Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

বাহাদুরপুরে সেচ নালা করার পরিকল্পনা

সম্প্রতি আনন্দবাজারের পাঠকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন রূপপুর পঞ্চায়েতের প্রধান নীলিমা চৌধুরী। এলাকাবাসীর নানা দাবি-দাওয়া, প্রাপ্তি-প্রত্যাশা উঠল আলোচনায়। সঞ্চালনায় ছিলেন মহেন্দ্র জেনা। রইল বাছাই প্রশ্নোত্তর। সম্প্রতি আনন্দবাজারের পাঠকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন রূপপুর পঞ্চায়েতের প্রধান নীলিমা চৌধুরী। এলাকাবাসীর নানা দাবি-দাওয়া, প্রাপ্তি-প্রত্যাশা উঠল আলোচনায়। সঞ্চালনায় ছিলেন মহেন্দ্র জেনা। রইল বাছাই প্রশ্নোত্তর।

পঞ্চায়েতের অফিসে বসেছে আদালত। —বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী

পঞ্চায়েতের অফিসে বসেছে আদালত। —বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৬ ০১:৫৫
Share: Save:

• বাহাদুরপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দু’দিকে দু’টি পুকুর রয়েছে। শিক্ষক শিক্ষিকাদের সামান্য অন্যমনস্কতায় যে কোনও মুহূর্তে বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের বড়সড় বিপদ হতে পারে। বিদ্যালয়ের সীমানা পাঁচিলের কি ব্যবস্থা হবে?

শিপ্রা পাল, বাহাদুরপুর

প্রধান: পঞ্চায়েতের সংশ্লিষ্ট কমিটির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা তথা সমাজসেবী কাজী নুরুল হুদাকে নিয়ে ওই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

• কমলাকান্তপুর ও ইসলামপুর এলাকায় ঘন জনবসতি রয়েছে। এমন একটি জনপদে, বর্ষাকালে কোপাই নদীর জলের স্তর বাড়ায় বন্যার আশঙ্কা হয় বাসিন্দাদের। ফি বছর বর্ষায় ফসলের ক্ষতি সহ জন-জীবন হানির ঘটনা ঘটেছে অতীতে। পঞ্চায়েত কি কোনও ব্যবস্থা নেবে?

অভিজিৎ সিংহ, ইসলামপুর

প্রধান: স্থানীয় বাসিন্দাদের সমস্যা নিয়ে পঞ্চায়েত ওয়াকিবহাল। স্থানীয়দের কাছে আমরা ইতিমধ্যেই আবেদন পেয়েছি। বার কয়েক ওই বিষয় নিয়ে পঞ্চায়েতের উপপ্রধান রণেন্দ্রনাথ সরকারের পাশাপাশি পঞ্চায়েতের সংশ্লিষ্ট বিষয়ক কমিটির সদস্য সদস্যাদের সঙ্গেও আলোচনা হয়েছে। অনেক ব্যয়বহুল প্রকল্প হওয়ার কারণে, প্রয়োজনীয় আর্থিক অনুদানের জন্য পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য গ্রামোন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান অনুব্রত মণ্ডলের কাছে আর্জি জানানো হয়েছে। সেচ দফতরের মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

• সেচের জলের ওপর নির্ভরশীল এলাকার কৃষি ব্যবস্থা। পঞ্চায়েতের বাহাদুরপুর এবং সংলগ্ন এলাকা দিয়ে যাওয়া ময়ূরাক্ষী ক্যানালের জলে কৃষিতে সেচের কাজ করেন এলাকার মানুষ। বাহাদুরপুরে একটি সেচ নালা করতে পঞ্চায়েত কি উদ্যোগী হবে?

যাদব পাল, বাহাদুরপুর

প্রধান: আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব। বাহাদুরপুর এলাকায় ফিল্ড চ্যানেল বা লিফট ইরিগেশনের মাধ্যমে কৃষকেরা যাতে সেচের জল পান, সেই মতো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে পঞ্চায়েত।

• রূপপুর থেকে লোহাগড় ও হেদোডাঙা আদিবাসী পাড়া পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তা সংস্কারের খুব প্রয়োজন। তা ছাড়াও প্রয়োজন এলাকায় পানীয় জলের সুব্যবস্থা। পঞ্চায়েত কী করছে?

মালেক মিয়াঁ, তাঁতগোড়ে

প্রধান: শুধু ওই রাস্তাই নয়, পঞ্চায়েতের একাধিক রাস্তা সংস্কারের কাজ দ্রুত শুরু হচ্ছে। বিনুড়িয়া এলাকায় জন স্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের উদ্যোগে পাঁচ লক্ষ গ্যালন ধারন ক্ষমতার একটি জলাধার করার ব্যবস্থা চলছে। বিনুড়িয়াতে ওই জলাধার পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে, রূপপুর, তাঁতগোড়ে, মন্মোহনপুর, মিত্রডাঙা, বড়ডাঙা, বিনোদপুর, বাহাদুরপুর, লোহাগড়ের মতো এলাকার বাসিন্দাদের পানীয়জলের সুব্যবস্থা হবে।

• রূপপুরের ফার্ম থেকে ইলামবাজারের ধল্লা পর্যন্ত একটি রাস্তা রয়েছে। কিন্তু প্রয়োজনীয় নজরদারি এবং উপযুক্ত সংস্কারের অভাবে ওই রাস্তা চলাফেরার অযোগ্য হচ্ছে। আট কিলোমিটার ওই রাস্তা আদৌ কি সংস্কার হবে? ঠিক কবে থেকে ওই রাস্তা সংস্কারের কাজে হাত দেবে পঞ্চায়েত?

সীমা লোহার, তাপসী দেবী, রূপপুর

প্রধান: ওই আট কিলোমিটার রাস্তায় প্রয়োজনীয় সংস্কার এবং পিচ করার জন্য আনুমানিক ১ কোটি ৭২ লক্ষ টাকা খরচ ধরা হয়েছে। পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের আর্থিক অনুদানে ওই রাস্তার কাজ শুরু হবে। সব ঠিকঠাক থাকলে, এই ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই কাজ শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে।

• শান্তিনিকেতনের বল্লভপুর ঝিলের মতো এই পঞ্চায়েতের ইসলামপুর এলাকায় শীতের মরসুমে বহু পরিযায়ী পাখির ঢল নামে। বসন্ত ঋতুতে এলাকার শতাধিক পলাশ গাছ অন্যতম আকর্ষণের কেন্দ্র হয়। আশপাশের মানুষ থেকে শুরু করে দেশি বিদেশি পর্যটকদের ভিড় থাকে চোখে পড়ার মতো। এমন একটি পর্যটনের সম্ভাবনাময় জায়গাকে আকর্ষণীয় এবং আরও দর্শনীয় করে তুলতে পঞ্চায়েত কী ব্যবস্থা নেবে?

প্রশান্ত বাগ, ইসলামপুর

প্রধান: এলাকার নির্বাচিত জন প্রতিনিধি এবং পঞ্চায়েতের কমিটিকে নিয়ে হালেই বৈঠক হয়েছে। ওই বৈঠকে এলাকার উন্নয়ন-সহ পর্যটনের সম্ভাবনার বিষয় নিয়ে সবিস্তারে আলোচনা হয়েছে। পুর এলাকার মতো, ওই এলাকায় কোনও উদ্যান গড়ে তোলা যায় কি না সে নিয়ে আমরা দ্রুত আলোচনায় বসছি।

• এলাকার বাসিন্দাদের আর্থ সামাজিক উন্নয়নের জন্য পঞ্চায়েতে কি কোনও সুনির্দিিষ্ট ব্যবস্থা নিচ্ছে?

রিনা বাগদি ও সঞ্জয় কুমার হাজরা, সুরুল

প্রধান: বিভিন্ন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে হাঁস, মুরগি পালন, ছাগল পালনে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি যে সমস্ত গ্রামের মহিলারা সেলাই কাজ করতে পারেন, তাঁদের কাঁথাস্টিচের শাড়ি তৈরি ও বিপণনের উৎসাহ দিচ্ছে পঞ্চায়েত। তা ছাড়াও জামবুনি ক্যানেলপাড় এলাকায় ছোট ছোট ড্যাম করে পুকুরের জল দিয়ে মাছ চাষ, জৈবসার তৈরি ও বিক্রয় করা নিয়ে উদ্যোগ নিচ্ছে পঞ্চায়েত।

• রূপপুর মুসলিম পাড়া থেকে মতিপুর যাওয়ার জন্য স্থানীয় বাসিন্দারা দীর্ঘ দিন ধরে একটি সেতুর দাবি করে আসছেন। সেই সেতু বা বিকল্প কোনও ব্যবস্থা কি করবে পঞ্চায়েত?

হৃদয় বন্দ্যোপাধ্যায়, তাঁতগোড়ে

প্রধান: প্রাথমিক ভাবে আমরা ওই এলাকায় একটি বাঁশের সেতু দিয়েছি। সেই সেতু দিয়ে ইতিমধ্যেই পারাপার চলছে। এই আর্থিক বছরে ওই এলাকার বাসিন্দাদের আর্জি মেনে সেতু করা যায় কি না সে নিয়ে সংশ্লিষ্ট সব মহলে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

• শহর সংলগ্ন এলাকায় পঞ্চায়েতের বহু জায়গা খালি পড়ে আছে। যেমন শ্যামবাটি সেচ সেতু লাগোয়া এলাকা, সুরুল, মোলডাঙা এলাকায় প্রয়োজনীয় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে ওই জায়গায় সৌন্দর্যায়ন করবে কী পঞ্চায়েত?

ভারতী ঘোষ, রূপপুর

প্রধান: শ্যামবাটি সেচ সেতু এলাকা দিন দুয়েক মধ্যে পরিষ্কার করার কাজ হাত দেবে পঞ্চায়েত। তাছাড়া ওই এলাকায় নানা পরিকল্পনা রয়েছে। আর সুরুল এবং পাকা সড়ক সংলগ্ন এলাকায় ইতিমধ্যেই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সুরুল-সহ ওই সব চিহ্নিত এলাকায় শুধু সৌন্দর্যায়ন নয়, স্থানীয়দের সহায়তায় শাক-সব্জির বাগান করারও পরিকল্পনা নিয়েছি।

অন্য বিষয়গুলি:

panchayat chief Ruppur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE