প্রোটিন বার কেনার আগে কী কী দেখে নেওয়া জরুরি? ছবি: শাটারস্টক।
যাঁরা ওজন বৃদ্ধি করতে চান, কিংবা যাঁরা নিয়মিত জিমে গিয়ে শরীরচর্চা করেন, তাঁদের অনেককেই দেখা যায় খিদে পেলে প্রোটিন বার মুখে পুরে দিতে। পেশিবহুল সুঠাম চেহারা পেতে এই ধরনের বার খাওয়া স্বাস্থ্যকর কি না, সেই প্রশ্ন জাগে অনেকেরই মনে। অনেকেই বিজ্ঞাপনের ফাঁদে পড়ে চড়া দামের এই প্যাকেটবন্দি প্রোটিন বারগুলি পুষ্টিবিদ কিংবা ফিটনেস বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়াই দিনের পর দিন খেয়ে চলেছেন।
এক জন পূর্ণবয়স্ক মানুষের দৈনিক প্রোটিনের চাহিদা তাঁর দেহের ওজনের সমানুপাতিক। প্রতি কিলো ওজনপিছু দৈনিক ০.৮ থেকে ১ গ্রাম প্রোটিন প্রয়োজন হয়। অর্থাৎ, কারও ওজন যদি ৫০ কেজি হয়, তবে তাঁর প্রতি দিন ৪৫ থেকে ৫০ গ্রাম প্রোটিন প্রয়োজন। তবে যাঁরা খেলোয়াড় এবং নিয়মিত শরীরচর্চা করেন, তাঁদের ক্ষেত্রে এই চাহিদা কিছুটা বেশি। তাঁদের দেহের প্রতি কিলো ওজনের জন্য, দৈনিক দেড় থেকে দুই গ্রাম প্রোটিন প্রয়োজন।
জীবনে ব্যস্ততার চাপ এবং প্যাকেটবন্দি ‘রেডি টু মেক’ খাবারের ভিড়ে অনেকেই ভরসা করেন নিউট্রিশন বারের উপরে। বিভিন্ন ধরনের প্রোটিন বার কিংবা এনার্জি বার সহজেই কেনা যায় বিভিন্ন সুপারমার্কেট, শপিং মল, হেল্থ স্টোর, জিম কিংবা অনলাইনে। জিমে না গেলেও যাঁরা সারা দিন বাইরে কাজ করেন, অথবা যাঁদের কাজের সূত্রে প্রচুর ভ্রমণ করতে হয়, তাঁদের অনেকেই ব্যাগে রাখেন এমন একটি করে বার। খিদে পেলেই কামড় বসানো যায় এতে। এর ফলে বাইরের খাবার খাওয়াও হল না, আবার বারের ‘নিউট্রিশন’ও শরীরে পুষ্টির জোগান দিল সত্যিই কি তাই? খাবারের পরিবর্তে এই বাজারচলতি প্রোটিন বারগুলি কি আদৌ স্বাস্থ্যকর? চটজলদি পুষ্টিলাভের সৌজন্যে অতিরিক্ত চিনি কিংবা অবাঞ্ছিত ফ্যাট শরীরে যাচ্ছে না তো?
পুষ্টিবিদদের মতে, কর্মব্যস্ত জীবনে অনেকেই সময় মতো প্রাতরাশ, দিনের খাবার কিংবা বিকেলের জলখাবার খাওয়ার সময় পান না। তার চেয়ে ব্যাগে একটা নিউট্রিশন বার রাখা বুদ্ধিমানের কাজ। এতে খালি পেটে থাকাও হয় না, আবার রাস্তার তেলে ভাজা অস্বাস্থ্যকর খাবারও খেতে হয় না। তবে প্রোটিন বার কেনার আগে ভাল করে উপকরণ ও তার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জেনে নেওয়া ভীষণ জরুরি। ‘হাই ইনটেনসিটি ওয়ার্ক আউট’ করেন বা হাই-প্রোটিন ডায়েট মেনে চলেন, তাঁদের অনেককেই প্রোটিন বার খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। রিফাইনড সুগারের বদলে গুড় কিংবা মধু দিয়ে সেই সব বার প্রস্তুত করার দাবি করা হলেও তা আদৌ কতটা সত্যি, তা যাচাই করে নেওয়া প্রয়োজন।
প্রোটিন বার কেনার আগে আর কী কী মাথায় রাখবেন?
১) প্রোটিন বার কেনার আগে অবশ্যই দেখে নিন তাতে ১০ থেকে ১৫ গ্রাম প্রোটিন আদৌ আছে কি না।
২) প্রোটিন বারে কতটা চিনি আছে, সেই বিষয়ও সতর্ক থাকতে হবে। ৫ গ্রামের বেশি চিনি থাকলে তা না কেনাই ভাল। নইলে ডায়াবিটিস, ওবেসিটির মতো রোগের ঝুঁকি বাড়ে।
৩) ৩ গ্রামের মতো ফাইবার আছে কি না, তা-ও দেখে নিতে হবে।
৪) প্রোটিন বারে কোনও রকম কৃত্রিম শর্করা বা চিনি মেশানো আছে কি না, কেনার আগে তা অবশ্যই যাচাই করে নিন।
৫) প্রোটিন বারে বাদাম, বিভিন্ন রকম বীজের মতো স্বাস্থ্যকর ফ্যাট যুক্ত উপাদান আছে কি না, তা-ও যাচাই করে নিন।
৬) অতিরিক্ত কোনও রাসায়নিক মেশানো আছে কি না, সেটিও যাচাই করে নিতে ভুলবেন না যেন।
বেশির ভাগ বাজারচলতি নিউট্রিশন বারে অতিরিক্ত চিনি মেশানো থাকে, যা খাওয়া মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়। ‘নো অ্যাডেড সুগার’ লেখা থাকলেও তা কতটা চিনিমুক্ত, সেই বিষয়ে সন্দেহ থেকেই যায়। তাই স্বাস্থ্যের সঙ্গে আপস করতে না চাইলে বাড়িতে তৈরি করা বাদামের লাড্ডু কিন্তু এর পরিবর্ত হতে পারে। চাইলে বাড়িতে তৈরি করে নিতে পারেন তিল, তিসি, বিভিন্ন ধরনের বাদাম আর গুড় দিয়ে লাড্ডু কিংবা বার। গুড়-বাদাম অথবা ওট্স/গ্র্যানোলা গুড় মাখিয়ে খেতেও ভাল লাগবে। এক বার বাড়িতে তৈরি করে নিতে পারলে তা সঙ্গে রাখতে পারবেন সপ্তাহভর। আর কিনতে হলে, তার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে তবেই কিনুন। এ ব্যাপারে কোনও পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিতে পারেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy