ডাকাতদের খোঁজে বাড়িতে ঢুকছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম
বৃহস্পতিবারের রাত ৯টা। রামপুরহাট থানার ভোল্লা ক্যানেল মোড় সংলগ্ন একটি বাড়ি ও সোনার দোকান ঘিরে রেখেছে পুলিশ ও জনতা। কারণ, বাড়ির ভিতরে রয়েছে বেশ কয়েক জন দুষ্কৃতী। মাইকে বার বার আত্মসমর্পণের অনুরোধ করা হচ্ছে। ড্রোনও উড়িয়ে নজরদারিও চলছে। টানটান উত্তেজনা। শেষ পর্যন্ত বাড়িতে প্রবেশ করল বাহিনী। তবে কোনও দুষ্কৃতীর খোঁজ মিলল না।এর পরে এলাকা জুড়ে শুরু হল চিরুনি তল্লাশি। শেষ পর্যন্ত ডাকাতির সঙ্গে জড়িত সন্দেহে চার জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ।
পুলিশ জানায়, ধৃতেরা হল রোহন শেখ, আঙুর শেখ, বাবাই শেখ এবং লালু শেখ। এদের মধ্যে রোহনের বাড়ি রামপুরহাট থানার কুসুম্বা গ্রাম পঞ্চায়েতের কাদাসিন গ্রামে। আঙুরের বাড়ি মাড়গ্রাম থানার শিবপুরে। বাবাইয়ের বাড়ি রামপুরহাট থানার বগটুই এবং লালুর বাড়ি রামপুরহাট থানার বড়পাখুড়িয়া গ্রামে। ধৃতদের কাছ থেকে একটি নাইন এমএম পিস্তল, পাঁচটি গুলি ভর্তি একটি ম্যাগাজ়িন, খোওয়া যাওয়া গয়না এবং ৯ হাজার টাকা উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় দু’টি মোটরবাইকও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটা স্থানীয় গয়না ব্যবসায়ী ইমাম মণ্ডলের দোতলা বাড়ির পিছনের পাঁচিল টপকে ভিতরে ঢোকে তিন জন। এক জন বাড়ির বাইরে অপেক্ষা করছিল। ইমামের স্ত্রী মমতাজ বেগমের গলায় ছুরি ঠেকিয়ে আলমারির চাবি ও কানের দুল ছিনিয়ে নেয় তারা। তার পরে ইমামের মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে বাড়ির নীচের তলায় সোনার দোকানে ঢুকে পড়ে দুষ্কৃতীরা। যখন তারা গয়না বের করছিল, তখন শাটার নামিয়ে দিয়ে বাইরে বেড়িয়ে আসেন ইমাম। মমতাজও বাড়ির পিছনের দরজা দিয়ে বেরিয়ে আসেন। বাইরে এসে স্বামী, স্ত্রী চিৎকার শুরু করলে স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে আসেন।
হট্টগোল শুনে চলে আসে জাতীয় সড়কে টহলরত একটি পুলিশের ভ্যান। খবর পেয়ে দ্রুত রামপুরহাট এবং মাড়গ্রাম থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে চলে আসে। পুলিশ জানায়, বাড়িটিকে ঘিরে ফেলা হয়। চলে আসেন রামপুরহাট মহকুমার পুলিশ আধিকারিক ধীমান মিত্র-সহ অন্য পুলিশ আধিকারিকেরা। প্রায় ঘণ্টা দুয়েক ধরে পুলিশ মাইকে দুষ্কৃতীদের আত্মসমর্পণ করতে বলে। ড্রোন উড়িয়ে বাড়ির ভিতরে নজরদারিও চালানো হয়। কোনও সাড়া না পেয়ে প্রস্তুত হয় পুলিশ।বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরে বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করে বাহিনী। কিন্তু বাড়ির ভিতরে কারও সন্ধান মেলেনি। এর পরেই এলাকা জুড়ে তল্লাশি শুরু হয়।
তল্লাশি চালাতে গিয়ে ভোল্লা ক্যানেল মোড় থেকে একডালা যাওয়ার রাস্তার উপরে বাঘমারায় একটি নম্বরবিহীন মোটরবাইক উদ্ধার হয়। খোঁজ করে কাদাসিন থেকে বাইকটির মালিক রোহনকে আটক করে পুলিশ। রোহনকে জিজ্ঞাসা করে পুলিশ বাকিদের সন্ধান পায়। পুলিশ বাবাইয়ের কাছ থেকেও একটি মোটরবাইক উদ্ধার করে।
পুলিশ জানায়, তিন জন বাড়ির ভিতরে ঢুকেছিল। লালু বাইরে ছিল। ২০ মিনিটের মধ্যে ডাকাতি করে পিছন দিক দিয়ে তারা চম্পট দেয়। ধীমান মিত্র বলেন, ‘‘ধৃতেরা তাদের অপরাধের কথা স্বীকার করেছে। ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কি না সে ব্যাপারে তদন্ত চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy