Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

হার মানতে নারাজ ওরা

স্কুলের শিক্ষকেরা বলছেন, গোপীনাথের ফল শুধু এ বারের জন্যই নয়, গত কয়েক দশকের মধ্যে সেরা। লড়াইটা মোটেও সহজ ছিল না খয়রাশোলের ওই তরুণের। নিত্য লড়াই ছিল অর্থকষ্টের সঙ্গে।

গোপীনাথ পাত্র। নিজস্ব চিত্র

গোপীনাথ পাত্র। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
খয়রাশোল শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৭ ১৬:৪৫
Share: Save:

কলা বিভাগ নিয়েই পড়াশুনো করেছিলেন তাঁরা। এ বার উচ্চমাধ্যমিকে নজরকাড়া ফল করছেন দু’জনেই। খয়রাশোলের নাকড়াকোন্দা উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্র গোপীনাথ পাত্র পেয়েছেন ৯৪ শতাংশ। অন্যদিকে সিউড়িতে বীরভূম জেলাস্কুলের ছাত্র অপূর্ব দে পেয়েছেন ৮৬ শতাংশ নম্বর। পছন্দের বিষয়ে অনার্স নিয়ে বিশ্বভারতীতে পড়তে চান উভয়েই। উভয়েই চান ভবিষ্যতে শিক্ষক হতে। কিন্তু, অনটনই দুই পড়ুয়ার উচ্চশিক্ষায় প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

স্কুলের শিক্ষকেরা বলছেন, গোপীনাথের ফল শুধু এ বারের জন্যই নয়, গত কয়েক দশকের মধ্যে সেরা। লড়াইটা মোটেও সহজ ছিল না খয়রাশোলের ওই তরুণের। নিত্য লড়াই ছিল অর্থকষ্টের সঙ্গে। মুদিখানা দোকানে কাজ করে সংসার চালান বাবা দিলীপ পাত্র। এ ছাড় সম্পত্তি বলতে এক ফালি জমি এবং ঠাকুমার নামে পাওয়া একটা ইন্দিরা অবাস যোজনায় পাওয়া বাড়ি। ‘‘এই অভাবের জন্যই বিজ্ঞান না নিয়ে কলাবিভাগে ভর্তি হয়েছিল’’, বলছেন গোপীনাথের মা জয়রানি পাত্র। ‌কলাবিভাগের টিউশন চালানো সহজ হয়নি। কয়েকটা টিউশন করে ভাইকে সেটা যোগাড় করে দিয়েছেন কলেজ পড়ুয়া দিদি সুজাতা পাত্র। প্রায় একই রকম অবস্থা অপূর্বদের বাড়িতেও। সিউড়ি কড়িধ্যায় এক টুকরো ঘরে মা, বাবা ও কলেজপড়ুয়া দিদি সঙ্গে থাকেন অপূর্ব। বাবা কালীপদ দে বেশ কয়েক বছর ধরে অসুস্থ। তাই অর্থকষ্ট বেড়েছে। তিনটি বাড়িতে রান্না করে সংসার চালান মা মিুঠুদেবী। চিন্তিত অপূর্বও। কী হবে উচ্চশিক্ষার ভবিষ্যত, এটা না জানা থাকলেও একটা বিষয় নিশ্চিত করছেন গোপীনাথ বা অপূর্ব দুজনেই। বলছেন, ‘‘এত সহজে হার মানব না!’’

অন্য বিষয়গুলি:

Poverty Studies Higher Secondary Results 2017
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE