিলারা সংসারের বোঝা টানতে পরিচারিকার কাজ করেন অনেকে। এত সবের মাঝে পাড়ার পুজো মণ্ডপে দুর্গাপুজো করার বাসনা ওঁদের অনেকদিনের। লকডাউন পর্বে যখন ওঁদের কারও হাতে তেমন কাজ ছিল না, সেই সময় থেকেই পাড়ার দুর্গা মণ্ডপ গড়ে তোলার কাজ শুরু করেছিলেন তাঁরা। ২০১৯ সাল থেকে সেই কাজ শুরু হলেও এখনও মণ্ডপের ছাদ ঢালাই হয়নি। তাতে অবশ্য থেমে থাকেননি তাঁরা।
এ বারই প্রথম রামপুরহাট পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের জটাধারীতলা এলাকার মহিলারা দুর্গাপুজো পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছেন। ইতিমধ্যে গঠন করা হয়েছে ‘জটাধর’ নামে সর্বজনীন দুর্গা পুজো কমিটি। পুজোর এক মাস আগে থেকে প্রায় প্রতিদিনই মহিলারা কেউ চাঁদা তোলার দায়িত্ব সামলাচ্ছেন, কেউ আবার পুজোর থালা বাসন জোগাড়ের উদ্যোগ নিয়েছেন। কেউ আবার মণ্ডপ কী ভাবে সাজানো হবে সেই সব দায়িত্বে আছেন। নিজেরাই বলছেন, ‘‘পাড়ার দুর্গারা যখন আয়োজক পুজো হবে ধুমধাম করেই।’’
মহিলা পরিচালিত জটাধারীতলা সর্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটির সদস্যরা জানালেন, পাড়ায় দুর্গা পুজো না হওয়ার ফলে দূরের মণ্ডপে গিয়ে অঞ্জলি দিতে হত। গভীর রাতে সন্ধিপুজোর সময় দূরের পুজো মণ্ডপে বিশেষ করে বয়স্ক মহিলাদের যেতে অসুবিধা হত। পুজো কমিটির সম্পাদক গীতা মণ্ডল, কোষাধ্যক্ষ মিঠু দাস, সভাপতি মিনতি তুড়িরা বলেন, ‘‘পাড়ায় পুজো না থাকার ফলে বাড়ির ছেলে মেয়েরা অন্য পুজো মণ্ডপে অনেক রাত পর্যন্ত ঘুরত। তাদের খোঁজে আমাদেরও চিন্তার অন্ত ছিল না। এবারে নিজেদের পাড়ার পুজোয় সকলেই ব্যস্ত থাকবে।’’ পুজো কমিটির সদস্যরা জানালেন, পুজোর জন্য প্রতি মাসে ১০০ টাকা করে চাঁদা তোলা হয়। প্রথম দুর্গা পুজোয় ৬২ হাজার টাকা বাজেট ধরা হয়েছে। প্রথমবার জরির সাজের দুর্গা প্রতিমা করা হবে। জোড়া ঢাকির বায়না থেকে অগ্রিম পুরোহিত বায়না দেওয়া হয়েছে। মণ্ডপ শিল্পী থেকে আলোকসজ্জার শিল্পীদের বরাত দেওয়া হয়েছে। বাজেটে কুলোতে পারলে অষ্টমী বা নবমীর দিন নিজেদের মধ্যে ঠাকুরের ভোগ খাওয়ানোর ইচ্ছে আছে পুজো কমিটির।
জটাধারী তলার বাসিন্দা পরেশ মণ্ডল, ইন্তাজ শেখ, কাঞ্চন মণ্ডলরা বলেন, ‘‘ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে পাড়ার সকলেই দুর্গা পুজোর প্রস্তুতিতে স্বতঃস্ফুর্ত ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন।’’ এদিকে পাড়াতে দুর্গা পুজো তাই আনন্দে মাতোয়ারা পাড়ার শিশু, কিশোর, কিশোরীরা।মণ্ডপে প্রতিমা আসার অপেক্ষায় দিন গুণছে প্রত্যুষা, শর্মিষ্ঠা, অর্ণবদের মতো স্কুল পড়ুয়ারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy