Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪

বাড়িতে গিয়ে টাকা ‘ফেরত’ তৃণমূল নেতার

‘মিশন নির্মল বাংলা’ প্রকল্পের জন্য উপভোক্তাদের থেকে ন’শো টাকা সরকারি নিয়মেই নেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রেও যাঁরা ‘কাটমানি’ নেওয়ার অভিযোগ তুলছেন, তাঁদের অভিযোগ রসিদ না দেওয়া নিয়ে।

হাতে-হাতে: উপভোক্তাদের দোরগোড়ায় সেই নেতা। নিজস্ব চিত্র

হাতে-হাতে: উপভোক্তাদের দোরগোড়ায় সেই নেতা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৯ ০১:০৬
Share: Save:

টাকা ভর্তি সবুজ ব্যাগ হাতে। সঙ্গে ‘মিশন নির্মল বাংলা’ প্রকল্পের উপভোক্তাদের তালিকা। বাড়ি বয়ে রীতিমতো সইসাবুদ করিয়ে ‘কাটমানি’ ফেরালেন তৃণমূল নেতা। সোমবার বাঁকুড়া ২ ব্লকের কেশিয়াকোলের ঘটনা। কাটমানি নেওয়ার ‘অপবাদ’ ঘোচাতে তিনি এমনটা করছেন বলে দাবি স্থানীয় তৃণমূল নেতা ভজহরি গড়াইয়ের।

‘মিশন নির্মল বাংলা’ প্রকল্পের জন্য উপভোক্তাদের থেকে ন’শো টাকা সরকারি নিয়মেই নেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রেও যাঁরা ‘কাটমানি’ নেওয়ার অভিযোগ তুলছেন, তাঁদের অভিযোগ রসিদ না দেওয়া নিয়ে। যা থেকেই গোলমালের সূত্রপাত। স্থানীয় বিকনা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তথা কেশিয়াকোল এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য গোপাল চট্টোপাধ্যায়ও দাবি করেন, কেশিয়াকোলের উপভোক্তাদের থেকে তোলা টাকা পঞ্চায়েতেও জমা করা হয়নি।

গোপালবাবু বলেন, “ভজহরি বা শৌচালয় গড়ার প্রকল্পে দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার কেউই উপভোক্তাদের কাছ থেকে তোলা টাকা পঞ্চায়েতে জমা করেননি। ওই টাকা কোথায় গেল তার হিসেব ঠিকাদারকেই দিতে হবে।” এ দিন বারবার চেষ্টা করেও ওই প্রকল্পের ঠিকাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। ভজহরির আক্ষেপ, “আমি উপভোক্তাদের কাছ থেকে টাকা তুলে ঠিকাদারকেই দিয়েছিলাম পঞ্চায়েতে জমা করার জন্য। ওই ঠিকাদারের গোলমালের খেসারত আমাকে দিতে হচ্ছে। টাকা ধার করে আমাকে উপভোক্তাদের টাকা মেটাতে হচ্ছে।”

জেলায় তৃণমূল নেতা-কর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধে ‘কাটমানি’ তোলার অভিযোগ প্রায়ই উঠছে। তবে টাকা ‘ফেরত’ দেওয়ার নজির এই প্রথম। কিছু দিন আগেই কেশিয়াকোলের তৃণমূল নেতা তথা বাঁকুড়া ২ পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সদস্য অরুণ গড়াইকে ঘেরাও করেছিলেন স্থানীয় কিছু বাসিন্দা। খবর পেয়ে পুলিশ যায়। অরুণবাবু স্থানীয়দের সঙ্গে আলোচনায় বসার আশ্বাস দিয়েছিলেন। অভিযোগ ছিল, মিশন নির্মলবাংলা প্রকল্পের উপভোক্তাদের কাছ থেকে ভজহরি ও সরকারি গৃহনির্মাণ প্রকল্পের উপভোক্তাদের থেকে অরুণ ‘কাটমানি’ নিয়েছিলেন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে দুই নেতাই বৈঠকে বসেন। সেখানে টাকা ফেরত দেবেন বলে ঘোষণাও করেন। সেই ঘোষণা মতো এ দিন ভজহরি এলাকায় টাকা ফেরত দিতে নামেন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, এলাকার ৯০ জনের কাছ থেকে ‘কাটমানি’ নেওয়া হয়েছিল। ভজহরি এ দিন জনা তিরিশ উপভোক্তার বাড়ি গিয়ে টাকা ফিরিয়ে দিয়ে স্বাক্ষর করিয়েছেন।

এ দিন তৃণমূল নেতা অরুণবাবু বলেন, “আমি গ্রামবাসীর সঙ্গে আরও এক প্রস্ত আলোচনায় বসতে চাই। আমাকে ভুল বুঝছেন অনেকে।” তবে বাঁকুড়া ২ ব্লক বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ পান্ডের কটাক্ষ, ‘‘ওরা মুখে যাই বলুক, সব সত্যি মানুষের সামনে এসে গিয়েছে। উদ্দেশ্য সৎ হলে রসিদটা অন্তত দিত।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Bribe TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy