শীতে বহু কষ্টে ত্রিপলের নীচে বাস সরকারি বাড়ির উপভোক্তাদের। নিজস্ব চিত্র ।
পাকা ঘর পেতে গিয়ে মাথার উপরের ছাউনিটুকুও হারিয়েছেন। পাঁচ থেকে সাত ডিগ্রির আশেপাশে ঘোরা তাপমাত্রায়, হাড় কাঁপানো শীতে ত্রিপলের নীচে কোনওক্রমে বাস করছেন পুরুলিয়া পুর এলাকার ‘হাউস ফর অল’ প্রকল্পের উপভোক্তারা।
পুরুলিয়া শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডের উপভোক্তারা জানাচ্ছেন, ২০২৩ সালের গোড়ার দিকে তাঁদের বাড়ি ভাঙা হয়। ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কদমকুলি বস্তির মুকুল সর্দারের কথায়, “আমরা দুই বোন এই বাড়িতে থাকতাম। বাবা-মা মারা গিয়েছেন। পরিচারিকার কাজ করে দিন চলে। সরকারি বাড়ির প্রথম কিস্তির টাকা পেয়ে ভেবেছিলাম বাড়িটা হয়েই গেল বোধহয়। তবে দু’বছর হতে চলল পরের কিস্তির টাকা আসেনি। ত্রিপলের নীচে দিন কাটাচ্ছি।” একই ভাবে সংসার চলে পাশের আমলাপাড়া বস্তির মালা বাউরিরও। তিনি বলছেন, “তালিকায় নাম দেখে স্বপ্ন দেখেছিলাম, পাকা বাড়ি হবে। দু’কিস্তির টাকাতে ভিতের উপরে দেওয়াল উঠেছে। ওই পর্যন্তই। এই শীতে ছোট বাচ্চাকে ত্রিপলের নীচে খুব কষ্টে আছি। ঘর ভাড়া করার সাধ্য নেই।” ওই পাড়ারই আর এক মহিলা ও তাঁর পরিবারের ন’জন সদস্যের ঠাঁই হয়েছে ত্রিপলের নীচে। এক কিস্তির টাকা পেয়েছিলেন পোকাবাঁধপাড়া বস্তির রিঙ্কু বাউরিও। স্বামীহারা রিঙ্কু থাকেন পুকুরের ধারে এক চিলতে জায়গায়।
তাঁদের প্রত্যেকেই দাবি করেন, “বার বার পুরসভায় গিয়ে জানতে চেয়েছি, কবে পরের কিস্তির টাকা আসবে। এখনও সেই টাকা আসেনি।”
গত সেপ্টেম্বরে এই প্রকল্পের উপভোক্তাদের বকেয়া কিস্তির টাকার দাবিতে আন্দোলনে নেমেছিল তফসিলি জাতি বাউরি কল্যাণ সমিতি। যার জেরে সে দিনের মতো থমকে যায় পুরসভার কাজকর্ম। তবে বকেয়া কিস্তির টাকা কবে মিলবে, এ বিষয়ে সে দিনও পুরসভার তরফে সদুত্তর মেলেনি বলে অভিযোগ।
তবে পুরসভা সূত্রে খবর, পুরুলিয়া শহরে এই প্রকল্পে উপভোক্তার সংখ্যা ৫,৭৭৩। প্রতি বাড়ি তৈরির খরচ ৩,৬৯,৮৫৮ টাকা। যার মধ্যে কেন্দ্রের সহায়তা ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, রাজ্যের দেওয়ার কথা ১ লক্ষ ৯৪ হাজার ৮৫৮ টাকা এবং উপভোক্তাকে দিতে হবে ২৫ হাজার টাকা। পুরপ্রধান নবেন্দু মাহালি জানাচ্ছেন, প্রকল্পের বিধি অনুযায়ী প্রতিটি বাড়ির বর্তমান অবস্থার বিবরণ ও প্রয়োজনীয় তথ্য নির্দিষ্ট পোর্টালে আপলোড করা রয়েছে। তবে এই প্রকল্পে পুরুলিয়া পুরসভা এখনও পর্যন্ত আর কোনও টাকা পায়নি। তিনি বলেন, “টাকা ঢুকলেই উপভোক্তার অ্যাকাউন্টে দিয়ে দেওয়া হবে।”
শহরের তৃণমূলের পুরপ্রতিনিধি বিভাসরঞ্জন দাস বলেন, “এই শীতে ওঁরা খুবই কষ্টে রয়েছেন। বকেয়া কিস্তির টাকা পেতে প্রয়োজনে দলীয় স্তরে কথা বলার জন্য পুরপ্রধানকে বলব।”
তবে পুরুলিয়ার বিজেপি বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায়ের দাবি, “আবাস প্রকল্পের হিসেব যদি না দেওয়া হয় তবে কোন যুক্তিতে পরের কিস্তির বরাদ্দ আশা করা হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy