গাছের তলায় চলছে পঠনপাঠন কাশীপুরের মনঝুপড়ায়। ছবি: সঙ্গীত নাগ।
মাথার ওপর ক্লাসরুমের ছাদ নেই, বদলে আছে আকাশ। চার দেওয়ালের বদলে রয়েছে গাছগাছালি। গাছতলায় বই-খাতা খুলে চলছে পঠন-পাঠন। প্রকৃতির মাঝে এই পাঠ কিন্তু কোনও অভিনব উদ্যোগ নয়, স্কুল ভবনের বেহাল দশায় পড়ুয়াদের নিয়ে গাছতলায় ক্লাস করাতে বাধ্য হচ্ছেন শিক্ষক। এই ছবি পুরুলিয়ার কাশীপুর ব্লকের কালিদহ পঞ্চায়েতের মনঝুপড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। এ দিকে বর্ষাকালে কী ভাবে গাছতলায় স্কুল চলবে? তা নিয়ে চিন্তিত স্কুল কর্তৃপক্ষ।
গ্রামবাসীর দাবি, বারবার প্রশাসনকে জানানো হলেও এখনও পর্যন্ত নতুন স্কুল ভবন নির্মাণে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। যদিও ব্লক প্রশাসনের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, মনঝুপড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন অতিরিক্ত শ্রেণিকক্ষ নির্মাণের প্রস্তাব সমগ্র শিক্ষা মিশনে পাঠানো হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ হলেই শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ শুরু হবে।”
গ্রামবাসীদের দান করা জমিতে ১৯৩৩ সালে মাটির কাঁচা বাড়ি তৈরি করে শুরু হয়েছিল মনঝুপড়া গ্রামের এই স্কুল। পরে বাম আমলে পাকা স্কুল ভবন তৈরি হয়। কিন্তু স্থানীয়দের কথায়, ২০১৯ সাল থেকে ক্রমশই স্কুলের অবস্থা বেহাল হতে শুরু করে। করোনার সময়ে দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় অবস্থা আরও খারাপ হয়। এরপরে ২০২২ সালে স্কুলের ছাদ থেকে চাঙড় খসে পড়ার ঘটনা ঘটলে আর ঝুঁকি নিতে চায়নি স্কুল কর্তৃপক্ষ।
শিক্ষা দফতরের কালিদহ চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক তুফান বাগদি বলেন, “২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে ব্লক প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে গ্রামের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে স্কুলটি স্থানান্তরিত করা হয়। তা ছাড়াও সমস্যার কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।” এ দিকে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ভবনে ৫৩ জন পড়ুয়ার জন্য পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় বাইরে গাছের তলায় স্কুল চালাতে হচ্ছে বলে জানান প্রধান শিক্ষক অবনীন্দ্রনাথ মাজি। তিনি বলেন, “গরম কালে সকালে স্কুল হয়। আর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রও চলে সকালেই। তাই আমাদের বাইরে বসতে হয়।”
প্রধান শিক্ষক আরও জানান, স্কুল ভবন বেহাল হয়ে পড়লেও সেখানেই এক পাশে মিড-ডে মিলের রান্না হয়। পড়ুয়ারা সেখানেই খেতে যায়। কিন্তু এ ভাবে আর কতদিন চলবে? বর্ষাকালে খোলা জায়গায় স্কুল চালানো অসম্ভব বলেই দাবি প্রধান শিক্ষক থেকে শুরু করে অভিভাবকদের। দ্রুত অতিরিক্ত শ্রেণিকক্ষ তৈরির জন্য সংশ্লিষ্ট সমস্ত মহলের কাছে আবেদন
জানিয়েছেন সকলে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy