সেই ‘টেমপ্লেট’। —স্যোশ্যাল মিডিয়া
নদিয়ার কৃষ্ণনগরে সভার ভিড়ে আটকে পড়েছিল অ্যাম্বুল্যান্স। পথ না ছেড়ে সভামঞ্চ থেকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ নির্দেশ দিয়েছিলেন— ‘অ্যাম্বুল্যান্স ঘুরিয়ে দিন’। যার প্রতিবাদে এ বার দিলীপবাবুর নাম না করে ‘অ্যাম্বুলেন্সকে সাইড দিন’ স্লোগান তুলেছে তৃণমূল।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বাঁকুড়ার তৃণমূল জেলা নেতাদের অনেকের ‘হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ’-এ ‘অ্যাম্বুলেন্সকে সাইড দিন’ লেখা ওই ‘টেমপ্লেট’ দেখা গিয়েছে। তাতে একটি অ্যাম্বুল্যান্সের ছবি রয়েছে। সঙ্গে লেখা ‘অ্যাম্বুলেন্সকে সাইড দিন, আপনার পাঁচ মিনিটের ত্যাগ বাঁচিয়ে দিতে পারে একটি জীবন’। মেসেজে তৃণমূল নেতাদের ছবি ও নাম লেখা। তৃণমূলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শুভাশিস বটব্যালও বিভিন্ন ‘হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ’-এ ওই ছবি পোস্ট করেছেন।
শুভাশিসবাবুর দাবি, “দলের রাজ্য নেতারা আমাকে টেমপ্লেটটি পাঠিয়েছেন। সেখানে প্রেরকের ছবি ও নাম লেখার অপশনও রয়েছে।” জেলা নেতাদের কেউ কেউ দাবি করছেন, ওই ‘টেমপ্লেট’ ছড়ানোর মধ্যে তাঁরা ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোরের দলের হাত দেখছেন। বিষয়টি নিয়ে এ দিন দিলীপবাবুর প্রতিক্রিয়া, “নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতা করতে গিয়ে এখন আর লোক পাচ্ছে না তৃণমূল। তাই এই সব নাটক করছে। মানুষ ওদের বিশ্বাস করে না।”
গত সোমবার কৃষ্ণনগরে দলীয় সভায় বক্তব্য রাখছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপবাবু। একটি অ্যাম্বুলেন্সকে দেখা যায় ওই ভিড়ে আটকে পড়ে হুটার বাজাতে। ঘটনাটি দেখে সভামঞ্চ থেকে দিলীপবাবু বলে দেন, ‘‘এখান দিয়ে যেতে দেওয়া যাবে না। অ্যাম্বুল্যান্স অন্য রাস্তা দিয়ে ঘুরিয়ে দিন।’’
দিলীপ দাবি করেন, তাঁর সভায় গন্ডগোল পাকাতে চক্রান্ত করে ওই অ্যাম্বুল্যান্স পাঠানো হয়েছিল। ওই অ্যাম্বুলেন্সে কেউ ছিলেন না বলেও দাবি করেন তিনি। যদিও সে দিন ওই অ্যাম্বুল্যান্সের ভিতরে ছটফট করছিলেন এক আসন্ন প্রসবা। পরে তিনি একটি সন্তানের জন্ম দেন। মঙ্গলবার দিলীপবাবুর বিরুদ্ধে ওই ঘটনায় নদিয়ার কোতয়ালি থানায় মামলাও রুজু হয়েছে।
সভার ভিড়ে অ্যাম্বুল্যান্স আটকে পড়ার পরে দিলীপবাবুর সভামঞ্চ থেকে দেওয়া ওই প্রতিক্রিয়া ইতিমধ্যেই ‘ভাইরাল’ হয়েছে সমাজমাধ্যমে। বিভিন্ন মহলে এ নিয়ে সমালোচনাও শুরু হয়েছে। জরুরি পরিষেবার গাড়ি আটকে দেওয়ার ঘটনা মানতে পারছেন না বিজেপিরই অনেক কর্মী।
অ্যাম্বুল্যান্স আটকে দেওয়ার বিষয়টিকে বিজেপির বিরুদ্ধে বড়সড় হাতিয়ার হিসেবে তুলে ধরতে চলেছে তৃণমূল। সে ইঙ্গিত মিলেছে শুভাশিসবাবু কথায়। তাঁর দাবি, “বিজেপি নেতারা যে সামাজিক দায়িত্ববোধের ধার ধারেন না, তা অ্যাম্বুল্যান্স আটকে বুঝিয়ে দিয়েছেন। দলের নির্দেশে এখন আমরা ঘরে ঘরে এনআরসি এবং নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রচারে যাচ্ছি। সেখানে অ্যাম্বুল্যান্সকে সাইড দেওয়ার জন্য আমরা সবাইকে সচেতন করব। সেখানে কৃষ্ণনগরের ঘটনাটিও তুলে ধরা হবে। সোশ্যাল মিডিয়াতেও প্রচার চলবে।’’
দিলীপবাবু এ দিনও দাবি করেন, “আমি এখনও বলছি, সে দিন চক্রান্ত করে আমার সভায় ওই অ্যাম্বুল্যান্স ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। ওই অ্যাম্বুল্যান্সের চালকও দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সভায় বক্তব্য শুনছিলেন। ভিতরে রোগী থাকলে নিশ্চয়ই তাঁকে সেখান থেকে পার করে দেওয়ার ব্যবস্থা করতাম।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy