চলছে অবরোধ। প্রশাসনের আশ্বাসে রাস্তা মুক্ত হয়। নিজস্ব চিত্র
মাঝে দূরত্ব মাত্র ১৫০ মিটার। হাসপাতালে চিকিৎসক নিয়োগের দাবিতে মানবাজার ২ ব্লকের বসন্তপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাল তৃণমূল এবং বিজেপি। তবে ফারাক এই যে, তৃণমূলের বিক্ষোভে ছিল না দলীয় পতাকা।
গত রবিবার থেকে বন্ধ ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অন্তর্বিভাগ। অবিলম্বে তা চালুর দাবিতে মঙ্গলবার স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি এবং তৃণমূল কর্মীরা। পরে বিডিও এবং বিএমওএইচ-এর হস্তক্ষেপে বিক্ষোভ প্রত্যাহার করে নেয় দুই দল।
মানবাজার ২ ব্লকের বসন্তপুর, আঁকরো, দিঘী ও জামতোড়িয়াতে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে। এক মাত্র বসন্তপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই অন্তর্বিভাগ চালু ছিল। বাকিগুলিতে রয়েছে কেবল বহির্বিভাগ। অভিযোগ, গত রবিবার বসন্তপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অন্তর্বিভাগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। ওই দিন সকালে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দেওয়ালে একটি বিজ্ঞপ্তি দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, বিজ্ঞপ্তিতে ছিল না কোনও আধিকারিকের স্বাক্ষর বা সরকারি স্টাম্প। শুধু লেখা ছিল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে চিকিৎসক তুলে নেওয়ায় সেখানে কেবলমাত্র বহির্বিভাগ চালু থাকবে। সেই থেকেই ক্ষোভে ফুঁসছিলেন এলাকার বাসিন্দারা।
এ দিন ভোর ৫টা নাগাদ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে মানবাজার-বান্দোয়ান রাস্তায় বসে পড়েন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। তবে তাঁদের হাতে ছিল না দলের ঝান্ডা। ঘণ্টা দুই যেতে না যেতে দলীয় পতাকা হাতে ওই একই জায়গায় বিক্ষোভ দেখানো শুরু করেন বিজেপি কর্মীরা। দুই দলের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে দূরত্ব ছিল মেরেকেটে ১৫০ মিটার।
তৃণমুলের মানবাজার ২ ব্লক সভাপতি হংসেশ্বর মাহাতো বলেন, ‘‘দলীয় ঝান্ডা নিয়ে অবরোধ বিক্ষোভ নীতিগত ভাবে সমর্থন করে না দল। এ ব্যাপারে দলনেত্রীর নির্দেশ রয়েছে। সেই কারণে ঝান্ডা ছাড়াই দলের কর্মী-সমর্থকরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।’’ তবে তৃণমূলেরই অন্য একটি সূত্র বলছে, ‘‘দলীয় ঝান্ডা নিয়ে বিক্ষোভ দেখালে মানুষের কাছে সরকার-বিরোধী বার্তা যেত।’’ হংসেশ্বর অবশ্য বলেন, ‘‘এটি সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য পরিষেবা সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই দিনের কর্মসুচি পূর্ব নির্ধারিত ছিল।’’
বিজেপির স্থানীয় মণ্ডল সভাপতি কৃত্তিবাস মাহাতোর দাবি, ‘‘অবিলম্বে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অন্তর্বিভাগ চালুর করতে হবে। এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপর বহু মানুষ নির্ভরশীল।’’
কয়েক ঘণ্টা কেটে যাওয়ার পরেও বিক্ষোভ না ওঠায় ঘটনাস্থলে যান বিএমওএইচ (মানবাজার ২) কৌশিক ঢাল এবং বিডিও (মানবাজার ২) তারাশঙ্কর প্রামাণিক। তাঁরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ ওঠে। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা অবরোধ চলায় মানবাজার-বান্দোয়ান রাস্তায় যানজট হয়। দু’পাশে দুরপাল্লার বহু বাস এবং পণ্যবাহী গাড়ি আটকে পড়ে।
বিএমওএইচ জানান, ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এক জন চিকিৎসককে ‘ডেপুটেশনে’ পাঠানো হয়েছিল। তাঁকে ফিরিয়ে নেওয়ায় এখন ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মাত্র এক জন চিকিৎসক রয়েছেন। তাঁর পক্ষে ২৪ ঘণ্টা পরিষেবা দেওয়া সম্ভব নয়। তিনি বলেন, ‘‘এই পরিস্থিতির কথা জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে জানিয়েছি। তিনি এক জন চিকিৎসককে সেখানে নিয়োগ করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন। আগামী ১ আগস্ট থেকে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ফের অন্তর্বিভাগ চালু হবে।’’
বিডিও-র দাবি, ‘‘ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসক নিয়োগের জন্য জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি।’’
স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে পুরুলিয়ার অনেক এলাকায় ক্ষোভ রয়েছে। আড়শা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসক নিয়োগের দাবিতে সোমবার পথ অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। চিকিৎসক না থাকায় ঝালদা ২ ব্লকের করেং স্বাস্থ্যকেন্দ্র চলছে এক ফার্মাসিস্ট এবং এক জন নার্সের ভরসায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy