নানুরে উদ্ধার হওয়া বোমাগুলি নিষ্ক্রিয় করছে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র
নানুরে যে দিন তাজা বোমা উদ্ধার হল, সে দিনই পাড়ুইয়ে বোমা ফেটে গুরুতর জখম হলেন এক তৃণমূল নেতা। সোমবার বিকেলে পাড়ুই থানার লেবড়া গ্রামের ঘটনা। ওই নেতার দুই হাতের আঙুল উড়ে গিয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রের খবর।
এই ঘটনাকে ঘিরে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। বিজেপি-র অভিযোগ, এ দিন ওই গ্রামের শেষ প্রান্তে একটি পুকুর পাড়ে তৃণমূলের লেবড়া গ্রামের বুথ সভাপতি শেখ মুস্তাক ওরফে বাপি কয়েক জনকে নিয়ে বোমা বাঁধছিলেন। এমন সময় হঠাৎই বিস্ফোরণ ঘটে। বিকট আওয়াজে কেঁপে উঠে গ্রাম। বোমা বাঁধার অভিযোগ যদিও অস্বীকার করেছে তৃণমূল।
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) সমর্থনে আজ, মঙ্গলবার পাড়ুই বাসস্ট্যান্ডে বিজেপি-র অভিনন্দন যাত্রা বেরনোর কথা ছিল। যাত্রার শেষে একটি পথসভা হওয়ার কথা ছিল। সেই কর্মসূচিতে থাকার কথা ছিল দলের কেন্দ্রীয় নেতা রাহুল সিংহ, বিজেপি-র রাজ্য কমিটির সম্পাদিকা মাফুজা খাতুনের। ওই কর্মসূচি অবশ্য পুলিশি অনুমতি না মেলায় বাতিল করতে হয়েছে বিজেপি-কে।
বিস্ফোরণের কয়েক ঘণ্টা আগেই অভিনন্দন যাত্রা বাতিল নিয়ে সিউড়িতে জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহের সঙ্গে দেখা করেন বিজেপি-র জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল। তাঁর দাবি, রবিবার পুলিশের পক্ষ থেকে ফোন এবং ই-মেল মারফত জানানো হয়, তাঁদের ওই কর্মসূচির কারণে এলাকায় আইনশৃঙ্খলার সমস্যা হতে পারে। তাই পুলিশের অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়। তাঁর আরও দাবি, ‘‘আমাদের কাছে খবর আছে, অভিনন্দন যাত্রা এবং পথসভা বানচাল করার উদ্দেশ্যেই তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা আজ বোমা বাঁধার কাজ করছিল। আজ বীরভূম বোমা-বারুদের স্তূপের উপরে দাঁড়িয়ে রয়েছে। প্রায়ই কোনও না কোনও তৃণমূল নেতার বাড়িতে বোমা বিস্ফোরণ হচ্ছে। এ দিনও নানুরে তাজা বোমা মিলেছে। প্রশাসনকে বলব, পাড়ুইয়ের ঘটনার সঠিক ভাবে তদন্ত করে এই ঘটনার সঙ্গে যুক্তদের উপযুক্ত শাস্তি দিতে।’’
অভিযোগ অস্বীকার করে পাড়ুই অঞ্চলের তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি অভিজিৎ সিংহ বলেন, ‘‘তৃণমূলের কেউ এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নয়। পুলিশ-প্রশাসনকে বিষয়টি দেখতে বলব। বিজেপি চাইছে নতুন করে পাড়ুইকে অশান্ত করতে, তাই আমাদের নামে এই ধরনের মিথ্যা অভিযোগ করছে।’’ তৃণমূলের পাড়ুই অঞ্চল সভাপতি সিরাজুল শাহ বলেন, ‘‘শুনেছি পুকুর পাড়ে বোমা ভর্তি একটা পরিত্যক্ত ব্যাগ পড়েছিল। সেটায় হাত দিতেই এই বিস্ফোরণ ঘটেছে।’’ তাঁর আরও দাবি, যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, সেই শেখ মুস্তাক আগে বিজেপি করতেন। কিছুদিন হল তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। বর্তমানে তিনি দলের কোনও পদে নেই। ওই গ্রামে বুথ সভাপতি রয়েছেন শেখ আতাউল্লা। সিরাজুল আরও বলেন, ‘‘কোনও রাজনৈতিক দল মিটিং-মিছিল করতেই পারে। তা বানচাল করার মতো মানসিকতা আমাদের নেই।’’
ঘটনার পর থেকেই অবশ্য আহত নেতার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। বিজেপির অভিযোগ, নিজেদের দুষ্কর্ম ঢাকতে লুকিয়ে রাখা হচ্ছে বোমা বিস্ফোরণে আহতকে। তৃণমূল তা মানতে নারাজ। পুলিশ জানিয়েছে, ওই গ্রামে কোথা থেকে বোমার মশলা আনা হয়েছিল, কারা কী উদ্দেশ্যে বোমা বাঁধছিল, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
বিজেপি সূত্রের খবর, পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করে মাধ্যমিক পরীক্ষার পরে পাড়ুইয়ে অভিনন্দন যাত্রা কর্মসূচি করা হবে বলে পুলিশ সুপারকে জানানো হয়েছে। শ্যামপদর বক্তব্য, ‘‘আমরা পুলিশ-প্রশাসনকে সম্মান করি বলেই পাড়ুইয়ে আমাদের কর্মসূচি বাতিল করেছি। একই সঙ্গে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি সিউড়িতে আমাদের একটি মিছিল হবে বলে পুলিশ সুপারকে জানিয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy