গ্রীষ্ম এখনও আসেনি। এরই মধ্যে পুঞ্চায় তীব্র হয়ে উঠেছে জলসঙ্কট। এ জন্য নদী থেকে লাগামছাড়া বালি তোলাকে দুষছেন অনেকেই।
প্রায় দু’দশক আগে থেকে পুঞ্চায় জলপ্রকল্প শুরু হয়েছে। কংসাবতী নদীর ডোঙাবেড়া ঘাটে নদীর বুকে সাব মার্সিবল পাম্প লাগান রয়েছে। পাম্প করে মাটির নীচ থেকে জল তোলা হয়। শোধন করে ওই জল সরাসরি সরবরাহ করা হয়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুঞ্চাবাজার তুলনামূলক ভাবে জোঙাবেড়া ঘাটের কাছে। সেখানে আগে জল আসে, পরে জল দেওয়া হয় ডাঙা এলাকায়। কিন্তু এখন নদীর গর্ভ থেকে জল কম ওঠায় পুঞ্চায় জল দেওয়ার পরে ডাঙা এলাকায় তেমন জল আসছে না। পুঞ্চা থানার মধ্যে জল সরবরাহের একটি সংযোগ রয়েছে। কিন্তু জল ডাঙা বাজার অবধি না আসায় তা কোন কাজে লাগছে না। পুলিশ কম়রা জানান, থানার ভিতরে দু’টি নলকূপ ও একটি গভীর নলকূপ রয়েছে। তিনটি নলকূপের জলই খাওয়া যায় না। পুলিশ কর্মীরা মোবাইল অথবা নাইট ডিউটিতে বের হলে সঙ্গে বোতল, জলের জারিকেন নিয়ে যাচ্ছেন।
জল প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা এক কর্মী বলেন, ‘‘নদীর বুকে জল নেই। জল জমা হচ্ছে না।’’ ওই কর্মীদের মতে, জল ধরে রাখার জন্য নদীর বুকে বালি দরকার। তাঁদের অভিযোগ, বালি ব্যবসায়ীরা লাগামছাড়া ভাবে বালি তুলে নেওয়ায় জল সঞ্চয় হতে পারছে না। বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত অবস্থার পরিবর্তন ঘটবে না। পুঞ্চার বিডিও সুপ্রতীক সিংহ জলসঙ্কট থেকে মুক্তি পাওয়ার কোনও দিশা দেখাতে পারেননি। তিনি জানান, ‘পুঞ্চায় তীব্র জল সঙ্কট দেখা দিয়েছে। জেলা প্রশাসনকে এই সমস্যার কথা তিনি জানিয়েছেন। বিডিও বলেন, ‘‘সাধারণত গ্রীষ্মের মাঝামাঝি সময় থেকে পুঞ্চায় জলসঙ্কট শুরু হয়। এ বার বৃষ্টি যেমন কম হয়েছে, তেমনই নদী থেকে যথেচ্ছ বালি তুলে নেওয়ায় এই সঙ্কট দেখা দিয়েছে। যেখান থেকে সাবমার্সিবল পাম্পে পানীয় জল তোলা হয়, সেখানে বালি তুলতে নিষেধ করা হয়েছে।’’ তিনি জানান, আপৎকালীন ব্যবস্থা হিসাবে গাড়িতে করে জল দেওয়ার ব্যবস্থার কথা ভাবছে প্রশাসন। বিডিও-র আশঙ্কা, ‘‘কিন্তু এই বিকল্প ব্যবস্থা তো বেশিদিন চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।’’
পুঞ্চা পঞ্চায়তে সমিতির সহ-সভাপতি কৃষ্ণচন্দ্র মাহাতোর আশ্বাস, ‘‘জাইকা প্রকল্প চালু হলে ব্লকের সমস্ত পঞ্চায়েত এলাকায় জলের সমস্যা মিটবে।’’ কিন্তু কবে নাগাদ ওই প্রকল্প চালু হবে সে ব্যাপারে তিনি নিশ্চিত ভাবে কিছু বলতে পারেননি। তাই জল সঙ্কট থেকে মুক্তি পেতে বাসিন্দারা চাইছেন, এ বার ভারী বৃষ্টি নামুক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy