প্রতীকী ছবি।
হাসপাতাল থেকে পালালেন রোগী। পরে, তাঁকে ধরে হাসপাতালে ফিরিয়ে আনার বদলে ‘ব্যারাম’ সারানোর জন্য এক কবিরাজের কাছে ঝাড়ুফুঁকের জন্য নিয়ে যাওয়া হয় বলে দাবি। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তা আটকায়। সোমবার বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের খড়িকাশুলি এলাকার ঘটনা।
পরিবার ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত রবিবার বিকেলে খিঁচুনির সমস্যা নিয়ে বিষ্ণুপুরের তুঁতবাড়ি এলাকার বাসিন্দা বছর চৌত্রিশের ওই ব্যক্তিকে বিষ্ণুপুর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। রোগীর স্ত্রী জানান, সোমবার সকাল ৮টা নাগাদ চা খেতে বেরনোর সময়ে আচমকা তাঁর স্বামী হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যান। তাঁর কথায়, “হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে রসিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড হয়ে পিচ রাস্তা বরাবর দৌড়াতে থাকেন উনি। আমিও পিছনে ছুটি। তবে ধরতে পারেনি। রাস্তার লোকজনের সাহায্য চেয়ে চিৎকার করতে থাকি। শেষমেষ মড়ার পঞ্চায়েতের সামনে কয়েক জন তাঁকে ধরে ফেলেন।”
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এর পরে ওই ব্যক্তিকে রীতিমতো দড়ি দিয়ে বেঁধে স্থানীয় এক কবিরাজের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ঝাড়ফুঁকের মাধ্যমে তাঁর ‘চিকিৎসা’র তোড়জোড় শুরু হয়। ইতিমধ্যে খবর পেয়ে বিষ্ণুপুর থানার পুলিশ সেখান পৌঁছে ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পৌঁছনোর ব্যবস্থা করেন। ওই কবিরাজের যদিও দাবি, “হাসপাতাল থেকে কেউ সাধারণত এখানে এর আগে আসেনি। ওঁকে মানসিক ডাক্তার দেখাতে বলেছি।” কাঁদো কাঁদো মুখে ব্যক্তির স্ত্রী বলেন, “স্বামীর অবস্থা দেখে বুঝতে পারছিলাম না, কী করব। যাঁরা স্বামীকে ধরেছিল, তাঁদের পরামর্শেই কবিরাজের কাছে চিকিৎসা করানোর সম্মতি দিয়েছিলাম।”
হাসপাতালের সুপার শুভঙ্কর কয়াল বলেন, “ভর্তি হওয়ার পরে থেকে তিন বার চিকিৎসক ওই ব্যক্তিকে দেখেছিলেন। খোঁজ নিয়ে জেনেছি, খিঁচুনি নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। হাসপাতাল থেকে চলে যাওয়ার পরেই বাড়ির লোকজনদের ফোনে তা জানানো হয়। তাঁরাই পুলিশে খবর দেন। পরে, সকাল সাড়ে ১১টার পরে ‘ডিসচার্জ’ নিয়ে রোগীকে বাড়ি নিয়ে চলে যান তাঁরা।”
পরিবার সূত্রে জানা যায়, আপাতত বাড়িতেই রয়েছেন ওই ব্যক্তি। আগামী চিকিৎসা কোথায়, কী ভাবে করাবেন তা নিয়ে কিছু জানাতে চাননি পরিজনেরা। এক পরিজন শুধু বলেন, “ওড়িশায় কাজ করত। লকডাউনে বাড়ি ফেরার পরে, আর কাজ পায়নি। তার পরে থেকেই চিন্তায় চিন্তায় এই অবস্থা। মাঝেমধ্যে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে যায়।” ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সৌম্য সেনগুপ্ত বলেন, “চিকিৎসাবিজ্ঞান অনেক দূর এগিয়েছে। তার পরেও এক শ্রেণির মানুষজন ঝাড়ফুঁকে বিশ্বাস করেন। আরও সচেতনতা বাড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে। প্রশাসনকে ধন্যবাদ, সময়ে পদক্ষেপের জন্য।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy