ফাইল চিত্র।
হাতে লেখা রয়্যালটি-রসিদের পরিবর্তে ই-চালান। রাজস্ব আদায়ে তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার করে দিল্লির ‘স্কচ সিলভার অ্যাওয়ার্ড’ জিতল পুরুলিয়া জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর। সম্প্রতি এই পুরস্কারের খবর এসেছে জেলা প্রশাসনের কাছে। কিছু দিন আগে পরিযায়ী শ্রমিকদের বিকল্প কাজের সন্ধান দেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসনের তৈরি করা ‘বিশ্বকর্মা পোর্টাল’ও ‘স্কচ অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছিল। প্রশাসনের এক কর্তা জানান, অভিনব যে পদক্ষেপ অন্য দফতরকে উদ্বুদ্ধ করতে পারে, সেগুলিকে দিল্লির একটি সংস্থা এই পুরস্কার দেয়।
জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বালি, পাথর বা ‘মাইনর মিনারেল’-এরর তালিকাভুক্ত খনিজ সম্পদ উত্তোলন করার ‘লিজ় হোল্ডার’দের রয়্যালটি-রসিদ বা রয়্যালটি-স্লিপ দেওয়া হত। খনিজের পরিমাণ, কোন সময়ে কোন জায়গা তোলা হচ্ছে ইত্যাদি লেখা থাকত তাতে। উত্তোলনের পরে, গন্তব্যে পৌঁছন পর্যন্ত ব্যবহৃত হত সেই রসিদ। কিন্তু উত্তোলনের ক্ষেত্রে চুরি কোনও ভাবেই ঠেকানো যাচ্ছিল না। যতগুলি রসিদ ব্যবহার হত, তার নিরিখে ‘লিজ় হোল্ডার’দের থেকে টাকা পেত দফতর। কিন্তু এক রসিদ দেখিয়ে একাধিক বার উত্তোলনের অভিযোগ উঠত প্রায়ই। অতর্কিতে অভিযান চালিয়ে তার সত্যতাও ধরা পড়েছিল।
২০২০ সালের প্রথম দিন থেকেই ই-চালান ব্যবস্থা চালু করে পুরুলিয়ার ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর। অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) সুপ্রিয় দাস বলেন, ‘‘আগে যে ব্যবস্থা চালু ছিল, তাতে রাজস্ব আদায়ের নানা অসুবিধা দেখা দিচ্ছিল। বিভিন্ন জায়গা থেকে বেআইনি ভাবে রয়্যালটি চালান ব্যবহার করে বালি তোলার অভিযোগ আসছিল। ব্যবস্থাটির স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন উঠছিল। তাই ই-চালান বা ডিজিটাল ট্রানজ়িট পাস চালু করা হয়।’’ তিনি জানান, নতুন পদ্ধতি চালুর আগে ‘লিজ় হোল্ডার’দের সঙ্গে একাধিক বার বৈঠক করে প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছিল।
কী ভাবে ব্যবহার হয় এই ই-চালান? সুপ্রিয়বাবু জানান, জেলায় ৪২টি বালির ঘাট রয়েছে। কোয়ার্টজ় ক্ষেত্র রয়েছে আটটি। সরকারের অ্যাকাউন্টে টাকা জমা করে খনিজ ক্ষেত্র থেকেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে ই-চালান নিতে পারবেন ‘লিজ় হোল্ডারে’রা। চালানে বাণিজ্য ও শিল্প দফতরের ‘হলোগ্রাম’ লাগানো থাকে। সেই হলোগ্রামের নির্দিষ্ট নম্বর ই-চালানে উল্লেখ করা থাকছে। প্রতিটি ই-চালানেই ‘কিউআর কোড’ থাকে। মোবাইলের অ্যাপ ব্যবহার করে ওই কোড থেকে দফতরের আধিকারিক বা পুলিশ খনিজ বহনকারী গাড়ি থামিয়ে পরীক্ষা করে নিতে পারবেন সেগুলি আইনি ভাবে নিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে কি না।
সুপ্রিয়বাবু বলেন, ‘‘এই ব্যবস্থা চালু করে রাজস্ব আদায় অনেকটাই বেড়েছে। গত বছরের এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত যে রাজস্ব আদায় হয়েছে, তা আগের গোটা বছরের আদায়ের থেকে অনেকটা বেশি।’’ জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, গত জানুয়ারিতে রাজস্ব আদায়ের এই নয়া পদ্ধতি ‘স্কচ অ্যাওয়ার্ড’ দেওয়া সংস্থার কাছে পাঠানো হয়। প্রাথমিক পর্বের প্রতিযোগিতায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরে চূড়ান্ত পর্বে ‘স্কচ সিলভার’ সম্মান জিতেছে পুরুলিয়া। জেলাশাসক অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই ব্যবস্থা চালু করে খনিজ উত্তোলনে বেনিয়ম অনেকটাই রোখা গিয়েছে। তা ছাড়া, স্কচ অ্যাওয়ার্ডের মতো জাতীয় স্তরের একটি সম্মান আমাদের কাজের ক্ষেত্রে প্রেরণা জোগাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy