গড় পঞ্চকোট। ফাইল চিত্র
‘পুজোয় নাকি প্রোগ্রাম ছিল সিমলা, কুলু-মানালির। এখন দেখি কাটলে টিকিট মুরাডি-রামকানালির!’
আজ থেকে বছর কুড়ি আগে ছোট পত্রিকার পাতায় এই ছড়া পড়ে মুচকি হেসেছিলেন অনেকে। এখন এটা আর হাসির কথা নয়। এ বার পুজোয় অন্যতম জনপ্রিয় বেড়ানোর জায়গা হয়ে উঠেছে জঙ্গলমহলের পুরুলিয়া। জেলার বিভিন্ন অতিথি আবাসে পুজোর ক’দিন তো বটেই, পুজোর পরেও তিল ধারণের জায়গা নেই। শেষ কবে পুজোয় এমনটা হয়েছে, আবাসগুলির কর্মীদের প্রায় কেউই মনে করতে পারছেন না।
পুরুলিয়া মানেই জঙ্গল, জঙ্গলের মাঝে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা ছোট-বড় টিলা। তিরতির করে বয়ে চলা নদী। গাছের ডালের ফাঁকে নাম না জানা পাখির লুকিয়ে পড়া। পুরুলিয়া মানেই অযোধ্যা পাহাড়, গড়পঞ্চকোট, জয়চণ্ডী। বড়ন্তির জলাধার। পুরুলিয়ার পুজো মানেই কাশীপুর রাজবাড়ি, পুঞ্চার পাকবিড়রার জৈন তীর্থক্ষেত্র বা কংসাবতী তীরে দেউলঘাটার মন্দির। ইতিহাসের গন্ধ লেগে থাকা বান্দার দেউল, তেলকুপি। এ সমস্ত কিছুই টানে ছুটে আসেন পর্যটকেরা।
অযোধ্যা পাহাড়ের মাথায় সামগ্রিক অঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের অতিথি আবাস সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস তিনেক আগে থেকেই এই সময়ের জন্য পর্যটকেরা ঘর বুক করে রেখে দিয়েছেন। এক কর্মী বলেন, ‘‘দু’একটা ডরমেটরি ফাঁকা থাকলেও থাকতে পারে। কিন্তু কোন ঘর ফাঁকা নেই।’’ একই অবস্থা গড়পঞ্চকোট প্রকৃতি ভ্রমণ কেন্দ্রের। পঞ্চকোট পাহাড়ের কোলে এই অতিথি আবাস। ম্যানেজার বিকাশ মাহাতো বলেন, ‘‘পঞ্চমীর দিন থেকে ৭ অক্টোবর পর্যন্ত আমাদের কোনও ঘর খালি নেই। প্রায় এক মাস আগে থেকেই বুক হয়ে রয়েছে। তারপরেও বুকিং রয়েছে। তবে বিক্ষিপ্ত ভাবে মাঝে কিছু দিন খালি রয়েছে।’’ অযোধ্যা পাহাড়ের একটি বেসরকারি অতিথি আবাসের কর্মী রোহিত লাটা বলেন, ‘ ‘আগে শীতের মরসুমে আসতেন। এখন পুজোয় পর্যটকদের পুরুলিয়ার প্রতি টান বাড়ছে।’’ তিনি জানান, তাঁদের অতিথি আবাসের সমস্ত ঘরও অনেক আগে থেকেই বুকড।’’
জয়চণ্ডী পর্যটক আবাসের মালিক মলয় সরখেল বলেন, ‘‘পুজোর সময় আমাদের অতিথি আবাসে গত বারেও হাতে গোনা কিছু খালি ছিল। কিন্তু এ বারে অন্য ছবি। সব ঘর ভর্তি।’’ একই কথা জানান বড়ন্তির একটি পর্যটক আবাসের কর্তা চন্দন রায়ও। গড়পঞ্চকোটের পাদদেশে একাধিক রিসর্ট গড়ে উঠেছে পর্যটকদের জন্য। তার একটির কর্মী শৌভিক রায় জানান, ঘর হোক বা কটেজ— ঠাঁই নাই, ঠাঁই নাই।
এ বছর বিশেষত্বটা কী?
অনেকেই মনে করছেন, দার্জিলিংয়ের পরিস্থিতির জন্য পর্যটকেরা উত্তর থেকে অনেকটাই মুখ ফিরিয়েছেন। তা ছাড়া, সরকার পুরুলিয়ার পর্যটন পরিকাঠামোর উন্নয়ন করছে। তাই সেই ভিড়টা টানতে পারছে পুরুলিয়া। এমনকী এ বার পুরুলিয়া আসার পরিকল্পনা করে ঘর না পেয়ে হতাশ হয়েছেন অনেকে। উত্তর কলকাতার সুজাতা কর সাহা, চন্দ্রনাথ সাহারা বলেন, ‘‘পুজোর ঠিক পরেই পুরুলিয়ায় যাব বলে বিভিন্ন অতিথি নিবাসে খোঁজ নিয়েছিলাম। কিন্তু কোথাও কোন ঘরই খালি নেই। এ বার তাই আর যাওয়া হল না। শীতে দেখি যদি ঘর পাই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy