তাঁর একটি রাজনৈতিক পরিচয় আছে বটে। তিনি বিজেপি সমর্থক পরিবারের বধূ। এত দিন তাঁকে ঘিরে অনেক রাজনীতি হয়েছে। বিজেপি-র নানা কর্মসূচিতে তাঁকে দেখাও গিয়েছে। কিন্তু, নিজে কখনও সক্রিয় রাজনীতিতে নামেননি। এ বার সক্রিয় রাজনীতিতে পা দেওয়ার পুরো ইঙ্গিত দিয়ে সরাসরি ভোট-প্রচারেই নেমে পড়লেন সাত্তোরের নির্যাতিতা।
এবং নামলেন নিজেকে মুরারই কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী হিসাবে দাবি করে! যদিও ঘটনা হল, এখনও ওই মহিলার নাম প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করেনি বিজেপি। দলের এক রাজ্য নেতার বক্তব্য, ‘‘ওঁর নাম আলোচনায় আছে ঠিকই। কিন্তু, এখনও কিছু চূড়ান্ত হয়নি।’’ আজ, শুক্রবার বিজেপি-র চতুর্থ দফার প্রার্থী তালিকা বেরোতে পারে। সেখানে সাত্তোরের নির্যাতিতার নাম থাকতে পারে বলেও দল সূত্রের খবর। তার আগেই, বৃহস্পতিবার প্রথমে বিজেপি পতাকা নিয়ে মুরারই থানার ভবন লাগোয়া এলাকা থেকে প্রচার শুরু করেন সাত্তোরের নির্যাতিতা। সঙ্গে ছিলেন পাড়ুইয়ের বিজেপি নেতা শেখ সামাদ, দলের পাড়ুই অঞ্চল কমিটির সভাপতি এবং বিজেপি র জেলা সহ সভাপতি সুধীররঞ্জন দাস গোস্বামী।
দল নাম ঘোষণা না করা সত্ত্বেও কেন প্রচারে?
সাত্তোরের নির্যাতিতার জবাব, ‘‘আমি জানি আমার নাম ঘোষণা হয়েছে। এমনকী, রাজ্য নেতৃত্ব আমার কাছে জানতে চেয়েছেন, কেন আমি এখনও প্রচার শুরু করিনি। এত দিন অপেক্ষা করে তাঁদের নির্দেশ মতো আমি প্রচার শুরু করেছি।’’
২০১৫ সালের ১৭ জানুয়ারি বোমাবাজিতে অভিযুক্ত পাড়ুই থানার সাত্তোরের এক বিজেপি সমর্থককে খুঁজতে বর্ধমানের বুদবুদ থানার কলমডাঙা গ্রামে তাঁর কাকিমার বাপের বাড়িতে হানা দেয় বীরভূম জেলা পুলিশের বিশেষ দল। ওই কর্মীকে না পেয়ে কাকিমাকে পাশের জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে পুলিশ ও তৃণমূলের কিছু নেতা-কর্মী অকথ্য অত্যাচার চালায় বলে অভিযোগ। পরে ওই বধূকে ইলামাবাজার থানার সামনে ফেলে দিয়ে যায় পুলিশ বলেও অভিযোগ। হইচই ফেলে দেওয়া ওই ঘটনায় রাজ্য সরকার সিআইডি-কে তদন্তভার দেয়। সিআইডি-র চার্জশিটে অভিযুক্ত হিসাবে স্পেশ্যাল অপারেশন গ্রুপের (এসওজি) ওসি কার্তিকমোহন ঘোষ-সহ একাধিক পুলিশকর্মীর নাম রয়েছে। সিউড়ি সিজেএম আদালতে মামলাও চলছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশের বিভাগীয় তদন্তও চলছে।
ওই ঘটনার পর থেকেই পুলিশের বিরুদ্ধে বারবার সরব হয়েছেন সাত্তোরের নির্যাতিতা। প্রতিহিংসা বশত বোমা মজুতের মিথ্যা মামলায় তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে জেল খাটানোর অভিযোগও পুলিশের বিরুদ্ধে উঠেছে। পুলিশ অত্যাচার চালিয়েছে বলেই কি এ দিন থানা ভবন লাগোয়া থেকে প্রচার শুরু করলেন? নির্যাতিতা বললেন, ‘‘বিজেপি পরিবারের বধূ বলেই পুলিশ ও শাসকদলের নেতা-কর্মীরা আমাকে নির্যাতন করেছে। তাই এ দিন প্রথমে মুরারই থানার পুলিশ অফিসারের সঙ্গে দেখা করে নিরাপত্তা চেয়ে থানা লাগোয়া এলাকা থেকে প্রচার শুরু করেছি।’’
তাঁর সংযোজন, ‘‘আমি একটা লড়াই চালাচ্ছি। লড়াইটা যাতে আরও চালাতে পারি, প্রচারে বেরিয়ে সেটাই মানুষের কাছে আবেদন জানাচ্ছি।’’ এ দিন নির্যাতিতাকে নিয়ে প্রথমে মুরারই বাজার এলাকায় প্রচার চালান বিজেপি নেতৃত্ব। বিকেলে মুরারই থানার পাইকর গ্রামে প্রচার করেন। আজ থেকে নির্যাতিতার নামে দেওয়াল লিখন শুরু হবে বলেও জানান বিজেপি-র স্থানীয় কর্মীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy