Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

কায়দা যতই থাকুক চুলে, হেলমেট কিন্তু ‘মাস্ট’

হেলমেট পরা নিয়ে প্রশ্নে তরুণ প্রজন্মের অনেকেই তা-ই বলছেন, ‘‘চুলের স্টাইল যদি হেলমেটে ঢাকতে হয় তা হলে এত টাকা খরচ করে লাভ কী?’

ফাইল চিত্র

ফাইল চিত্র

দয়াল সেনগুপ্ত
সিউড়ি শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:৩৫
Share: Save:

তরুণ প্রজন্মের কেউ কেউ বলছেন, ‘‘শহর জুড়ে সব পাড়ায় পুজো। মোটরবাইক থামাতে হবে সব জায়গায়। তা-ই বাড়ি থেকে মোটরবাইকে বেরোনোর সময় হেলমেট না নিলেও চলে।” আবার কারও যুক্তি, ‘‘এত টাকা খরচ করে পুজোয় স্পেশ্যাল চুলের ছাঁট। হেলমেট পরলে তো পুরোটাই মাটি!”

দুর্গাপুজোয় মোটরবাইক আরোহীদের এ সব যুক্তি মানতে কিন্তু নারাজ পুলিশ। বীরভূম পুলিশ স্পষ্ট জানিয়েছে, পুজোতেও পথচলার নিয়মে শিথিলতা নেই। পুলিশকর্তাদের একাংশের কথায়, ‘‘চুলে কায়দা থাক বা না থাক, মাথা খুব দামি। তাই পথচলার নিয়ম মানার কথা সকলে মানে রাখলেই ভাল।’’ জেলার পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ বলছেন, ‘‘মোটরবাইক আরোহীদের কাছে অনুরোধ, বছররে অন্য সময় তো বটেই, উৎসবের দিনগুলিতেও অবশ্যই হেলমেট পরবেন। আশা করি, সকলেই সেই নিয়ম মেনে চলবেন।’’

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পুজোর দিন দু’য়েক আগে জেলা পুলিশের পক্ষ প্রতিটি পুর-শহরের পুজো গাইড ম্যাপ প্রকাশিত হবে। সঙ্গে থাকবে পথ নিরাপত্তা বিষয়ক প্রচারও। সেই প্রচারে শহরের পুজো আয়োজকদেরও পাশে থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে। পুজোর কয়েক দিন নজরে বেপরোয়া মোটরবাইক, গাড়ি, হেলমেট না-পরা, বাইকে দু’য়ের বেশি আরোহীর উপরেও।

কিন্তু জেলাবাসীর একাংশের বক্তব্য, এত কিছুর পরেও আইন প্রয়োগে কতটা কড়া হওয়া যাবে, তা নিয়ে সংশয় থাকছেই।

সিউড়ি, দুবরাজপুর, রামপুরহাট, বোলপুর-সহ সব পুর-শহরের নামী সেলুন বা হেয়ার স্টাইলিস্ট এবং বিউটি পার্লারে ভিড় পুজোর আগে ক্রমেই বাড়ছে। তরুণ প্রজন্মের উপস্থিতিই সেখানে বেশি। সকলেই চান, পুজোয় নিজেদের চুলের স্টাইলে নজর কাড়তে। সে সবের দোকানিরা জানান,

পুজো আনকোরা হরেক ছাঁট রয়েছে। তবে এ বার ছেলেদের মধ্যে ওয়ান সাইড (এক দিকের চুল ছোট করে কেটে অন্য দিকে বড় চুল রাখা) ছাঁটের প্রবণতা বেশি। ফ্যাশন চলছে দাড়ি নিয়েও।

মেয়েদের ক্ষেত্রে লেয়ার, স্টেপ কাট, কার্ল বা স্ট্রেট করানোর চাহিদা বেশি। পুজোয় আরও একটা স্টাইল চাইছে অনেকেই, তা হল ‘হাইলাইট’। চুলের বিশেষ বিশেষ অংশে রং করলে ‘লুক’ একটু অন্য রকমই দেখায়।

হেলমেট পরা নিয়ে প্রশ্নে তরুণ প্রজন্মের অনেকেই তা-ই বলছেন, ‘‘চুলের স্টাইল যদি হেলমেটে ঢাকতে হয় তা হলে এত টাকা খরচ করে লাভ কী?’’ সিউড়ির দুই কলেজ ছাত্রের কথায়, ‘‘এ পাড়ায় ও পাড়ায় পুজো। আর পাঁচটা দিনের মতো বারবার হেলমেট খুলতে আর পড়তে হলে তো চুলের দফারফা। সঙ্গে আবার বান্ধবী থাকবে!’’ প্রায় একই সুর বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত সিউড়ির এক তরুণীর মন্তব্যেও, ‘‘হেলমেট পরে স্কুটি চালিয়ে অফিসে যাওয়া অবধি ঠিক আছে, তাই বলে পুজো মণ্ডপে! চুলে জট পাকিয়ে যাবে যে!’’ অনেকে আবার বলছেন, ‘‘পথের নিরাপত্তা নিয়ে সব নিয়ম মানা উচিত জানি। শহরের বাইরে গেলে অবশ্যই হেলমেট থাকবে। সেটাও নিশ্চিত। তবে শহরের মধ্যে পুজো মণ্ডপে ঘোরার সময় হেলমেট পরা কষ্টকর। চুলের অবস্থা অনেকটা পাগলা দাশুর মতো হবে।’’ তাঁদের আবদার, ‘‘কেউ বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালালে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক পুলিশ। তবে পুজোর চার দিন শুধু শহরের মধ্যে হেলমেটে ছাড় দিক পুলিশ।’’

এই আবদার কি মানা সম্ভব? জেলা পুলিশের কর্তারা হেসে বলছেন— ‘পুজোয় ট্রাফিক সচল রাখা, ভিড় নিয়ন্ত্রণ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি আমাদের নজর থাকবে নিয়ম ভাঙা মোটরবাইক আরোহীদের উপরেও!’’

অন্য বিষয়গুলি:

Siuri Birbhum Durga Puja Helmet
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy