তৃণমূলের উচ্ছ্বাস। ফাইল চিত্র।
ভোটের আগেই সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় জয়ী হয়ে বাঁকুড়ার চারটি পঞ্চায়েত সমিতি ও ৩৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতের দখল নিল তৃণমূল। ইন্দাস, পাত্রসায়র, জয়পুর ও কোতুলপুর— এই চারটি পঞ্চায়েত সমিতিতে জয়ের পাশাপাশি ওই চারটি ব্লকের সব ক’টি গ্রাম পঞ্চায়েতেই সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিরোধীরা মনোনয়ন জমা দিতে না-পারায় শাসক তৃণমূলের বোর্ড গঠন করা এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। ঘটনাচক্রে, গত লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচনের ফলের নিরিখে এই এলাকাগুলি ‘গেরুয়া গড়’ বলে পরিচিত জেলার রাজনীতিতে। শনিবার পঞ্চায়েতের তিন স্তরের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র স্ক্রুটিনির পর ওই চারটি ব্লকের তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা জয়ের উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন। বিরোধীরা কটাক্ষ করে বলছে, এটা জয়ের উল্লাস নয়, জল্লাদের নারকীয় উল্লাসে পরিণত হয়েছে।
মনোনয়ন শুরুর দিন থেকেই বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর মহকুমার অন্তর্গত জয়পুর, কোতুলপুর, ইন্দাস ও পাত্রসায়র এই চারটি ব্লক এলাকায় শাসক দলের বিরুদ্ধে একাধিক বার সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। বিরোধী প্রার্থীদের মনোনয়নে বাধা দেওয়ারও অভিযোগ ওঠে শাসক তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সেই চারটি পঞ্চায়েত সমিতিতেই সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিততে চলেছে তৃণমূল। জয়পুর পঞ্চায়েত সমিতির ২৬টি আসনের মধ্যে ২৩টি, কোতুলপুরে ২৪টির মধ্যে ২৪টি, ইন্দাসে ২৯টির মধ্যে ২০টি ও পাত্রসায়রে ৩০টি আসনের সব ক’টিতেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হন তৃণমূল প্রার্থীরা। ওই চারটি পঞ্চায়েত সমিতির অধীনে থাকা ৩৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রতিটিতেই সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে তৃণমূল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করেছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। গত লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে এই চারটি পঞ্চায়েত সমিতি এলাকাতেই বিজেপি এগিয়েছিল। স্বাভাবিক ভাবে বিজেপির গড়ে ঘাসফুল শিবিরের এই জয়ে উচ্ছ্বসিত তৃণমূল নেতা-কর্মীরা।
বিরোধীদের দাবি, তাদের প্রার্থীদের চমকে ধমকে মনোনয়ন জমা দিতে দেওয়া হয়নি। বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি দেবপ্রিয় বিশ্বাস বলেন, ‘‘পুলিশ, প্রশাসন ও তৃণমূল আশ্রিত গুন্ডারা সম্মিলিত ভাবে ওই এলাকায় তৃণমূলকে জয় এনে দিয়েছে। সাধারণ মানুষকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করে গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে তৃণমূল। আজ তৃণমূল যে উল্লাস করছে, তা জল্লাদের নারকীয় উল্লাস।’’ সিপিএমের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক অজিত পতি বলেন, ‘‘তৃণমূলের গুন্ডামি ঠেকানোর জন্য এলাকার মানুষ তৈরি ছিল। কিন্তু তৃণমূলের গুন্ডাদের সঙ্গে পুলিশ ও প্রশাসন মিলেমিশে আমাদের মনোনয়ন আটকে দিয়েছে। মনোনয়ন দিতে গিয়ে ওই চারটি পঞ্চায়েত সমিতি এলাকায় আমাদের কর্মীরা বার বার আক্রান্ত হয়েছেন। তা সত্ত্বেও ইন্দাসে আমাদের কর্মীরা অল্প সংখ্যক আসনে মনোনয়ন জমা দিতে পেরেছেন। নজিরবিহীন আক্রমণের সামনে অন্য তিনটি পঞ্চায়েত সমিতিতে আমরা মনোনয়ন দিতে পারিনি।’’
বাম-বিজেপির এই অভিযোগের কথা মানতে চায়নি তৃণমূল। যুব তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুব্রত দত্ত বলেন, ‘‘কোনও সন্ত্রাস হয়নি। আমাদের নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই বলেছিলেন, বিরোধীরা মনোনয়ন করতে না পারলে আমাদের বলবেন। কিন্তু তাঁরা আমাদের কিছু বলেননি। আমরা বিজেপি নেতার বাড়িতে গিয়ে নির্ভয়ে মনোনয়ন জমা দেওয়ার অনুরোধ করেছিলাম। তার পরেও বিরোধীরা সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণে প্রার্থী দিতে পারেনি। এখন মিথ্যা অভিযোগ তুলে নাটক করছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy