Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Death by Food Poisoning

বিষক্রিয়ায় মৃত আরও এক, শুরু চাপান-উতোর

ওই ঘটনায় লেগেছে রাজনীতির রং। চিকিৎসার গাফিলতি ও পরিষেবা নিয়ে নানা অভিযোগ তুলে বুধবার রাতে সিউড়ি হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখান বিজেপির জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা-সহ দলের কয়েক জন নেতা।

রাজনগরের ছোটবাজার বাগদি পাড়ায় বিষক্রিয়ায় মৃতদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলছেন সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী।

রাজনগরের ছোটবাজার বাগদি পাড়ায় বিষক্রিয়ায় মৃতদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলছেন সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২৩ ০৯:০৪
Share: Save:

খাদ্যে বিষক্রিয়ার জেরে রাজনগরে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল তিন। বুধবার রাতে সিউড়ি জেলা হাসপাতালে মৃত্যু হয় সুশান্ত মালাকার নামে (৪৫) এক ব্যক্তির।

রাজনগরের ছোটবাজার এলাকার মালিপাড়ায় সোমবার লক্ষ্মীপুজোর বাসি খিচুড়ি খেয়ে অসুস্থ হন কম-বেশি ৫০ জন। সে দিন রাত থেকেই জ্বর, পায়খানা, পেট ব্যথা ও বমি-সহ নানা উপসর্গ নিয়ে রাজনগর ব্লক প্রাথমিক হাসপাতালে ভর্তি হতে থাকেন একের পর এক গ্রামবাসী। ভর্তি হওয়া ৩০ জনের মধ্যে কয়েক জনকে সিউড়ি হাসপাতালে রেফার করা হয়। বুধবার মৃত্যু হয়েছিল পার্বতী বাগদি (৪), তার সম্পর্কিত দাদু সাধু বাগদির (৫৮)। রাতে মৃত্যু হয় সুশান্তের। স্বাস্থ্য দফতরের প্রাথমিক ধারণা, খাদ্যে বিষক্রিয়াই মৃত্যুর কারণ। তবে প্রকৃত কারণ জানতে দেহগুলির ময়না-তদন্ত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বীরভূম স্বাস্থ্যজেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক হিমাদ্রি আড়ি বলেন, ‘‘সোমবার খিচুড়ি খেয়েছিলেন অনেকে। বাসি খাবার থেকে বিষক্রিয়া হয়েছে, নাকি খাবারে কিছু পড়েছিল, তা বলা যাচ্ছে না। বুধবার ‘ফুড সেফটি টিম’ এলাকায় গিয়েছিল। কিন্তু খুচুড়ির নমুনা পাওয়া যায়নি। অসুস্থদের ‘রেকটাল সোয়াব’ পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।’’ এ দিন গ্রামে গিয়েছিল মেডিক্যাল টিম। গিয়েছিলেন সিএমওএইচ-সহ জেলা স্বাস্থ্যকর্তারা। তাঁরা কথা বলেন গ্রামবাসীর সঙ্গে।

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজনগর ব্লক হাসপাতালে অসুস্থদের কাউকে রাখা হয়নি। সকলকেই সিউড়ি জেলা হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। দুপুরে জেলা হাসপাতালের সুপার নীলাঞ্জন মণ্ডল বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ২২ জন। সকালে নতুন করে দু’জনকে ভর্তি করানো হয়েছে। এক জন ছাড়া বাকিদের অবস্থা স্থিতিশীল।’’ রাজনগরে আত্মীয়ের বাড়িতে এসে লক্ষ্মীপুজোর প্রসাদ খেয়েছিলেন লোকপুরের তিন মহিলা। তাঁরা অসুস্থ হয়ে নাকড়াকোন্দা ব্লক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। এ দিন বিকেলে তাঁদেরও সিউড়ি হাসপাতালে আনা হয়েছে। বুধবার রাতে হাসপাতালে এসেছিলেন জেলাশাসক বিধান রায়, মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং জেলা পুলিশের আধিকারিকেরা। তাঁরা অসুস্থদের আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করেন। যথাযথ চিকিৎসার আশ্বাস দেন।

এ দিকে, ওই ঘটনায় লেগেছে রাজনীতির রং। চিকিৎসার গাফিলতি ও পরিষেবা নিয়ে নানা অভিযোগ তুলে বুধবার রাতে সিউড়ি হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখান বিজেপির জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা-সহ দলের কয়েক জন নেতা। এ দিনও ধ্রব জেলা হাসপাতালে গিয়েছিলেন।
কথা বলেন সুপারের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘‘এখানে এত মানুষ ভর্তি আছেন। অথচ শাসক দলের বিধায়ক-নেতা, কারও দেখা নেই। একটি শয্যায় দু’জনকে রাখা হয়েছে। সুপারকে তা দেখিয়েছি। মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিজেই স্বাস্থ্য পরিষেবায় সন্তুষ্ট নন। ওঁদের পদে থাকার নৈতিক অধিকার নেই।’’

জেলার তৃণমূল সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ঘটনাটি দু্র্ভাগ্যজনক। প্রশাসন, স্বাস্থ্য দফতর পাশে আছে। রাজনীতি করার জন্য কে, কী বলছেন জানি না।’’ এ দিন গ্রামে গিয়েছিলেন স্থানীয় বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী।

সিউড়ি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের আত্মীয়দের দাবি, বুধবার রাতে বিজেপির নেতা-কর্মী ও প্রশাসনের কর্তারা হাসপাতালে আসার পরে পরিষেবা ভাল হয়েছে। এ নিয়ে মন্তব্য এড়িয়েছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। তবে স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, ‘‘ঘটনাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। স্থিতিশীল ও তুলনায় খারাপ— এই দুই ভাগে ভাগ করে রোগীদের চিকিৎসা চলছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Suri Food Poisoning
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy