Advertisement
E-Paper

দুর্ঘটনার বিরাম নেই, তরজাও

বীরভূম জেলার উপর দিয়ে যাওয়া ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের সিউড়ি, মহম্মদবাজার, নলহাটি সহ জেলার বিভিন্ন অংশ বেহাল। ফলে বাড়ছে পথ দুর্ঘটনার সংখ্যা।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

সৌরভ চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২৫ ০৬:৩৪
Share
Save

১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের যতটা অংশ বীরভূম জেলার মধ্যে, তার উপর গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত শতাধিক দুর্ঘটনা ঘটে গিয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৪০ জনের বেশি মানুষের। দুর্ঘটনাগুলির মধ্যে মোটরবাইক আরোহীদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হওয়ায় দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে হেলমেট ছাড়া বেপরোয়া গাড়ি চালানোর কথা উঠে আসছে। তবে ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের বেহাল দশা ও যানজটের বিষয় দু’টিকে প্রধান কারণ হিসেবে দেখছেন জনসাধারণ ও পুলিশ আধিকারিকেরা। তবে এতগুলি দুর্ঘটনার পরেও জাতীয় সড়ক সংস্কার বা যানজট কমার কোনও লক্ষণ চোখে পড়েনি নতুন বছরের শুরুতেও।

বীরভূম জেলার উপর দিয়ে যাওয়া ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের সিউড়ি, মহম্মদবাজার, নলহাটি সহ জেলার বিভিন্ন অংশ বেহাল। ফলে বাড়ছে পথ দুর্ঘটনার সংখ্যা। গত ২০ ডিসেম্বর রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনে বালি বোঝাই ট্রাকের ধাক্কায় মৃত্যু হয় এক বৃদ্ধের। ১৯ তারিখ মল্লারপুর থানার একটি আশ্রম সংলগ্ন এলাকায় বাস ও লরির মুখোমুখি সংঘর্ষে ১৬ জন আহত হন। ১৬ ডিসেম্বর সিউড়িতে শহর থেকে জাতীয় সড়কে ওঠার মুখেই ডাম্পারের ধাক্কায় মৃত্যু হয় এক যুবকের। এর আগে নভেম্বরের ২০ তারিখ জাতীয় সড়কের উপর তিলপাড়া সংলগ্ন এলাকায় একটি ডাম্পারের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে মৃত্যু হয় এক স্কুল শিক্ষকের। গত ১৭ জুলাই রামপুরহাট এলাকায় দু’টি মোটর বাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষের মৃত্যু হয় পাঁচজনের। ১৮ জুলাই জাতীয় সড়কের পানুরিয়া সংলগ্ন এলাকায় মালবাহী গাড়ির সংঘর্ষে মৃত্যু হয় এক প্রৌঢ়ার। ওই দিনই মহম্মদবাজার থানা এলাকায় একটি লরির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে মৃত্যু হয় এক যুবকের। তালিকা আরও দীর্ঘ।

লাগাতার দুর্ঘটনার জেরে ১৪ নম্বর জাতীয় সড়ক এখন ‘আতঙ্ক’-এর সমার্থকে পরিণত হয়েছে। সিউড়ি ১ ব্লকের কড়িধ্যার বাসিন্দা সোমনাথ নন্দী বলেন, “যে-কোনও কাজে কড়িধ্যা থেকে সিউড়ি যেতে গেলে জাতীয় সড়ক পার করতেই হয়। যখন বাড়ি থেকে বাইক বা স্কুটার নিয়ে সিউড়ির দিকে যাই, বাড়ি লোক চিন্তায় থাকেন। জঘন্য রাস্তা ও ট্রাকের লম্বা সারির মাঝে কখন কোন দিক থেকে কোন গাড়ি আসবে, তা বোঝার উপায় নেই। সমস্যার সমাধান প্রয়োজন।”

এই প্রসঙ্গে জেলা ট্রাফিক পুলিশের এক আধিকারিক জানান, সারাদিন জাতীয় সড়কের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অংশে কর্মীরা যান নিয়ন্ত্রণ করেন। কিন্তু গোটা রাস্তায় কর্মীদের রাখা সম্ভব নয়। চিনপাইয়ের কাছে শাল নদীর দুর্বল সেতু পারাপার এবং আব্দারপুরে রেললাইন পারাপারের ক্ষেত্রে প্রচুর সময় লাগায় বারবার রাস্তাজুড়ে ট্রাকের সারি তৈরি হচ্ছে। এ ছাড়া গোটা রাস্তা বেহাল। সেতু ও রাস্তার সংস্কার না হলে ও রেল উড়ালপথের কাজ না মিটলে এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়।

অন্য দিকে, বেহাল রাস্তার জন্য ঘুরিয়ে প্রশাসনকেই দায়ী করছে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষের এক আধিকারিক জানান, নলহাটি ও মহম্মদবাজারের পাথর শিল্পাঞ্চল থেকে নিয়মিত ওভারলোড গাড়ি চলাচল করছে জাতীয় সড়কের উপরে। ফলে রাস্তার সংস্কার করা হলেও তা বেশিদিন ঠিক থাকছে না, বারবার ভেঙে যাচ্ছে। এই বিষয়ে প্রশাসনকে দায়িত্ব নিতেই হবে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Birbhum bike accident

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}