নিহত শেখ ফাইজুল (ইনসেটে), রবিবার সকালে বাঁশজোড় গ্রামে পুলিশের বাহিনী। নিজস্ব চিত্র
কোনও অশান্তিতে তিনি থাকতেন না। বালি খাদানের সঙ্গেও তাঁর সরাসরি যোগাযোগ ছিল না বলে গ্রামবাসীর দাবি। তার পরেও কেন এমন নৃশংস ভাবে খুন করা হল শেখ ফাইজুলকে, সেই প্রশ্নই তুলতে শুরু করেছেন সিউড়ি থানার বাঁশজোড় গ্রামের বাসিন্দারা। অনেকের দাবি, ফাইজুলের বাবা নিজে বালিঘাটের কারবারের সঙ্গে যুক্ত। হয়তো সেই নিয়ে এলাকার দাপুটে তৃণমূল নেতা ও বালি কারবারি কাজল শাহের গোষ্ঠীর সঙ্গে বিবাদেরই বলি হতে হয়েছে ওই নিরীহ তরুণকে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাজল শাহ দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকায় একাধিক বালিঘাট নিয়ন্ত্রণ করে আসছেন। আগে গ্রামের বেশ কিছু যুবক কাজলের নেতৃত্বে ওই কাজ করত। সেই সময় ফাইজুলের বাবা শেখ হাফিজুলও কাজলের দলে ছিলেন। এমনকি কাজলের দাদার নামে থাকা একটি বালিঘাটে ভাগও ছিল হাফিজুলের। বছর খানেক আগে হাফিজুলকে ওই মালিকানা থেকে বের করে দেন কাজল ও তাঁর সাঙ্গপাঙ্গরা। সূত্রের খবর, হাফিজুল চলে যান শেখ আতাই নামে কাজলের ‘প্রতিপক্ষ’ বালি কারবারির দলে। সেই থেকে বিবাদের সূত্রপাত।
এলাকার বেশ কয়েক জনের অভিযোগ, নতুন একটি বালিঘাট নেওয়ার নাম করে এলাকার শতাধিক মানুষের কাছে থেকে টাকা নিয়েছিলেন কাজল শাহ। কাজল পরে টাকার ভাগ দেবেন বলে জানালেও তা দেননি। এই নিয়েও আতাই শেখের গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘাত বাধে কাজল গোষ্ঠীর।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কিছু এলাকাবাসী জানান, গত কয়েক বছর ধরেই এই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘাত চলছে। মূলত ওই এলাকায় থাকা বালিঘাটগুলি কোন পক্ষের দখলে থাকবে, সেই নিয়েই এই বিবাদ। তার জেরে বহুবার দুই গোষ্ঠীর মারামারি, এলাকায় বোমাবাজি হয়েছে। বছর খানেক আগেও হাফিজুলের বাড়িতে বোমাবাজির অভিযোগ ওঠে কাজল ও তাঁর দলবলের বিরুদ্ধে। নিহত ফাইজুলের পরিবারেরও দাবি, তাঁদের উপরে ‘আক্রোশ’ আগে থেকেই ছিল। যার পরিণামে খুন হতে হল ফাইজুলকে।
তবে, ফাইজুল নিজে বালি কারবারের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না বলেই এলাকা সূত্রে খবর। তিনি সিউড়ির নেতাজি মার্কেটে দিনমজুরের কাজ করতেন। সেই জন্য সাত সকালে কাজে বেরিয়ে যেতেন। সাতেপাঁচে না-থাকা ওই তরুণের খুনের জেরে এই জন্যই ক্ষোভ ছড়িয়েছে বাঁশজোড়ে। একাধিক গ্রামবাসীর বললেন, ‘‘সকাল থেকে (ফাইজুল) কাজে চলে যেত। নিজের কাজ নিয়ে থাকত। তা হলে ওকে কেন খুন করা হল? বাঁশঝোড় এলাকায় অনেক অশান্তি হয়েছে। কিন্তু, এটা মেনে নিতে পারছি না। দোষীদের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy