সোনামুখীর রাঙামাটিতে দামোদর থেকে বালি তুলে বোঝাই হচ্ছে ট্রাকে। মঙ্গলবার সকালে। ছবি: অভিজিৎ অধিকারী
নদীর মাঝে যন্ত্র নিয়ে গিয়ে, পাইপ দিয়ে তোলা হচ্ছে বালি। তা ট্রাক বোঝাই করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে দামোদর নদ থেকে। বাঁকুড়ার সোনামুখীর রাঙামাটিতে বেশ কিছু দিন ধরেই এ ভাবে বালি চুরি হচ্ছে বলে অভিযোগ। জেলা প্রশাসনের অবশ্য দাবি, এলাকায় বালিঘাট পরিদর্শনে গিয়ে তেমন কিছু নজরে পড়েনি।
এলাকাবাসীর দাবি, প্রশাসনিক অভিযানের খবর কোনও ভাবে আগাম পেয়ে যান বেআইনি বালি কারবারিরা। সতর্ক হয়ে যান তাঁরা। কিন্তু সাময়িক বিরতির পরে আবার রমরমিয়ে কারবার চলতে থাকে। সোনামুখীর কুলডাঙা, বন্দিরামপুর, বেলডাঙা, ডিহিপাড়া-সহ নানা জায়গার বহু দুধ ব্যবসায়ী, নিত্যযাত্রী, বিভিন্ন দোকানের কর্মীরা রাঙামাটির ফেরিঘাট দিয়ে দামোদর পেরিয়ে পশ্চিম বর্ধমানের সিলামপুর, পানাগড়, দুর্গাপুর, বীরভূমের বোলপুর ইত্যাদি এলাকায় যাতায়াত করেন। তাঁদের অনেকের দাবি, দামোদরে যন্ত্র ও পাইপ দিয়ে বালি তোলার কৌশল খুবই চেনা।
স্বরূপ হালদার নামে এক যাত্রীর অভিযোগ, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে রাঙামাটির ফেরিঘাট দিয়ে দুর্গাপুর যাতায়াত করছি। নদীর গভীর থেকে পাইপ দিয়ে বালি তোলায় বিভিন্ন জায়গায় বড় বড় গর্ত তৈরি হচ্ছে। নদীর জল কমে গেলেও, সেগুলি মরণকূপের মতো থেকে যাচ্ছে। প্রশাসনের আরও সক্রিয় হওয়া দরকার।’’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দুধ ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘এ ভাবেই নদী থেকে বালি তোলা হয়। তবে যে দিন সরকারি দফতর থেকে কেউ বালিঘাটে আসেন, সে দিন চার দিক ফাঁকা থাকে।’’ এলাকাবাসীর একাংশের দাবি, সন্ধ্যার দিকে দামোদরের বালির চরে দাঁড়িয়ে থাকে বেশ কিছু ট্রাক। সারা রাত ধরে যন্ত্র দিয়ে বালি বোঝাই করা হয় বলে অভিযোগ। মঙ্গলবার সকালে ওই ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, নদীগর্ভ থেকে পাইপ দিয়ে বালি তোলা হচ্ছে। সে বালি যন্ত্র লাগিয়ে ট্রাক বোঝাইও করা হচ্ছে।
বিষ্ণুপুর মহকুমার ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক ফাল্গুনী সৎপতি অবশ্য জানান, পাইপ বা যন্ত্র দিয়ে বালি তোলার কোনও অভিযোগ তাঁর জানা নেই। তিনি বলেন, ‘‘বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। জেলা প্রশাসনের নির্দেশ মেনে তদন্ত হবে।” তিনি জানান, নদীর পাড় থেকে একশো মিটার দূরে বা মোট বালির চরের এক তৃতীয়াংশের বেশি বালি তোলা নিষিদ্ধ। নদী থেকে যন্ত্র দিয়ে বালি তোলা কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ। খাদান মালিকেরা এ বিষয়ে অবগত। তিনি বলেন, ‘‘পাইপ বা যন্ত্র দিয়ে ঘাট থেকে বালি বোঝাই করা যায় না। তা করলে লিজ় হোল্ডারের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। প্রয়োজনে, লাইসেন্স পর্যন্ত বাতিল হতে পারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy