গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা ছিল। গর্ভপাত করানোর সময়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়েই তার মৃত্যু হয়েছে। বাঁকুড়ার ঘটনায় ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এবং ওই কিশোরীর প্রেমিক ও প্রেমিকের বাবাকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরার পর এমনই তথ্য মিলেছে বলে জানা গিয়েছে পুলিশ সূত্রে। যে হাতুড়ে ডাক্তার বেআইনি ভাবে কিশোরীর গর্ভপাত করিয়েছিলেন বলে অভিযোগ, তাঁকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।
বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারি বলেন, ‘‘বেআইনি ভাবে গর্ভপাত করানোর অভিযোগে এক হাতুড়ে চিকিৎসককে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিশোরীর চিকিৎসা সংক্রান্ত নথিপত্র উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। চিকিৎসককে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হবে।’’
পুলিশ সূত্রে খবর, গত ১৫ নভেম্বর হাওড়ার ডোমজুড় এলাকার ওই কিশোরী বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল প্রেমিকের সঙ্গে দক্ষিণেশ্বরে পুজো দেওয়ার নাম করে। অনেক ক্ষণ কেটে গেলেও কিশোরী বাড়ি না ফেরায় খোঁজ করা শুরু করেন পরিবারের লোক জন। পরের দিন বিকেলের দিকে কিশোরীর প্রেমিক রাহুল বাউরি ফোনে পরিবারকে জানান, কিশোরী অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয়েছে। খবর পেয়ে সেই দিন রাতেই কিশোরীর পরিবার বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে যান। সেখানে গিয়ে তারা জানতে পারেন, মেয়ে মারা গিয়েছে। এর পরেই কিশোরীর প্রেমিক এবং প্রেমিকের বাবা ধীরেন্দ্রনাথ বাউরির বিরুদ্ধে থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করে মৃতার পরিবার। অভিযোগ পেয়েই ১৮ নভেম্বর অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃত দু’জনকে মঙ্গলবার বাঁকুড়া জেলা আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। দু’জনেরই পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, এক দিকে কিশোরীর দেহের ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট থেকে পাওয়া তথ্য, অন্য দিকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় ধৃত প্রেমিক ও তাঁর বাবার বয়ান থেকেই তদন্তে নতুন মোড় আসে। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে কিশোরীর অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ার প্রমাণ মিলেছে। ধৃত প্রেমিক ও প্রেমিকের বাবাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, প্রেমিকা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ার খবর জানতে পেরেই গর্ভপাতের পরিকল্পনা করেছিলেন রাহুল। কিন্তু ডোমজুড়ে তা করানো হলে বিষয়টি জানাজানি হতে পারে, এই আশঙ্কায় প্রেমিকাকে নিয়ে বাঁকুড়ার ধগড়া গ্রামে যান ওই যুবক। সেখানে হাতুড়ে চিকিৎসক বিশ্বনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে কিশোরীকে নিয়ে যাওয়া হয়। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, গর্ভপাত করানোর সময়েই বিপত্তি ঘটে। কিশোরীর শরীর থেকে ব্যাপক রক্তক্ষরণ শুরু হয়। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে কিশোরীকে তড়িঘড়ি বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যায় প্রেমিকের পরিবার। সেখানেই মৃত্যু হয় ওই কিশোরীর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy