মেলার সাতদিন মিলত গৃহস্থালীর নানা দ্রব্য। থাকত নাগরদোলা-সহ হরেক মনোরঞ্জনের আয়োজন। জিনিস কিনতে ও মেলা ঘুরতে ভিড় জমাতেন আশপাশের বিভিন্ন গ্রামের মানুষ। গরুরগাড়ি, সাইকেলের লম্বা লাইন লেগে থাকত। বহুকাল আগে বক্রেশ্বর ধামে শিব চতুর্দশীকে ঘিরে যে মেলা বসত তার ছবিটা ছিল এমনই। নগারায়নের ধর্ম মেনেই এখন সেই গ্রামীণ মেলার চরিত্রটা বদলে গিয়েছে অনেকটাই। বদলে গিয়েছে চালচিত্র। তবু মেলা ঘিরে উন্মাদনায় ভাটা পড়েনি আজও।
মেলার দিন সংখ্যাও কমেছে। তবে প্রথা মেনে প্রতি বছর এখনও শিব মন্দির সংলগ্ন এলাকায় বসে মেলা। উদ্যোক্তা সেবাইত সমিতি। মেলার আকর্ষণ কিছুটা ফিকে হলেও শিব চতুর্দশীর দিন শিবমন্দিরে পুজো দিতে ভিড় জমান এলাকা ও বাইরের মানুষ। লাইট দিয়ে সাজানো হয় বক্রেশ্বর শিব মন্দিরটিকে। মন্দিরের সেবাইত সমিতির তথ্য অনুযায়ী, চতুর্দশীর আগের রাত থেকেই লাইন পড়ে। পুজো চলে পরের দিন রাত গড়িয়ে। এ বারও যেহেতু সোমবার সকাল সাড়ে এগারোটার পর চতুর্দশী শুরু হয়েছে, আগের রাত নয় লাইন পড়েছিল এ দিন সকাল থেকেই।
সোমবার সাড়ে এগারোটা নাগাদ বক্রেশ্বর গিয়ে সেটাই নজরে এল। প্রায় আধ কিমি লম্বা লাইন পড়েছে। হাতে পুজোর পসরা, ঘটিতে দুধ— কে নেই সেই লাইনে! বক্রেশ্বরের বছর পাঁচেকের জয়শ্রী, রাজনগরের স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ইন্দ্রাণী বা পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে আসা পৌঢ়া স্বপ্না সাহা। সব বয়সের মানুষ মেলায় এসেছেন এ দিন। কোনও সমস্যা যাতে না হয় তা সামলাতে ছিল পর্যাপ্ত পুলিশি ব্যবস্থা।
এ বার মেলা কেমন?
স্থানীয় ব্যবসায়ী, মানুষজন ও সেবাইত সমিতির সদস্যরা বলছেন, বিগত কয়েক বছরের তুলনায় স্টল কিছুটা বেশিই এসেছে। ধাম, সতীপীঠ এবং বক্রেশ্বর উষ্ণপ্রস্রবণ ঘিরে গড়ে উঠেছে রাজ্যের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র। পর্যটকদের উপস্থিতির কারণেই রাস্তার দু’ধারে স্থায়ী স্টলের জায়গা ফলে ক্রমশ ছোট হয়েছে জায়গা। এ বার মেলায় আসা অস্থায়ী স্টলগুলিকে বসান হয়েছে বক্রেশ্বর ঢুকতেই বা দিকের ফাঁকা জায়গায়। মেলা শুরু হয়েছে। সকালে ভিড় জমান কাছাকাছি এলাকার মানুষ। বিকালের পর অন্য জেলা থেকে বহু ট্যুরিষ্ট বাস আসতে শুরু করে শিব মন্দিরে পুজো দেওয়ার জন্য। সারা রাত চলে পুজো।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy