ফাইল চিত্র।
পরিসর আরও বাড়ল। বিধায়ক, মন্ত্রী, যুবনেতাদের পরে এ বার ব্লক ও শহর সভাপতিদের যুক্ত করা হল ‘দিদিকে বলো’র জনসংযোগে। মঙ্গলবার বিকেলে কলকাতায় তৃণমূল ভবনে এক অনুষ্ঠানে এমনই বার্তা দেওয়া হয়েছে।
দলের তরফে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, আগে যে ভাবে এলাকার বিধায়ক ও মন্ত্রীরা জনসংযোগ কর্মসূচিতে মানুষের সমস্যা, অভাব, অভিযোগ শুনেছেন এবং যথাসম্ভব সেগুলি মেটানোর ব্যবস্থা করেছেন। এ বার থেকে ধাপে ধাপে ব্লক ও শহরে সেই কাজই করবেন ব্লক ও শহর সভাপতিরা।
বার্তা পৌঁছেছে বীরভূমেও। এমন নির্দেশ ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন জেলার একাধিক ব্লক ও শহর সভাপতিরা। তবে সামনে পুরভোট থাকায় জনসংযোগ বাড়ানোর ক্ষেত্রে ব্লকের তুলনায় শহরগুলি বেশি গুরুত্ব পাবে বলে মনে করছেন নেতারা। দুবরাজপুরের শহর সভাপতি পীযূষ পাণ্ডে যেমন বলছেন, ‘‘দলের তরফে আমাকে বলা হয়েছে ১ এবং ১০ নম্বর ওয়ার্ডে দিদিকে বলো কর্মসূচিতে এলাকার মানুষের সমস্যার কথা শুনতে। কোথায়, কার সঙ্গে দেখা করতে হবে সেটাও বলে দেওয়া আছে।’’ একই কথা জানিয়েছেন সাঁইথিয়া পুর শহরের সভাপতি পিনাকীলাল দত্ত। তিনি বলেন, ‘‘আমার জন্য নির্ধারিত হয়েছে ৯ এবং ১১ নম্বর ওয়ার্ড।’’ সিউড়ির নব নির্বাচিত শহর সভাপতি পারিবারিক কাজে ব্যস্ত থাকায় কলকাতায় যাননি। তবে তিন জনেই জানান, এতে নিবিড় ভাবে মানুষের কথা শোনা যাবে।
দলের তরফে জানা গিয়েছে, ‘দিদিকে বলো’ শীর্ষক কর্মসূচিতে শুধু ফোন নম্বর বা ওয়েবসাইট তৈরি করে সরাসরি অভিযোগ নেওয়া নয়। কী ভাবে জনসংযোগ রাখতে হবে, কর্পোরেট ধাঁচে তার নানা ধাপ সাজিয়ে দিয়েছেন ভোটকুশলী
প্রশান্ত কিশোরের টিম। জনসংযোগ কর্মসূচির অন্যতম অঙ্গ ছিল বিধায়কদের গ্রাম সফর। তার পরের ধাপে রাজ্যের ১০০ যুবনেতাকে এই কর্মসূচিতে যুক্ত করা হয়েছিল। এক জন বিধায়ক বা যুব নেতা এলাকার গিয়ে ঠিক কী কী করবেন, সে ছকও সাজিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
বিধায়ক ও পরে যুবনেতাদের প্রতি নির্দেশ ছিল, ইচ্ছেমতো নয়। দলের তরফে চিহ্নিত করে দেওয়া গ্রামে যেতে হবে। সেখানে গিয়ে গ্রামের তিন-চার জন প্রভাবশালীর সঙ্গে কথা বলবেন বিধায়ক। এর পরে গ্রামের সাধারণ মানুষের উপস্থিতিতে ঘণ্টা তিনেকের সভা করতে হবে। সাধারণ মানুষের অভাব, অভিযোগ শুনবেন। সেখানেই বিলি করতে হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কার্ড, স্টিকার, টি-শার্ট সহ নানা সরঞ্জাম। দলের এক কর্মীর বাড়িতে খাওয়া-দাওয়া করে রাত কাটাতেও বলা হয়।
সেই একই ধাঁচে পুর শহরের ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে এবং প্রতিটি ব্লকের গ্রামে গ্রামে জনসংযোগ কর্মসূচিতে যোগ দেবেন ব্লক ও শহর সভাপতিরা। মানুষের সমস্যার সমাধান না করতে পারলে সঙ্গে সঙ্গে সে কথা উঁচু তলায় জানাতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানাচ্ছেন এ দিন কলকাতায় অনুষ্ঠানের হাজির জেলার নেতারা। ঠিক হয়েছে, প্রত্যেক ব্লক সভাপতি ও শহর সভাপতিরা অন্তত দুটি গ্রাম বা ওয়ার্ডে এই কর্মসূচি শেষ করবেন কালীপুজোর আগেই। তবে গ্রামে ততটা নয়, পুরভোটের আগে এই জনসংযোগে লাভ হবে পুরসভাগুলিতে— এমনই মনে করছেন নেতারা। জেলার বেশ কয়েক জন ব্লক সভাপতি বলছেন, ‘‘এ ছাড়া বিধায়ক মন্ত্রী ও যুব নেতারা ইতিমধ্যেই প্রতিটি ব্লকের বেশ কিছু গ্রামে ঘুরেছেন।’’
সব কিছু ঠিক থাকলে সামনের বছরের গোড়াতে পুরভোট। বীরভূমের মোট ৬টি পুরসভার মধ্যে একমাত্র নলহাটিতে এখন নির্বাচন নেই। ভোট হবে সিউড়ি, সাঁইথিয়া, বোলপুর, রামপুরহাট ও দুবরাজপুরে। নেতৃত্বের নির্দেশ, প্রতিটি পুর এলাকার প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে ১০ জনের একটি করে ওয়ার্ড নির্বাচন কমিটি গড়তে হবে। প্রতিটি কমিটিতে সাত জন সক্রিয় পুরুষ ও তিন জন করে মহিলা কর্মী থাকবেন। কাকে কাকে কমিটিতে রাখা হবে, দ্রুত তার তালিকা তৈরি করে পাঠাতে বলা হয়েছিল। প্রতিটি পুরসভার দায়িত্বে দেওয়া হয়েছে এক জন করে অবজার্ভারকে।
‘দিদিকে বলো’র পরিসর বাড়ছে শুনে বিরোধী সিপিএম-বিজেপির কটাক্ষ, ‘‘যে ভাবে মানুষ তৃণমূলের থেকে সরে এসেছেন, তাতে দিদিকে বলে আর বিশেষ লাভ নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy