গঙ্গানারায়ণের মূর্তি। নিজস্ব চিত্র
ভূমিজ বিদ্রোহের নেতা গঙ্গানারায়ণ সিং-এর কথা স্কুলের ইতিহাসের পাঠ্যবইয়ে নিয়ে আসা হবে বলে আশ্বাস দিলেন রাজ্যের স্কুল শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
মঙ্গলবার বিকেলে বরাবাজারে গঙ্গানারায়ণ স্টেডিয়ামের পাশে গঙ্গানারায়ণ সিং-এর আবক্ষ মূর্তি উন্মোচন করেন মন্ত্রী। সেখানে তিনি বলেন, “গঙ্গানারায়ণ সিং-এর ইতিহাস পাঠ্যপুস্তকে নিয়ে আসা হবে।’’ তাঁর আশ্বাস, ভূমিজ এবং অন্যান্য সম্প্রদায়ের বীরপুরুষদের কথা রাজ্য সরকার আরও প্রচারে আনতে চায়। সে জন্য তাঁরা বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষজনের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছেন। তাঁদের কাছ থেকে শিক্ষামন্ত্রী এ ব্যাপারে দাবিপত্র চেয়েছেন।
আঠারোশো শতকের ব্রিটিশ সরকার বিরোধী ভূমিজ বিদ্রোহের নেতা ছিলেন সে সময়ের বরাভূমের জমিদার গঙ্গানারায়ণ। তাঁর বিদ্রোহকে ইংরেজরা ‘গঙ্গানারায়ণী হাঙ্গামা’ নাম দিয়েছিলেন। তাঁর লড়াইয়ে এখান থেকে পিছু হটেছিল ইংরেজ বাহিনী। এ দিন অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের উদ্যোগে বরাবাজারের স্টেডিয়ামের পাশে গঙ্গানারায়ণের মূর্তির আবরন উন্মোচন করা হয়।
এ দিন মন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ মন্ত্রী সন্ধ্যারানী টুডু, সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়, জেলা পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, বান্দোয়ানের বিধায়ক রাজীবলোচন সরেন, জেলা পরিষদের কো-মেন্টর জয় বন্দ্যোপাধ্যায়, জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ সৌমেন বেলথরিয়া প্রমুখ।
আদিবাসী ভূমিজ সমাজের একটি অনুষ্ঠানে শহিদের মূর্তিতে পুষ্পার্ঘ্য করেন মন্ত্রী। পরে সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যে যখন ভূমি রক্ষার আন্দোলন শুরু হয়, সে সময় বাংলার প্রথম যে বিশিষ্ট মানুষ যুক্ত হয়েছিলেন, তিনি মহাশ্বেতা দেবী। তাঁর লেখায় গঙ্গানারায়ণ সিং-এর উল্লেখ পেয়েছি।’’ তিনি জানান, আদিবাসীরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে প্রথম থেকেই গুরুত্ব পান। কোনও বহিরাগতেরা নয়। তিনি বলেন, ‘‘যাঁরা তাঁদের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছেন, তাঁরা আদিবাসীদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করছেন, গঙ্গানারায়ণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করছেন।’’
বরাবাজারে যাওয়ার আগে পুরুলিয়ার সিধো-কানহো-বীরসা বিশ্ববিদ্যালয়ে যান মন্ত্রী। প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ, ছাত্রাবাস ও সংগ্রহশালা পরিদর্শন করেন তিনি। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশংসা করে তিনি এর কৃতিত্ব মুখ্যমন্ত্রী ও উপাচার্যদের দেন। উপাচার্য দীপককুমার কর বলেন, ‘‘শূন্য থেকে আজ বিশ্ববিদ্যালয় কোন জায়গায় পৌঁছেছে, তা উনি (শিক্ষামন্ত্রী) এখানে এসে ক্যাম্পাস ঘুরে দেখে, পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলে উপলব্ধি করেছেন। উনি আমাদের অভিভাবক। তাঁর পরামর্শ মতো আগামী দিনে জেলার, সর্বোপরি এই এলাকার শিক্ষার মানোন্নয়নে এই বিশ্ববিদ্যালয় কাজ করবে।’’
শিক্ষামন্ত্রী এখানে এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‘গ্রাম-মফস্সলের স্কুলগুলিতে ছাত্রছাত্রীদের সত্যিকারের চাহিদা রয়েছে। অভিভাবকদের চাহিদা রয়েছে। আমরা সেই স্কুলগুলির প্রতি ঝোঁক দিচ্ছি বেশি। কী করে সেই স্কুলগুলিকে পুনরুজ্জীবিত করা যায়, দেখছি।’’ তিনি জানান, বিশ্বায়নের প্রভাবে এখন অনেকেই সরকারি স্কুলের বদলে বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে সন্তানদের পড়াচ্ছেন। সে কারণে বিভিন্ন জেলায় স্কুলগুলির অবস্থা জানতে রাজ্য শিক্ষা দফতর সমীক্ষা চালাচ্ছে। মন্ত্রী বলেন, ‘‘কয়েকটা জেলার হয়েছে। বাকি জেলাগুলির সমীক্ষা শেষ হলে তারপর আমরা দেখব সেই স্কুলগুলি নিয়ে কী করা যায়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy