Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Cyber Fraud Case

‘পুলিশের’ ভয়ে এ বার ১২ কোটি টাকা খোয়ালেন বেঙ্গালুরুর ‘টেকি’! শেষ বার ভিডিয়ো কলে ‘থানা’

১১ নভেম্বর প্রথম ফোন আসে বেঙ্গালুরুর ওই সফ্‌টওয়্যার ইঞ্জিনিয়রের কাছে। ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে দফায় দফায় তাঁর থেকে ১১ কোটি ৮০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।

সাইবার প্রতারণার ফাঁদে বেঙ্গালুরুর সফ্‌টওয়্যার ইঞ্জিনিয়র।

সাইবার প্রতারণার ফাঁদে বেঙ্গালুরুর সফ্‌টওয়্যার ইঞ্জিনিয়র। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৬:৩০
Share: Save:

‘ডিজিটাল গ্রেফতার’ হওয়ার ভয়ে সাইবার প্রতারণার খপ্পরে পড়ে প্রায় ১২ কোটি টাকা খোয়ালেন বেঙ্গালুরুর এক সফ্‌টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। প্রতারকেরা তাঁর সঙ্গে তিন বার যোগাযোগ করেছিলেন বলে অভিযোগ। তিন বার ফোন, তার পরে ভিডিয়ো কল। তিন বার তিনটি আলাদা নম্বর থেকে ফোন করা হয়েছিল। প্রথম বার ফোন এসেছিল টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার আধিকারিকের পরিচয়ে। দ্বিতীয় বার ফোন আসে পুলিশ আধিকারিকের পরিচয়ে। তৃতীয় বারে পুলিশের মতো উর্দি গায়ে চাপিয়ে বেঙ্গালুরুর ওই ইঞ্জিনিয়ারকে ভিডিয়ো কল করেন প্রতারকেরা। দফায় দফায় তাঁর থেকে ১১ কোটি ৮০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।

বেঙ্গালুরুর ওই ইঞ্জিনিয়ারের কাছে প্রথম ফোন আসে গত ১১ নভেম্বর। টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার আধিকারিক পরিচয় দিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেন এক প্রতারক। তাঁকে বলা হয়, ইঞ্জিনিয়ারের নামে তোলা একটি সিম বেআইনি বিজ্ঞাপন এবং সাধারণ মানুষকে হেনস্থা করতে ব্যবহার করা হচ্ছে। তাঁর আধার নম্বর ব্যবহার করে সিমটি তোলা হয়েছিল। সিমটি ব্লক করার কাজ শুরু হয়েছে এবং মুম্বইয়ের কোলাবায় সাইবার থানায় নাকি এ বিষয়ে মামলাও রুজু হয়েছে।

কয়েক দিন পর আরও একটি ফোন আসে বেঙ্গালুরুর ওই ইঞ্জিনিয়ারের কাছে। এটি অন্য নম্বর থেকে। এ বার প্রতারক নিজের পরিচয় দেন পুলিশ আধিকারিক বলে। ইঞ্জিনিয়ারকে বলা হয়, একটি আর্থিক প্রতারণার মামলায় তাঁর যোগ পাওয়া গিয়েছে। তাঁর আধার নম্বর ব্যবহার করে একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। তা ব্যবহার হয়েছে আর্থিক প্রতারণার কাজে। এই বিষয়টি পাঁচ কান না করার কথাও বলা হয় ওই ইঞ্জিনিয়ারকে। পুলিশ আধিকারিকের ভুয়ো পরিচয়ধারী ওই প্রতারক তাঁকে বলেন, মামলায় ইতিমধ্যে বেশ কয়েক জন গ্রেফতার হয়েছেন এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বদের নামও মামলায় জড়িয়ে রয়েছে। ‘ভার্চুয়াল তদন্তে’ সহযোগিতা না করলে তাঁকে গ্রেফতার করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।

এই ঘটনার কয়েক দিন পরে ওই ইঞ্জিনিয়ারের কাছে আরও একটি ফোন আসে। এ বারও আলাদা একটি নম্বর। এ বারও প্রতারকেরা পুলিশ আধিকারিক বলে নিজেদের পরিচয় দেন এবং ইঞ্জিনিয়ারকে মোবাইলে স্কাইপি ডাউনলোড করতে বলেন। এর পর পুলিশের মতো উর্দি পরে ভিডিয়ো কল করা হয় প্রতারককে। পরিচয় দেওয়া হয় মুম্বই পুলিশের আধিকারিক বলে। বলা হয়, তাঁর আধার ব্যবহার করে খোলা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে নাকি ছয় কোটি টাকার লেনদেন ধরা পড়েছে। এ বিষয়ে তথ্য যাচাইয়ের নামে ইঞ্জিনিয়ারকে প্রতারকদের দেওয়া ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রথমে ৭৫ লাখ টাকা পাঠাতে বলা হয়। পরে আরও ৩ কোটি ৪১ লাখ টাকা পাঠাতে বলা হয়। এ ভাবে দফায় দফায় ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১১ কোটি ৮০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন প্রতারকেরা।

প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরে বেঙ্গালুরুর একটি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই ইঞ্জিনিয়ার। অভিযোগের প্রেক্ষিতে তথ্যপ্রযুক্তি আইন এবং ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৩১৮ ধারায় প্রতারণা এবং ৩১৯ ধারায় ভুয়ো পরিচয়ে প্রতারণার ধারা যুক্ত করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

অন্য বিষয়গুলি:

Cyber fraud Bengaluru Cyber Crime
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy