Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Satyakinkar Dutta of manbhumi

সত্যকিঙ্করের নামে রাস্তার দাবি শহরে

মানভূমের স্বাধীনতার ইতিহাসের সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে জুড়ে রয়েছে সত্যকিঙ্করের স্মৃতি। জেলার ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায়, ১৯২২ সালের ২৭ ও ২৮ এপ্রিল মানভূমের দ্বিতীয় রাজনৈতিক সম্মেলন ঝালদায় হয়।

সত্যকিঙ্কর দত্তের নামে রাস্তার দাবি।

সত্যকিঙ্কর দত্তের নামে রাস্তার দাবি। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝালদা শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৯:২২
Share: Save:

সত্যকিঙ্কর দত্তকে ছাড়া মানভূমের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাস অসম্পূর্ণ।তাঁর স্মরণে ফি বছর ঝালদায় মেলা হয়ে আসছে। মানভূমের সেই প্রথম শহিদের স্মরণে এ বার ঝালদা শহরের রাস্তার নামকরণের দাবি তুলেছেন বাসিন্দারা। পুরসভার কাছে তাঁর আবক্ষ মূর্তির পাশে একটি উদ্যান তৈরিরও দাবি তুলেছে শহিদ পরিবার।

ঝালদার পুরপ্রধান শীলা চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘দাবির মধ্যে যথেষ্ট যুক্তি রয়েছে। মানুষটি সর্বজনশ্রদ্ধেয় ছিলেন। তাঁর নামে শহরের রাস্তার নামকরণ করতে পারলে তা এলাকার গর্বের ব্যাপার হবে। বিষয়টি বোর্ড অব কাউন্সিলরদের সভায় উত্থাপন করব।’’

মানভূমের স্বাধীনতার ইতিহাসের সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে জুড়ে রয়েছে সত্যকিঙ্করের স্মৃতি। জেলার ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায়, ১৯২২ সালের ২৭ ও ২৮ এপ্রিল মানভূমের দ্বিতীয় রাজনৈতিক সম্মেলন ঝালদায় হয়। স্বেচ্ছাসেবক ছিলেন সত্যকিঙ্কর। সম্মেলনের পরে ঝালদায় স্বদেশী আন্দোলনের জোয়ার আসে। ইংরেজের পক্ষে থাকা স্থানীয় রাজার বিষনজরে পড়েন সত্যকিঙ্কর। ১৯২৯ সালের ১০ ডিসেম্বর এক গুপ্তঘাতকের বিষমাখানো ধারালো অস্ত্রে আহত হন সত্যকিঙ্কর। ১৩ ডিসেম্বর হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। নাম জড়ায় রাজপরিবারের। গর্জে ওঠে ঝালদা-সহ গোটা মানভূম। পরের ঘটনা সবটাই এলাকার মানুষের কাছে গর্বের বীরগাথা। কিন্তু সেই শহিদ কি পেয়েছেন তাঁর যোগ্য সম্মান?

বাসিন্দাদের আক্ষেপ, পুরভবনের দরজার কাছে কার্যত অনাদরে পড়ে শহিদের আবক্ষ মূর্তি। রকমারি দোকানের পসরার আড়ালে যেন মুখ ঢেকেছে মূর্তির।

শহিদ পরিবারের তরফে শ্যামলী দত্ত বলেন, ‘‘যখন দেখি মূর্তির চারপাশে জঞ্জাল পড়ে আছে, চোখে জল এসে যায়। এটা শহিদকে অসস্মান করারই সমান। যতদূর জানি যখন ওই মূর্তি বসানো হয়, তখন সেখানে প্রায় সওয়া দুই ডেসিমেল জমি দান করা হয়। সেই জমিতেই অনায়াসে একটা ছোট উদ্যান করা যেতে পারে।’’

শহিদ পরিবারের উত্তরসূরীরা বর্তমানে বাসস্ট্যান্ডের কাছে বাস করেন। তাঁদের দুয়ার ছুঁয়ে রাস্তাটি কিছুটা গিয়ে স্টেশনের দিকে ঘুরেছে। লোকমুখে তা স্টেশন রোড। তবে কাগজে-কলমে রাস্তাটির কোনও নির্দিষ্ট নাম নেই বলে দাবি স্থানীয়দের। তাই অনেকেরই দাবি, রাস্তাটি সত্যকিঙ্করের নামে হোক।

নব্বই ছুঁইছুঁই ভক্তিপদ মোদকের কথায়, ‘‘সত্যকিঙ্করের মৃত্যু শুধু ঝালদা নয়, সারা মানভূমকেই নাড়িয়ে দিয়েছিল। তাঁর সম্মানে রাস্তার নাম হলে তা অবশ্যই এই শহরের গর্বের ব্যাপার।’’

ষাটোর্ধ্ব বসন্তকুমার দত্ত বলেন, ‘‘সত্যকিঙ্কর শুধু ঝালদার নয়, সাবেক মানভূমের গর্ব ছিলেন। ঝালদার মানুষ যে তাঁর জন্য গলা তুলেছেন, এটা অবশ্যই ইতিবাচক দিক।’’ নতুন প্রজন্মের সোমনাথ পোদ্দারও একই দাবি তোলেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Jhalda
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy