Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Bankura

বাঁকুড়ায় আজ থেকে পুলকারে নজরদারি

পুলকারের নিরাপত্তা নিয়ে স্কুল পড়ুয়া এবং তাদের অভিভাবকদের আশঙ্কা নতুন নয়। পোলবার ঘটনায় সেই আশঙ্কা যেন জাঁকিয়ে বসেছে তাঁদের মনে।

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০০:৩৩
Share: Save:

পুলকারের নিরাপত্তা নিয়ে স্কুল পড়ুয়া এবং তাদের অভিভাবকদের আশঙ্কা নতুন নয়। পোলবার ঘটনায় সেই আশঙ্কা যেন জাঁকিয়ে বসেছে তাঁদের মনে। ভোরে ঘুম থেকে উঠে ছেলেমেয়েকে স্কুলের জন্য তৈরি করা। তারপর দুরুদুরু বুকে তাদের পুলকারে তুলে দেওয়া। যতক্ষণ না ছেলেমেয়ে স্কুলে পৌছয়, ততক্ষণ অভিভাবকদের নাড়ির গতি স্বাভাবিক হয় না। স্কুলে পৌঁছনোর পরে কয়েক ঘণ্টার স্বস্তি। তারপর ফের মনে অস্থিরতা। বারবার রাস্তায় উঁকি দেওয়া। ছেলেমেয়েকে পুলকার থেকে নামতে না দেখলে স্বস্তি আসে না।

বাঁকুড়ার মিথিলা এলাকার একটি আবাসনের বাসিন্দা মঞ্জু কর্মকার বলেন, “ভোরে ছেলেকে পুলকারে চাপিয়ে দিয়ে আসি। হুগলির ঘটনার পরে খুবই চিন্তায় পড়েছি। প্রশাসন ও পুলিশের কাছে আবেদন তারা যেন নিয়মিত পুলকারগুলির উপরে নজরদারি চালায়।” ওই আবাসনের আর এক বাসিন্দা ত্রিলোচন নন্দীর কথায়, “স্কুলের বাস না পাওয়ায় কয়েকজন অভিভাবক মিলে একটি পুলকার ভাড়া করেছি। আমরা চাই, পুলিশ ও প্রশাসন এই ধরনের গাড়িতে গতি নিয়ন্ত্রণে মিটার বসাক।”

পোলবায় পুলকার দুর্ঘটনার পরে তৎপর রাজ্য প্রশাসন। পুলকারগুলিতে কী ব্যবস্থা থাকা উচিত, সে বিষয়ে স্কুলশিক্ষা দফতরের তরফে নির্দেশিকাও জারি হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। শুক্রবার পুলিশ, স্কুলশিক্ষা দফতর ও পরিবহণ দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেন বাঁকুড়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) অসীমকুমার বিশ্বাস। পুলকারগুলি নিয়ম মেনে চলছে কি না, তা নিশ্চিত করতে নানা পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

এক আধিকারিক জানান, জেলায় কয়েকটি সরকারি স্কুলে পুলকার চলে। বেশিরভাগ পুলকার চলে বেসরকারি স্কুলগুলিতে। যে বাসগুলি পড়ুয়াদের নিয়ে যাতায়াত করে, সেগুলির তথ্য সংগ্রহ স্কুলের পক্ষে সহজ। কিন্তু ওই কাজে ব্যবহার হওয়া অন্য গাড়িগুলির তথ্য স্কুলের কাছে থাকে না। কয়েকজন অভিভাবক মিলে একটি গাড়ি ভাড়া করেন। সেটি-ই পুলকার হিসাবে ব্যবহার হয়। জেলার এমন পুলকারের সংখ্যা কত, তার কোনও হিসেব নেই।

প্রশাসনের একাংশের দাবি, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অভিভাবকদের ভাড়া করা গাড়িগুলি নিয়ম মেনে চলে না। বাণিজ্যিক ভাবে গাড়ির ব্যবহার করতে হলে গাড়ির মালিককে আলাদা পারমিট নিয়ে হয়। সেই ধরনের গাড়ির জন্য বেশি কর দিতে হয়। গাড়ির স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য নিদিষ্ট সময়ে পরিবহণ দফতরে যেতে হয়। অভিভাবকদের ভাড়া করা বেশির ভার গাড়ির বাণিজ্যিক লাইসেন্স নেই। সেগুলির স্বাস্থ্যপরীক্ষাও নিয়মিত হয় না। এমন গাড়ির সংখ্যা জেলায় কত সেই তথ্য সংগ্রহ প্রশাসনের মূল লক্ষ্য।

প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “মাধ্যমিক পরীক্ষা চলছে। এখন পুলকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে পরীক্ষার্থীরা সমস্যায় পড়বে।” তবে আজ, সোমবার থেকেই পুলকারগুলির শনাক্তকরণের কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। অতিরিক্ত জেলাশাসক অসীমবাবু বলেন, “যে সব পুলকার ব্যক্তিগত পারমিটে চলছে, তাদের মালিকদের বাণিজ্যিক পারমিট নেওয়ার সুযোগ দেব।” মাধ্যমিক শেষ হলে তৎপরতা বাড়ানো হবে। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “পুলিশের তরফে একটি বিশেষ দল গড়ে পুলকারগুলির উপরে নজরদারি চলবে। কোন পুলকারকে স্কুলে পৌঁছনোর জন্য কতটা সময় দেওয়া হয়েছে, সেই তথ্যও নেওয়া হবে।”

বাঁকুড়ায় বড় আকারের কোনও পুলকার দুর্ঘটনা এখনও ঘটেনি। বছর খানেক আগে বিকনা এলাকার স্কুল থেকে পড়ুয়াদের নিয়ে ফেরার সময় একটি পুলকার নয়ানজুলিতে পড়ে গেলে জখম হয় বেশ কয়েকজন পড়ুয়া। তাদের বাঁকুড়া মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়েছিল। বাঁকুড়া ২ ব্লকে একটি পুলকারের সঙ্গে একটি গাড়ির ধাক্কায় জখম হয়েছিল কয়েক জন পড়ুয়া।

অন্য বিষয়গুলি:

Bankura Pull Car
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy