প্রত্যাবর্তন: কোমা পঞ্চায়েতের চার সদস্যের হাতে তৃণমূলের পতাকা তুলে দিলেন বিকাশ রায়চৌধুরী। শুক্রবার সিউড়িতে। নিজস্ব চিত্র
মাত্র পাঁচ দিনেই গেরুয়া ফের বদলে গেল সবুজে।
সোমবার সিউড়ি ২ ব্লকের কোমা পঞ্চায়েতের ৭ তৃণমূল সদস্যের মধ্যে পাঁচ জন যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে। পাঁচ দিনের মাথায়, শুক্রবার তাঁদের চার জন ফের ফিরলেন ঘাসফুল শিবিরেই। তাতে কোমা পঞ্চায়েত থেকে গেল তৃণমূলের হাতেই।
সিউড়ির এক হোটেলে কোমা পঞ্চায়েতের প্রধান ঝর্না বাগদি, উপপ্রধান সুমিত্রা টুডু, সদস্য দুঃখহরণ বাগদি, চন্দনা বাগদি, মুস্তফা কামালের হাতে দলীয় পতাকা হাতে তুলে দিয়েছিলেন বিজেপি জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল।
শুক্রবার দুপুরে ‘উলটপুরান’। সিউড়ি জেলা তৃণমূলে কার্যালয়ে জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী, সিউড়ি ২ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি নুরুল ইসলামের উপস্থিতিতে মুস্তফা কামাল বাদে বাকিরা ফের তৃণমূলের পতাকা হাতে তুলে নিলেন। দাবি করলেন— ভয় দেখিয়ে তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বিজেপিতে। কিন্তু মন পড়েছিল তৃণমূলেই। তাই তাঁরা ফের ‘ঘরে’ ফিরলেন।
তবে বিজেপির দাবি, সোমবার বিজেপিতে যোগ দেওয়ার সময়ে তাঁদের বক্তব্য ছিল— ‘চাপের কাছে বা ভয় পেয়ে নয়, নরেন্দ্র মোদীর আদর্শে উজ্জীবীত হয়েই বিজেপিতে যোগদান করেছি।’ কোমা পঞ্চায়েতের প্রধান ঝর্নাদেবী সে দিন বলেছিলেন, ‘‘পঞ্চায়েতের প্রধান হওয়ার সত্ত্বেও মানুষের জন্য কাজ করতে পারছিলাম না। তাই বিজেপিতে যোগ দিলাম।’’
রাতারাতি কী এমন ঘটল?
জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী বলছেন, ‘‘ওই পঞ্চায়েতে ক্ষমতায় আসার জন্য মানুষের আশীর্বাদ ছিল আমাদের উপরেই। বিজেপির কিছু দুষ্কৃতী ভয় দেখিয়ে, এলাকায় তাণ্ডব চালিয়ে ওঁদের হাতে বিজেপির পতাকা
ধরিয়ে দিয়েছিলেন। সদস্যরা আমাদের সে কথা জানিয়েছিলেন। আমরা ঘটনার প্রতিবাদ করি, মিছিল করি। আজ প্রমাণ হল ওঁরা দলে ছিলেন, আছেন, থাকবেন।’’
ওই অভিযোগ উড়িয়ে বিজেপির জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল বলছেন, ‘‘বিজেপি কাউকে ভয় দেখিয়ে দলে নেয় না। মাসখানেক আগে কোমা পঞ্চায়েতের প্রধানের নেতৃত্বে উপপ্রধান-সহ চার জন সদস্য বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জন্যে আমাদের দলের স্থানীয় নেতাদের সাথে যোগাযোগ শুরু করেছিলেন। ৪ জুলাই ওই পঞ্চায়েতের প্রধান সহ পাঁচ জন দলবদলের জন্য আমার কাছে আবেদন জানান। ওঁদের সঙ্গে আলোচনা করি, জানতে চাই তাঁরা স্বেচ্ছায় আসতে চাইছেন কিনা। সম্মতি দেওয়ার পরেই তাঁদের দলে নেওয়া হয়েছিল।’’
তবে স্থানীয় সূত্রে খবর, কোমা অঞ্চলে শাসকদলের প্রভাব অনেক কমেছে। কাটমানি বিতর্ক সহ একাধিক কর্মসূচি ওই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় নিয়েছে বিজেপি। সমানে শাসকদলের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে তারা।
এ বিষয়ে শ্যামাপদবাবু বলেন, ‘‘বোমা-বন্দুকের সংস্কৃতি আমাদের নয়। এলাকা থেকে খবর পেয়েছি, আমাদের দলে আসার পর থেকে প্রধান ও অন্য সদস্য ও তাঁদের পরিবারের উপর চাপ তৈরি করেছিল শাসকদল। সঙ্গী ছিল পুলিশও। ওঁরা সাধারণ পরিবারের মানুষ। সেই চাপ সহ্য করতে পারেননি। ওঁদের দোষ দিচ্ছি না। দলের কর্মীদের বলব, ওঁদের যেন কেউ কিছু না বলেন। বরং কর্মীদের প্রতি আমার পরামর্শ, পঞ্চায়েতে নানা দুর্নীতি খুঁজে আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy