Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪
WB Tab Scam

চোপড়ার সেই বাবরকে ট্যাব-কাণ্ডে খুঁজছে পুলিশ! বছর ছয়েক আগে টাকা ‘হাতান’ কেরল সরকারের

২০১৮ সালে কেরল সরকারের একটি প্রকল্পের টাকা হাতানোর অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল চোপড়ার বাবর নামের এক ব্যক্তিকে। পশ্চিমবঙ্গের ট্যাব-চক্রেও তাঁর যোগ থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

২০১৮ সালে কেরলে ধৃত বাবরের যোগ থাকতে পারে বাংলার ট্যাব-কাণ্ডেও।

২০১৮ সালে কেরলে ধৃত বাবরের যোগ থাকতে পারে বাংলার ট্যাব-কাণ্ডেও। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০২৪ ১৮:৩৫
Share: Save:

জনমুখী প্রকল্পের টাকা হাতানোর অভিযোগে বছর ছয়েক আগে কেরল পুলিশের হাতে ধরা পড়েছিলেন বাংলার এক বাসিন্দা। উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ার সেই বাবরকে খুঁজছে রাজ্য পুলিশ। পশ্চিমবঙ্গে ট্যাবের টাকা নিয়ে যে কারচুপির অভিযোগ উঠেছে, তাতেও এই বাবরের যোগ থাকতে পারে, অনুমান তদন্তকারীদের। কিন্তু ছ’বছর আগে কেরলে যে বাবর ধরা পড়েছিলেন, এখন তাঁর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। কেরলে গ্রেফতারির পর তিনি ছাড়া পেয়ে গিয়েছিলেন।

রাজ্য পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৮ সালে কেরল পুলিশ বাবর নামের এক যুবককে গ্রেফতার করেছিল। তিনি চোপড়ার বাসিন্দা। কেরল সরকারের জনকল্যাণমূলক কোনও প্রকল্পের টাকা হাতানোর অভিযোগ ছিল বাবরের বিরুদ্ধে। বাংলায় ট্যাব-কাণ্ডের সঙ্গে সেই বাবরের যোগ থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তদন্তকারীরা বাবরকে খুঁজছেন। তিনি ট্যাব-চক্রের সঙ্গে যুক্ত কি না, তা-ও দেখা হচ্ছে।

বাংলার এই ট্যাব-কাণ্ডে বার বার উঠে এসেছে চোপড়ার নাম। একাধিক অভিযুক্তকে সেখান থেকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশের অনুমান, গোটা চক্রের মূল রয়েছে চোপড়াতেই। সেখান থেকেই ট্যাবের টাকা হাতানোর পরিকল্পনা করা হয়েছিল। ফলে কেরলের মতো এই ঘটনাতেও বাবরের যোগ থাকা সম্ভব, মত তদন্তকারীদের একাংশের। ট্যাব-কাণ্ডে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে মোট ১৪০টি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ২১ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ফ্রিজ় করা হয়েছে ৭৯৭টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট।

এর আগে পূর্ব মেদিনীপুর থেকে ট্যাব-কাণ্ডে কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁদের মাথাও সেই চোপড়া। তাঁরা মূলত ঝাড়গ্রাম, আসানসোল এবং উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তবে পূর্ব বর্ধমান থেকে যে ছ’জনকে ট্যাব-চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁদের মাথা অন্য কোথাও রয়েছে বলেই মত তদন্তকারীদের।

রাজ্য সরকারি স্কুলগুলির একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের পড়াশোনার সুবিধার্থে ট্যাব কেনার জন্য সরকার ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্প চালু করেছিল। এই প্রকল্পের অধীনে এককালীন ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয় পড়ুয়াদের। আবেদনকারীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি সেই টাকা ঢুকে যায়। স্কুলের মাধ্যমেই করা হয় আবেদন। কিন্তু অভিযোগ, এ বছর রাজ্যের অনেক পড়ুয়ার অ্যাকাউন্টে ট্যাবের টাকা ঢোকেনি। বরং তা চলে গিয়েছে অন্য কারও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। টাকা ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে এটিএম থেকে সেই টাকা তুলেও নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।

কলকাতার বিভিন্ন স্কুলে মোট ১০৭ জন পড়ুয়া ট্যাবের টাকা পায়নি। কলকাতা পুলিশ পৃথক তদন্তকারী দল গঠন করে এই সংক্রান্ত তদন্ত করছে। সরশুনার একটি স্কুলের ট্যাব সংক্রান্ত অভিযোগের তদন্তে নেমে গত সোমবার চোপড়ার আরও এক বাসিন্দাকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ। দিবাকর দাস নামের সেই যুবককে শিলিগুড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। উত্তর দিনাজপুরের একটি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক হিসাবে কর্মরত ছিলেন তিনি। ট্যাব-কাণ্ডে আগেও একাধিক শিক্ষক গ্রেফতার হয়েছেন। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন কৃষক থেকে শুরু করে সাইবার ক্যাফের মালিকও। তদন্তকারীদের মতে, মূলত বিভিন্ন সাইবার ক্যাফে থেকে স্কুলের অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে পড়ুয়াদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর বদলে দেওয়া হয়। তার পর ট্যাবের টাকা ঢুকলে তা তুলে নেওয়া হয় এটিএমের মাধ্যমে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy