ফাইল চিত্র।
পরীক্ষা শুরুর এক দিন আগেও অচলাবস্থা কাটল না বিশ্বভারতীতে। বৃহস্পতিবার সকালেই অফলাইন পরীক্ষা বয়কটের দাবিতে মিছিল করলেন আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা। দেখালেন বিক্ষোভও। এই পরিস্থিতিতে এ দিনই ‘বিশ্বভারতী বাঁচানোর’ ডাক দিয়েছেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। বস্তুত, লাগাতার চলে আসা ছাত্র-আন্দোলন প্রসঙ্গে এই প্রথম মুখ খুললেন উপাচার্য। তাঁর অভিযোগ, বিশ্বভারতীতে ‘নোংরা রাজনীতি’ চলছে।
এ দিন সকাল থেকেই আন্দোলনকারীরা নতুন ভাষা-বিদ্যাভবনের সামনে জমায়েত করতে শুরু করেন। বেশ কিছু বিভাগে ক্লাস বন্ধ করার জন্য তাঁরা বিক্ষোভও দেখান। বেলা ১২টা নাগাদ ওই জায়গা থেকে টোটোয় চেপে বিশ্বভারতী ক্যাম্পাস জুড়ে মিছিল করেন আন্দোলনকারীরা। সঙ্গীতভবন, কলাভবন, শিক্ষাভবন-সহ বিভিন্ন ভবনে পড়ুয়াদের আন্দোলনে শামিল হওয়ার ডাক দেওয়া হয়। অফলাইন পরীক্ষা বয়কটের দাবিতে আজ, শুক্রবার ফের জমায়েতের ডাক দিয়েছেন তাঁরা। ফলে, আজ পরীক্ষার দিনেও গোলমালের একটা আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে ক্যাম্পাসে।
এ দিনই দূরদর্শনে উপাচার্য বলেন, ‘‘আমাদের কিছু তথাকথিত ছাত্রছাত্রী, আমি জানি না, তাদের মধ্যে কতজন ছাত্রছাত্রী আর কত জন বহিরাগত, তারা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অ্যাকাউন্টস ডিপার্টমেন্টের পাশে ত্রিপল খাটিয়ে বসে আছে। এই অবস্থায় আমরা কিছুতেই কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও গ্রন্থাগার খুলতে পারছি না। কারণ বাইরের কেউ কোনও ক্ষতি করলে সেই দায় আমাদের উপরেই থাকবে। তাই যতদিন তথাকথিত ছাত্রছাত্রীরা ত্রিপল খাটিয়ে ভিতরে থাকবে, আমরা কার্যালয় খোলার কথা ভাবছি না।’’ এর পরেই তাঁর আবেদন, ‘‘আমি সমস্ত বাঙালি, সমস্ত দেশবাসী তথা বিশ্ববাসীর কাছে করজোড়ে অনুরোধ করছি, বিশ্বভারতীকে বাঁচান! কারণ বিশ্বভারতীতে এই ধরনের নোংরা রাজনীতি বহুদিন ধরে হয়ে চলেছে।’’ এখন কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে বলেই এই ধরনের ‘দুর্ঘটনা’ ঘটে যাচ্ছে বলেও উপাচার্যের দাবি।
আন্দোলনকারীদের পাল্টা দাবি, তাঁরা সকলেই বিশ্বভারতীর পড়ুয়া এবং প্রয়োজনে নিজেদের পরিচয়পত্র দেখাতেও প্রস্তুত। কিন্তু কর্তৃপক্ষ এই ধরনের কথা বলে নিজেদের ত্রুটি ঢাকতে চাইছেন।
অন্য দিকে, কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ মেনে এ দিন দুপুরে পুলিশের এক প্রতিনিধিদলকে সঙ্গে নিয়ে খোয়াই ছাত্রীনিবাস পরিদর্শনে যান বিশ্বভারতীর নবনিযুক্ত প্রোক্টর সুদেবপ্রতিম বসু এবং অন্য আধিকারিকরা। আদালতের নির্দেশ, যে-সব পড়ুয়া ঘর অহেতুক দখল করে রেখেছেন, প্রয়োজনে তাঁদের ঘরের তালা জিনিসপত্র সরিয়ে ঘর খালি করতে হবে। এ দিন তালা ভাঙা না-হলেও শনিবার থেকে হস্টেল খালি করার কাজ শুরু করা হবে বলে জানা যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রেও কর্তৃপক্ষের দাবি, কেন্দ্রীয় কার্যালয় ‘দখলমুক্ত’ না-হলে কোনও রকম কাজই সুষ্ঠু ভাবে করা যাচ্ছে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy