Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪

দম্পতির অর্থে বিশ্রামাগার

ছেলেমেয়েরা চেয়েছিলেন তাঁদের বাবা-মায়ের ৫০তম বিবাহবার্ষিকী বেশ ধুমধাম করে করবেন। অনে ক পরিবারে যেমনটা হয়। কিন্তু বান্দোয়ানের ওই ব্যবসায়ী দম্পতি চেয়েছিলেন, উৎসবে টাকা খরচ না করে, ওই টাকা সাধারণ মানুষের কাজে লাগানো হোক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বান্দোয়ান শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০১৭ ০১:৩৩
Share: Save:

ছেলেমেয়েরা চেয়েছিলেন তাঁদের বাবা-মায়ের ৫০তম বিবাহবার্ষিকী বেশ ধুমধাম করে করবেন। অনে ক পরিবারে যেমনটা হয়। কিন্তু বান্দোয়ানের ওই ব্যবসায়ী দম্পতি চেয়েছিলেন, উৎসবে টাকা খরচ না করে, ওই টাকা সাধারণ মানুষের কাজে লাগানো হোক। ব্যবসায়ী রামনাথ অগ্রবাল ও তাঁর স্ত্রী সুলোচনা অগ্রবাল রোগীর আত্মীয়দের জন্য একটি আধুনিক মানের বিশ্রামাগার তৈরি করে শনিবার তা তুলে দিলেন বান্দোয়ানে স্বাস্থ্য দফতরের হাতে।

ব্লক হাসপাতাল চত্বরে ১২০০ বর্গ ফুটের বিশ্রামাগারের মেঝেতে ঝকঝকে টাইলস। ৪০ জন পুরুষ এবং ২০ জন মহিলা শোওয়া-বসা করতে পারবেন, এ রকম ডর্মিটরি ধরনের দু’টি ঘর। সঙ্গে ছ’টি স্নানগার ও শৌচালয়ও রয়েছে। সর্বক্ষণের জন্য জলের সুবিধাযুক্ত বেসিন রয়েছে।

বান্দোয়ানের ব্লক মেডিক্যাল অফিসার জয়দেব সোরেন বলেন, ‘‘বছর খানেক আগে হঠাৎ রামনাথবাবুর ছেলে সুশীলবাবু এসে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কাজে লাগবে এমন কিছু করতে চেয়ে প্রস্তাব চান। এমন আবদার নিয়ে সচরাচর কেউ আসেন না। এখানে রোগীর আত্মীয়দের প্রতীক্ষালয় বলতে একটি ছোটখাটো ঘুপচি ঘর রয়েছে। সবার সেখানে জায়গা হয় না। কেউ গাছতলায়, কেউ দোকানের বারান্দায় রাত কাটান। তাই বিশ্রামগৃহের কথা তাঁদের জানিয়েছিলাম। কিন্তু এত ভাল মানের বিশ্রামাগার গড়া হবে বলে ভাবিনি।’’ তিনি জানান, রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে ব্যবসায়ী পরিবারের প্রস্তাব নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে তা জেলা স্বাস্থ্য কর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছিল। সবার অনুমতি নিয়ে তাঁদের জায়গাটি দেওয়া হয়। ২০১৬ সালের জুন মাসে নির্মাণের কাজ শুরু হয়।

রামনাথবাবু ও সুলোচনাদেবী বলেন, ‘‘আমাদের বিবাহবার্ষিকীতে এর থেকে বড় উপহার আর কিছু হয় না। আশা করছি রোগীর পরিজনদের আর অসুবিধা হবে না।’’

এই পরিবার অবশ্য ব্যবসা সূত্রে এখন বান্দোয়ানের বাইরেই বেশি সময়টা থাকেন। রামনাথবাবুর বড়ছেলে নাথুরাম অগ্রবাল বলেন, ‘‘কয়েক বছর আগে আমাদের পরিচিত এক কাকার ছেলেকে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছিল। কাকাকে ওই সময় প্রায় চার-পাঁচদিন এখানে থাকতে হয়েছিল। তখন দেখেছিলাম, ঠিক মতো বিশ্রাম না পেয়ে কাকাও অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তখনই মনে হয়েছিল রোগীর পরিজনদের জন্য একটি উন্নত মানের বিশ্রামালয় থাকা দরকার।’’

রোগী কল্যাণ সমিতি ঠিক করেছে, বিশ্রামাগারের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একজন অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ করা হবে। রোগীর পরিজনেরা ১০ টাকা দিয়ে এখানে ২৪ ঘণ্টা থাকতে পারবেন।

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারি ক অনিলকুমার দত্ত বলেন, ‘‘রামনাথবাবুদের মতো আরও কিছু সহৃদয় মানুষ এগিয়ে এলে স্বাস্থ্য জগতের ছবিটা বদলে যাবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Restroom hospital Couple
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE