দড়িতে বেঁধে রাখা হয়েছে কর্মীকে। বুধবার। ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত
নিম্নমানের খাবার দেওয়া এবং উপভোক্তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মী ও সহায়িকাকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখালেন গ্রামবাসীদের একাংশ। ওই কর্মীকে কিছুক্ষণ দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখার অভিযোগও উঠেছে।
বুধবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে দুবরাজপুর শহরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের চমরুচকপাড়া অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে। ঘটনার জেরে এ দিন প্রসূতি, গর্ভবতী ও শিশুদের মিড-ডে মিল দেওয়া যায়নি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন ব্লক সুসংহত শিশু বিকাশ প্রকল্প আধিকারিক (সিডিপিও) প্রবীর বিশ্বাস। পরে দু’পক্ষকে থানায় ডেকে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান মেলে। কর্মী ও সহায়িকাকে আপাতত সতর্ক করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রসূতি, গর্ভবতী এবং সাত মাস থেকে ছয় বছর পর্যন্ত শিশু মিলিয়ে মোট ১৩৯ জন উপভোক্তা চমরুচকপাড়া আঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের উপরে নির্ভরশীল। কিন্তু, কেন্দ্রের পরিষেবা নিয়ে এলাকায় অনেক দিন ধরেই ক্ষোভ রয়েছে। কর্মী হালিমা বিবি ও সহায়িকা সৈদুন্নিসা খাতুনের ব্যবহার নিয়েও বিস্তর অভিযোগ এলাকার মানুষের। বুধবার সকালে সেই ক্ষোভ বড় আকার নেয় আলুর ঝোলের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলে।
স্থানীয় রেণু বিবি, মনিরা বিবি, আজনা বিবি, মোমনিসা বিবি, আকিলা বিবিদের অভিযোগ, কেন্দ্র থেকে ঠিকমতো রান্না করা খাবার ও ডিম দেওয়া হয় না। রান্নার মান খুব খারাপ। সকাল ১০টার পরে কয়েক মিনিট দেরি হলেও আর খাবার দেন না কর্মী ও সহায়িকা। এমনকি কোনও শিশু পাঁচ বছর অতিক্রম করলেও এখানে থেকে খাবার দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয় বলেও তাঁদের অভিযোগ। রেণু, মনিরাদের দাবি, ‘‘আমরা প্রতিবাদ করলে দুর্ব্যবহার করা হয়। অনেক দিন ধরেই এমন চলে আসছে। তাই আজ সকলে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।’’
এ দিন বিক্ষোভের সময় মহিলাদের পাশাপাশি এগিয়ে আসেন এলাকার পুরুষেরাও। তাঁরাও কর্মী ও সহায়িকাকেই দূষতে থাকেন। ট্যালট্যালে আলুর ঝোল দেখিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়, এই খাবার কী করে খাওয়া সম্ভব। কর্মী ও সহায়িকাকে বদলি করার দাবি তোলেন স্থানীয়েরা। একটা সময় এলাকার এক মহিলা অঙ্গনওয়াড়ির কর্মী হালিমা বিবাকে কিছুক্ষণ দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখেন। বিহিত চেয়ে স্থানীয়রা সিডিপিওকে ফোন করে ঘটনার কথা জানান। আলুর ঝোল মাটিতে ঢেলে কর্মী ও সহায়িকাকে বাড়িতে পাঠানো হয়।
পরিষেবা নিয়ে বাসিন্দাদের অভিযোগ মানতে চাননি কর্মী ও সহায়িকা। তাঁদের দাবি, ‘‘সরকারি নির্দেশ মেনে পরিষেবা দিলেও আমরা স্থানীয় কিছু লোকের রাজনীতির শিকার। যে আলুর ঝোল নিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে এত অভিযোগ করা হচ্ছে, সেই ঝোলে অতিরিক্ত জল মিশিয়ে দেখানো হচ্ছে।’’
এই ঘটনা নিয়ে সিডিপিও প্রতিক্রিয়া দেননি। ছুটিতে রয়েছেন জেলা প্রকল্প আধিকারিকও। শিশুবিকাশ প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, বিক্ষোভের খবর পাওয়া মাত্রই সিডিপিও সেখানে গিয়েছিলেন। দুবরাজপুর থানায় দু’পক্ষকে নিয়ে বসা হয়েছিল। আপাতত কর্মীকে সতর্ক করা হয়েছে। এর পরেও অভিযোগ থাকলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে, পরিষেবা নিয়ে ক্ষোভ থাকলেও এক জন সরকারি কর্মীকে দড়ি দিয়ে বেঁধে হেনস্থা করা উচিত কাজ হয়নি বলে মনে করেছেন প্রশাসনের আধিকারিকেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy